ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সম্পাদক সমীপে

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৪

সম্পাদক সমীপে

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি আমাদের মর্মান্তিক অভিজ্ঞতাগুলোর একটি। বিশেষ করে দুর্ঘটনার শিকার যদি হন একজন জাতীয় ব্যক্তিত্ব, যাঁর কাছ থেকে সমাজ অনেক কিছু আশা করে। এই বিয়োগান্তক অভিজ্ঞতার ক্রমধারায় এনেছেন দেশের স্বনামধন্য প্রবীণ সাংবাদিক জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী। কিন্তু শুধু শোকপ্রকাশ করে যদি আমরা আমাদের দায়িত্ব শেষ করি তা ঠিক হবে না। এর থেকে আমরা যদি ভবিষ্যতে অনুরূপ ক্ষতি রোধ করতে পারি, তবেই হবে একটি সার্থক প্রচেষ্টা। আমাদের দেশে পরিবহন চালকদের দায়িত্বহীনতার নানা দিক নিয়ে আমরা কথা বলে থাকি। কিন্তু আমি একটি অনালোচিত দিকের উল্লেখ করতে চাই, যা আমার মতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সে হচ্ছে বাসে যাত্রীদের ওটা-নামার বিষয়। প্রায়ই দেখা যায়, স্টপেজে বাস ঠিক মতো থামে না। গতি কমিয়ে চলার ওপরই যাত্রীদের ওঠায়; আবার গতি কমিয়ে যাত্রীদের নামায়Ñ পুরোপুরি থামে না। আমাদের সাধারণ যাত্রীরা অর্থনৈতিক বিবেচনায় খানিকটা দৌড়ে, ছোটখাটো লাফ দিয়ে, হ্যান্ডেল ধরে বাসে উঠে পড়ে। কারণ বেবিট্যাক্সি বা ক্যাবের সামর্থ্য তাদের নেই। কিন্তু কেন থাকবে তাদের এই কসরতের প্রয়োজন? বাস এসে থামবে, যে কয়জনই হোক যাত্রীকে তুলে নেবে, তারপর যথাস্থানে থেমে যাত্রীকে নামিয়ে দেবে। এতে সমস্যা কী? আসলে সমস্যা কিছুই নেই- বাসচালকদের মতিগতি ছাড়া। তাদের একটি অভ্যাস- যেখান থেকে প্রথম বাস ছাড়ে, সেখানে তারা ১০-১৫ মিনিট সময়ক্ষেপণ করে করে আরও যাত্রী তুলে নেয়ার জন্য। তারপর পড়ি-কি-মরি করে বাস চালায় নির্ধারিত সময়ে মধ্যে যাত্রা শেষ করার জন্য। তাতে স্টপেজে থামা তাদের জন্য সম্ভব হয় না। দৌড়ের ওপর সব কিছু সারতে চায়। এ এক অদ্ভুত অপরিশিলিত মানসিকতার প্রকাশ। তারা বোঝে না, যেখানে থেকে যাত্রা শুরু করছে, সেখানে যদি তারা বিলম্ব করে পরের বাসের কিছু যাত্রীকে ধরে তবে তার আগের বাসওয়ালাও দেরি করে তার কিছু যাত্রী নিয়ে গেছে। সুতরাং সব মিলিয়ে লাভ কিছুই হচ্ছে নাÑ হচ্ছে কেবল যাত্রীদের দুর্ভোগ। কারণ, প্রাথমিক সময়ক্ষেপণের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তাড়াহুড়া করা ছাড়া তার আর কোন উপায় নেই। যদি আমাদের যানবাহন কর্তৃপক্ষ এই অভ্যাসটির পরিবর্তন করতে পারেন, তবে সমাজের সমধিক উপকার হবে। কারণ দুর্মূল্য বেবিট্যাক্সি, ক্যাবের খরচ বহনে অপরাগ বহু নারী, শিশু, বৃদ্ধ বাসভ্রমণে আসতে পারে। এবং জগ্লুল আহ্মদ চৌধূরীর মতো একজন বরেণ্য ব্যক্তি অহেতুক প্রাণ হারাবেন না। এমএ হক সেগুনবাগিচা, ঢাকা। মশা ও মাছির উৎপাত পুরনো ঢাকার সর্বত্র মশা ও মাছি আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এ ব্যাপারে নীরব ও নির্বিকার। বাজে সল্পতার কারণে এবং নগরীতে ওয়ার্ড কমিশনার বা তাদের অফিস না থাকার কারণে নিয়মিত মশা মাছি ওষুধ ছিটানো সম্ভব হচ্ছে না। নগরবাসী ট্যাক্স ঠিকই পরিশোধ করছে কিন্তু সেবা একেবারে উধাও। ইদানীং বুড়িগঙ্গার পানি ধীরে ধীরে নষ্ট এবং বিষাক্ত হতে শুরু“করেছে। এই এলাকা বা নদীর তীরে বসবাসকারীদের বিশেষ করে পোস্তগোলা ফরিদাবাদের আরসিমগেট, মিলব্যারাক, ফরাশগঞ্জ এলাকার মশা ও মাছির অত্যাচারে চরমভাবে অতিষ্ঠ। পুরনো ঢাকা শহর অন্যান্য শহর হতে অপরিষ্কার বেশি। এই এলাকার রাস্তা-ঘাটের ওপর নিত্যদিনের ময়লা-আবর্জনা পরে থাকতে দেখা যায়। ড্রেন-নর্দমা পরিষ্কার করা হয় না। পথে-ঘাটে, ব্লিচিং পাউডার দেয়ার রেওয়াজ উঠে গেছে। দুর্গন্ধে পথচারীরা পুরান ঢাকার রাস্তাঘাট ও অলিগলি দিয়ে চলাচল করতে পারে না। ময়লা আবর্জনা ও অপরিষ্কার ড্রেন ও নর্দমা হতে মশা-মাছির উৎপত্তি হচ্ছে। এমতাবস্থায় জরুরী ভিত্তিতে পুরান ঢাকায় নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন অভিযান চালানোর এবং নিয়মিত মশার ওষুধ ছিটানোর জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রতি অনুরোধ করছি। মাহবুবউদ্দিন চৌধুরী ফরিদাবাদ, ঢাকা। কবে হবে রেললাইন রেলপথের মাধ্যমে ঢাকার সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার যোগাযোগ ব্রিটিশ আমলের। কিন্তু দুঃখের বিষয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা বা রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে আসা ট্রেনটি কিছু দূরে এসে পুরোনো আমলের রেলপথের সিস্টেম থাকায় আমনুরা স্টেশনে ইঞ্জিন পাল্টাতে হয় এর ফলে ট্রেনের বিলম্ব হয় এক থেকে দেড় ঘন্টা। যার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রেলপথে রাজশাহীতে যাতায়াতের সময় লেগে যায় তিন ঘণ্টা। আমনুরা স্টেশনে বাইপাস রেলপথের মাধ্যমে সিকি মাইল রেলপথ লুপ লাইন করে দিলে আর ইঞ্জিন পাল্টানোর প্রয়োজন হবে না এবং সরাসরি ট্রেন চলাচল করতে পারবে। লুপ লাইন তৈরি হয়ে গেলে এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী রেলপথে যাতায়াত করা সম্ভব হবে আর ঢাকায় ট্রেনে যেতে সময় লাগবে মাত্র সাড়ে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা। এই অসুবিধার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বাংলাদেশের কোন স্থানে আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করছে না। চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষিনির্ভর অঞ্চল, আমসহ নানা প্রকার কৃষিপণ্য উৎপাদিত হয়ে থাকে এই এলাকায়। ট্রেন চলাচলের এই বিঘœতার কারণে কৃষির উৎপাদিত পণ্য সড়ক পথে রাজধানীসহ দেশের অন্য এলাকায় সরবরাহ করা হয়। সড়ক পথে পণ্য পরিবহন ব্যয় বহুল যা প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকের জন্য সম্ভব হয়ে উঠে না, ফলে এই অঞ্চলের প্রান্তিক কৃষকেরা উৎপাদিত পণ্য পাইকারের কাছে বিক্রি করে আর এভাবেই কৃষকের উৎপাদিত ফসলে মধ্যস্বত্বভোগীরা ভাগ বসায় এতে কৃষক তার পণ্যের নায্য দাম পায় না। ট্রেনে পণ্যসহ যাত্রী পরিবহন অনেক সুলভ এবং নিরাপদ। তাছাড়া সরাসরি ট্রেন চলাচল না থাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে শিল্প গড়ে উঠছে না। তাই রেল কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি আমনুরায় বাইপাস রেলপথ স্থাপন করে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করার। হাসান রাজশাহী। বৃদ্ধাশ্রম চাই সরকারী কর্মচারীদের (ঝবৎাধহঃ ড়ভ ঃযব ৎবঢ়ঁনষরপ) অবসর গ্রহণের পরে আনুতোষিক ও পেনশনের টাকায় যাতে সরকারি ব্যবস্থাপনায় (ছাত্রছাত্রীদের ন্যায় হল/হোস্টেলের মতো) হোস্টেল জীবনযাপন করতে পারেন সেরূপ (অবসরভোগী বৃদ্ধাশ্রম) করা দরকার বলে আমি মনে করি। বৃদ্ধ সরকারী কর্মচারীদের প্লট বা ফ্ল্যাট দিয়ে লাভ নেই। তাতে আর এক ধাপ দুর্নীতি বাড়বে। বৃদ্ধ বয়সে রান্না করা, কাপড় ধোয়া, ঘর মোছা, ঝাড় পোছ করা, প্রভৃতি গৃহস্থালি কাজ তাঁদের শক্তি ও সামর্থ্যরে বাইরে। কমন ডাইনিং,কমন ক্লিনিং সার্ভিস, এ্যাটাস্ট বাথ রুম, (দুই ধরনের রুম থাকবে) অন পেমেন্ট লন্ড্রি সার্ভিস, স্বামী-স্ত্রী যাতে একত্রে বসবাস করতে পারে তা ব্যবস্থা (থাকবে) করা আবশ্যক। বৃদ্ধ বয়সে ছেলেমেয়েরা যার যার মতো ঘর সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে (দেশে বা বিদেশে)। বৃদ্ধ বাবা-মা তখন এক ধরনের অসহায়ত্বে পড়েন। এক সচিবদের একটি বাড়িতে যে পরিমাণ জমি আছে তা যদি সেনাকুঞ্জের মতো বহুতল ফ্ল্যাট বাড়ি করে একাধিক বিচারপতিদের আবাসন গড়া হয়; বিচারপতিদের একটি বাড়িতে যে জমি আছে তা যদি সেনাকুঞ্জের মতো বহুতল ফ্ল্যাট বাড়ি করে একাধিক মন্ত্রীদের আবাসন গড়া হয়, তবে এসব স্থানে বহুতল অবসর প্রাপ্ত সরকারী কর্মচারীদের (Servent of the republic) অবসর গ্রহণের পরে আনুতোষিক ও পেনশনের টাকায় যাতে সরকারী ব্যবস্থাপনায় হোস্টেল জীবনযাপনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তাঁরা যাতে শেষ জীবনে একটু নিরাপদে স্বাচ্ছন্দ্য জীবনযাপন করতে পারেন সে দিকে সরকারকে সদয়দৃষ্টি দেয়ার আবেদন জানাচ্ছি। রুহুল আমিন চৌধুরী [email protected]
×