ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘হত্যার দরকার নেই’

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪

‘হত্যার দরকার নেই’

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া শনিবার নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরের জনসভায় বক্তৃতাকালে যা বলেছেন, তাতে অনেকেই হতবাক হয়ে গেছেন। তাঁর বক্তব্য টেলিভিশন ও অন্যান্য মিডিয়ায় দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। বেগম জিয়ার এই বক্তব্যে অনেকেই রীতিমতো অবাক হয়েছেন। বেগম জিয়া তাঁর ভাষণে বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে আমাদের মারার প্রয়োজন নেই। তবে তাঁর ওপর আল্লাহর গজব নেমে আসবে। আর আল্লাহর গজবেই তিনি নিঃশেষ হয়ে যাবেন। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এ ধরনের আক্রমণাত্মক ও আপত্তিকর বক্তব্য একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী কিভাবে রাখতে পারেন? বেগম খালেদা জিয়া ও তাঁর দল বিএনপি কখনই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিশ্বাসী নয়। ক্যান্টনমেন্টে জন্মগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল বিএনপি ষড়যন্ত্রের রাজনীতির মধ্য দিয়েই অগ্রসর হয়েছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে তারা সব সময়ই পাশ কাটিয়ে গেছে। বেগম জিয়া কাঁচপুরের জনসভায় যা বলেছেন, তা কোন রাজনৈতিক নেত্রীর বক্তব্য বলে মনে হয়নি। ‘শেখ হাসিনাকে মারার দরকার নেই’Ñ দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বেগম জিয়া আসলে কী বোঝাতে চেয়েছেন? তাহলে কি বুঝতে হবে, জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অতীতে পরিচালিত যাবতীয় হত্যা প্রচেষ্টার সঙ্গে বিএনপির মদদ ছিল কি? কোন রাজনৈতিক দলের নেত্রীস্থানীয় ব্যক্তির মুখে এধরনের বক্তব্য দেশর মানুষ আশা করে না। একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনাকে ঘাতকরা পৃথিবী থেকে চিরতরে সরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়া বঙ্গবন্ধুর খুনীদের সহযোগিতা করেছেন। তিনি খুনীদের বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। শুধু তাই নয়, বেগম জিয়ও একাত্তরের খুনী রাজাকার আলবদরদের তার মন্ত্রিসভায় স্থান দিয়েছেন। এখন দেশে একাত্তরে খুনীদের বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে চলেছে। ইতোমধ্যে খুনী কাদের মোল্লার বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে। এদিকে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াত জোট আন্দোলনের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া বানচালের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। শনিবার বিএনপি চেয়ারপার্সনের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে এটা সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, তিনি ও তাঁর দল দেশব্যাপী অরাজক অবস্থা সৃষ্টি করতে চায়। এছাড়া অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে তারা দেশব্যাপী ধ্বংসাত্মক তা-ব অব্যাহত রেখে। বর্তমান সরকার শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। যিনি প্রকাশ্য জনসভায় দেশের সরকারপ্রধানকে হুমকি দিচ্ছেন এবং তাঁর সর্বনাশের জন্য ‘আল্লাহর গজব’ কামনা করছেন। সেটা কতখানি ন্যায় এবং আইনসম্মত সে নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে।
×