ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

উত্তরাঞ্চলে কমেনি কুয়াশা ও শীতের প্রকোপ

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৪

উত্তরাঞ্চলে কমেনি কুয়াশা ও শীতের  প্রকোপ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের উত্তরাঞ্চলে কুয়াশা ও শীতের প্রকোপ কমেনি। রবিবার তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেলেও দেশের অধিকাংশ স্থানে অনুভূত হয়েছে মাঝারি থেকে তীব্র শীত। শীতজনিত রোগে নতুন করে আক্রান্ত অনেক রোগী ভর্তি হয়েছে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে। রবিবারও কুয়াশার কারণে জল ও স্থলপথে যানবাহনের চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হয়। দিনের বেলায় কিছু সময়ের জন্য সূর্যের আলোর দেখা পেলেও অনুভূত হয় শীত। তবে আজ সোমবার দিন ও রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। চলতি মাসের শেষ দিকে বয়ে যাবে মৌসুমের প্রথম শৈত্যপ্রবাহ। জানুয়ারিতে বয়ে যাবে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। আবহাওয়াবিদরা জানান, তাপমাত্রা বাড়লেও কুয়াশা না কমলে শীত কমবে না। গত কয়েকদিন সারাদেশে তীব্র শীত অনুভূত হওয়ার পেছনে ভূমিকা রাখেনি তাপমাত্রা। এ বছর এখন পর্যন্ত শৈত্যপ্রবাহই শুরু হয়নি। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে শুরু হবে শৈত্যপ্রবাহ। কিন্তু গত কয়েকদিনের শীতের তীব্রতা অনেকটা শৈত্যপ্রবাহের অবস্থাকেও হার মানিয়েছে। তীব্র শীতের পেছনে ঘন কুয়াশা এবং ঠা-া বাতাসই বেশি ভূমিকা রেখেছে বলে জানান আবহাওয়াবিদরা। আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, চলতি মাসের শেষার্ধে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলে ১ থেকে ২টি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। দেশের নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি/ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা/ মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক থাকবে। চলতি মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত ঢাকা বিভাগে ১০ মিলিমিটার, চট্টগ্রামে ৯ মিমি, সিলেটে ১০ মিমি, রাজশাহীতে ১১ মিমি, রংপুরে ৮ মিমি, খুলনায় ১০ মিমি ও বরিশালে ৯ মিলিমিটার থাকতে পারে। স্টাফ রিপোর্টার কুড়িগ্রাম থেকে জানান, শীতের তীব্রতা আরও বেড়েছে। শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। ৬ ঘণ্টায় নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৯ শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আউটডোরে প্রতিদিন শীতজনিত রোগে ১শ’ থেকে ২শ’ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ নজরুল ইসলাম জানান, শীতের তীব্রতা বেড়ে গেলেও সদর হাসপাতালে এখনও শিশু ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা সহনশীল পর্যায়ে রয়েছে। রবিবারও সারাদিন কুয়াশা ও শীতের দাপট ছিল। কুয়াশার কারণে স্থানীয় মিল-চাতালগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। জেলা প্রশাসক এবিএম আজাদ জানান, এ পর্যন্ত শীতার্তদের জন্য ৮ হাজার ২শ’ ৪০টি কম্বল ৯টি উপজেলায় বিতরণ করা হয়েছে। আরও ১০ হাজার কম্বলের বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। নিজস্ব সংবাদদাতা গাইবান্ধা থেকে জানান, তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা অব্যাহত রয়েছে। সারাদিন সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ে কুয়াশা। শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। শীতবস্ত্রের দোকানগুলোতে বেড়েছে ক্রেতার ভিড়। ঘন কুয়াশায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনাসহ জেলার সকল নদ-নদীতে নৌ চলাচল বিঘিœত হচ্ছে। ঝরে পড়ছে সরিষা গাছের ফুল। হুমকির মুখে পড়ছে বোরো বীজতলা। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক মীর আব্দুর রাজ্জাক জানান, ঘন কুয়াশায় বোরো বীজতলায় বীজধানের চারাগুলো বিবর্ণ হয়ে পড়ছে। তবে অল্প দিনে কুয়াশা কেটে গেলে বীজতলার তেমন ক্ষতি হবে না। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ নাজমুল হুদা জানান, শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আরও ১০ হাজার পিস কম্বল এবং অন্যান্য শীতবস্ত্র চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। নিজস্ব সংবাদদাতা নওগাঁ থেকে জানান, রবিবারও পুরো অঞ্চলে সূর্যের দেখা মেলেনি। সকালে কয়েকদফা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ে। ক্ষেতের আলু গাছের পাতাগুলো কোঁকড়াতে শুরু করেছে। লোকজন আক্রান্ত হচ্ছে শীতজনিত রোগে। স্টাফ রিপোর্টার নীলফামারী থেকে জানান, আওয়ামী যুব লীগ সৈয়দপুর সাংগঠনিক জেলা ও পৌর শাখার উদ্যোগে অসহায় শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। রবিবার বিকেলে শহরের শহীদ তুলশীরাম সড়কের সংগঠনের নিজস্ব কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ৫ শতাধিক কম্বল বিতরণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুবলীগ সৈয়দপুর সাংগঠনিক জেলা শাখার সভাপতি মহসিনুল হক মহসিন, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাকুর রহমান বসুনিয়া এবং পৌর শাখার সভাপতি হযরত আলী ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মনোয়ার হোসেন হায়দারসহ স্থানীয় নেতাকর্মীবৃন্দ।
×