ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রাজিলে জৌলুস হারাচ্ছে ফুটবল

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৪

ব্রাজিলে জৌলুস হারাচ্ছে ফুটবল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ব্রাজিলিয়ান ফুটবল মানেই অন্যরকম এক উন্মাদনা। বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসকে সমৃদ্ধশালী করেছে ব্রাজিলের ফুটবল। তবে আগের সেই জৌলুসটা যেন ক্রমেই হারিয়ে ফেলছে দেশটির ফুটবল। বিশেষ করে এবার ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে সেমিফাইনালে নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে পরাজয় বরণ, স্টেডিয়ামে দর্শক উপস্থিতি কমে যাওয়া, ঋণের বোঝা বেড়ে যাওয়া এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে ক্রমেই যেন ব্রাজিলের ফুটবল প্রাণ হারাতে বসেছে। ব্রাজিল ফুটবলের জন্য আর বিশ্বব্যাপী আগের সেই উন্মাদনাও কমে গেছে। যে দেশের জাতীয় খেলা ফুটবল সেখানে ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলোও দর্শক টানতে পারছে না আগের মতো। এ বছর ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নে বিভোর ছিল ব্রাজিল। স্বাগতিক দেশ হিসেবে তাদের অন্যতম ফেবারিটও বিবেচনা করেছিল বিশ্বের ফুটবল বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সেমিতে ৭-১ গোলের লজ্জাজনক পরাজয় বরণের মাধ্যমে তা ধূলিসাৎ হয়ে যায়। বিশ্বকাপের সেই ধাক্কার রেশটা পড়েছে ঘরোয়া আসরেও। কিছুদিন আগে কুরিটিবার দল এ্যাটলেটিকো প্যারানায়েন্স এবং চ্যাপেকোয়েন্সের মধ্যে ম্যাচটায় মাত্র ৭৬৬ দর্শক উপস্থিত ছিলেন। এটা ছিল প্রথম বিভাগ লীগের কোন ম্যাচে ইতিহাসে সবচেয়ে কম দর্শক উপস্থিতি। সার্বিকভাবে এ বছর গড় দর্শক উপস্থিতি ছিল ১৬ হাজার ৫৫৭ জন। এটি এ বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জাপানের দর্শক উপস্থিতির চেয়েও কম। অথচ বিশ্ব ফুটবলে অনেক পরে নিজেদের নামটাকে তুলে ধরেছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জাপান। যুগ যুগ ধরেই ব্রাজিল ফুটবল বিশ্বকে উপহার দিয়েছে সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের। সে মিছিলে আছেন পেলে থেকে শুরু করে রোনাল্ডো ও বর্তমানে নেইমারের মতো তারকারা। কিন্তু সম্প্রতি ২০২ মিলিয়ন মানুষের ফুটবলপ্রাণ দেশটিতে হঠাৎ করেই ফুটবলের প্রতি আগ্রহের কমতি শুরু হয়েছে। স্টেডিয়ামগুলোয় গত কয়েক বছরের দর্শক উপস্থিতি ছিল জার্মানির তিন ভাগের এক ভাগ। দর্শক উপস্থিতির দিক থেকে ১৫তম স্থানে আছে বর্তমানে ব্রাজিল। অথচ ব্রাজিলের চিরশত্রু ফুটবল দল আর্জেন্টিনায় ঘরোয়া ফুটবলে যে দর্শক উপস্থিতি তাদের অবস্থান সপ্তমে। ব্রাজিলের বিদায়ী ক্রীড়ামন্ত্রী আলডো রেবেলো মনে করছেন বর্তমানে ফুটবল ভক্তরা যতটা প্রত্যাশা করেন তেমন কোন প্রদর্শনী ফুটবল মাঠে দেখতে পাচ্ছেন না। আর সে কারণেই দর্শক উপস্থিতিতে ভাটা পড়েছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ফুটবল একটি দলীয় খেলা। কিন্তু দর্শক-ভক্তরা সবসময়ই তারকাদের দেখতে চায়, দেখতে চায় শৈল্পিক নৈপুণ্য। কিন্তু এ দুটিই যেন সম্প্রতি আমাদের স্টেডিয়ামগুলোয় দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না।’ তিনি স্বীকার করেছেন যদিও ব্রাজিল গত দুই বছরে আরও ১৪ স্টেডিয়াম নতুন করে স্থাপন করেছে কিন্তু তারপরও বিশ্বের সেরা দলগুলোর চেয়ে অনেক পিছিয়ে। ক্রীড়া খাতে মাত্র ২ শতাংশ ব্যয় করে ব্রাজিল। যেখানে ইংল্যান্ড ২০ ও জার্মানি ৩০ শতাংশ অর্থ ব্যয় করে থাকে। ক্রীড়া বিপণন অধ্যাপক এ্যারি রোক্কো এ বিষয়ে বলেন, ‘১৯৫০ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত বড় ক্লাবগুলোর খেলা হলে স্টেডিয়াম কানায়-কানায় পূর্ণ হয়ে যেত।
×