ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জাতীয় স্কুল হকির উদ্বোধন করবেন নেগ্রে

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪

জাতীয় স্কুল হকির উদ্বোধন করবেন নেগ্রে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আগামী ১৫ ডিসেম্বর ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক জাতীয় স্কুল হকি প্রতিযোগিতা ২০১৫-এর উদ্বোধন করতে বাংলাদেশে আসছেন এফআইএইচ প্রেসিডেন্ট লিয়েন্দ্রো নেগ্রে। এ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন আগামী রবিবার বিকেল ৩টায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম এবং এ বছর ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয়বার ঢাকা সফর করেন এ স্প্যানিশ ভদ্রলোক। এবারের সফরে ঢাকা আসার পর ফিরে যাবেন ১৮ ডিসেম্বর। বিশ্ব হকির সভাপতি সফরকালে মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামের নীল টার্ফ ও বিএএফ শাহীন স্কুল মাঠে স্যান্ড টার্ফের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করবেন এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। এছাড়া ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক জাতীয় স্কুল ফুটবলের পর্দা উঠবে তার হাত ধরেই। গত বছর এফআইএইচ সভাপতি নেগ্রে তিনদিনের ঢাকা সফরে ন্যূনতম মূল্যে টার্ফ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু আর্থিক সমস্যায় এটি অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। তবে বিলম্বে হলেও নতুন টার্ফ বুঝে পেয়েছে হকি ফেডারেশন, যদিও এখনও বসানোর কাজ শুরু করতে পারেনি। এ টার্ফ আনতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সবুজ সঙ্কেত পেলেও হকি ফেডারেশন পোহাতে যথেষ্ট নানাবিধ আমলাতান্ত্রিক ঝামেলা। অচিরেই এবার নীল টার্ফে খেলতে দেখা যাবে হকি তারকা চয়ন, মিমো, নান্নুদের। মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে বসতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের এ টার্ফ। তিন লাখ ডলার মূল্যের আধুনিক টার্ফটির জন্য দেড় লাখ ডলার আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি ও ৭৫ হাজার ডলার এফআইএইচ দিচ্ছে। বাকি ব্যয় বহন করতে হবে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনকে। ৩০ জুনের মধ্যে টার্ফ বসানোর কাজ শুরু না হলে পুরো টাকাই ফেরত যাবে। নীল টার্ফের সুবিধা হচ্ছে- এ টার্ফে বল ভালভাবে দেখা যাবে। দর্শকদেরও দেখতে কোন সমস্যা হবে না। বিশ্বে এখন নীল টার্ফে ও হলুদ বলেই খেলা হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এবার তৃতীয়বার বাংলাদেশে সফরে এসে বাংলাদেশের হকি উন্নয়নে কি ঘোষণা দেবেন নেগ্রে? একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, হকি ফেডারেশনকে তাদের চাহিদা মোতাবেক একজন বিদেশী কোচ ঠিক করে দেয়ার বিষয়ে কথা বলবেন তিনি। যদিও তিনি জানিয়ে দিয়েছেন এর জন্য একটু বেশি অর্থই খরচ করতে হবে ফেডারেশনকে। এখন তারা উচ্চমূল্যে এই কোচকে রাখতে পারবে কি না, নেগ্রের সঙ্গে আলাপ হবে এ বিষয় নিয়েই। একটি খেলায় উন্নতি করতে হলে শুধু ভাল খেলোয়াড় থাকলেই হবে না, দরকার প্রয়োজনীয় অর্থ, সাংগঠনিক দক্ষতা এবং পর্যাপ্ত কারিগরি অবকাঠামো। বাংলাদেশের হকির হয়েছে এখন সেই অবস্থা। সম্ভাবনাময় এ খেলাটি ঠিকমতো মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না কারিগরি প্রযুক্তির অভাবে। দেশের হকিকে সামনে এগিয়ে নিতে দরকার প্রচুর আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করা। কিন্তু ফ্লাডলাইট ও টার্ফসহ বেশকিছু সুযোগ-সুবিধার অভাবে হকি ফেডারেশন আন্তর্জাতিক হকি টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পারছে না। এ প্রসঙ্গে হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক খাজা রহমতউল্লাহ্ বলেন, ‘ফ্লাডলাইট বিষয়ে একটি প্রস্তাব দিয়েছি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে। ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন ফ্লাডলাইটের ব্যবস্থা করে দেবেন। আমি তাকে বলেছি হকি স্টেডিয়ামের মাঠটাও আধুনিকায়ন করে দিতে। আমরা এ মাঠটাতে আরও টপ লেভেলের টুর্নামেন্ট করতে চাই।’ যদি হকি স্টেডিয়ামের আধুনিকায়ন হয় ও ফ্লাডলাইট স্থাপতি হয় তাহলে আগামী বছর ভারত-পাকিস্তানকে নিয়ে একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করার স্বপ্ন দেখছেন খাজা। তিনি আরও জানান, আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে গেলে দুটি টার্ফ থাকতে হবে পাশাপাশি। ফ্লাডলাইট থাকতে হবে। একটা টার্ফে খেলা, আরেকটায় প্র্যাকটিস করা হয়। ভালমানের টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে হলে ফ্লাডলাইট স্থাপনের কোন বিকল্প নেই। সেক্ষেত্রে রাতের বেলা খেলা চলবে। আর দিনের বেলা টিমগুলোকে প্র্যাকটিসের জন্য মাঠ দেয়া হবে। এ বিষয়ে সচিব মহোদয়ের সঙ্গেও দেখা করেছেন খাজা। তাঁকে বুঝিয়েছেন জিনিসটা কেন প্রয়োজন। বিশ্বের সব জায়গায় এখন খেলা হচ্ছে ফ্লাডলাইটে। দিনের বেলা সবাই কিন্তু যার যার কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। অফিস ফাঁকি দিয়ে কিছু লোক আসতে পারে। সবাই তো আর আসবে না খেলা দেখতে। অফিস ছুটির পর যদি খেলাটা হয় যারা খেলা দেখার জন্য আগ্রহী তারা সবাই সুযোগটা পাবে। সচিব মহোদয়ও বুঝতে পেরেছেন যে ফ্লাডলাইটটা কত প্রয়োজন। কিন্তু তাদের থেকে যে ধরনের সাড়া পাওয়া উচিত তা খাজা এখনও পাননি বলে হতাশ। ‘আমি এটার পাশাপাশি আরও কিছু প্রস্তাব দিয়েছি। যেমন আমার প্রেসবক্সটা বড় করতে হবে। যদি এখানে ভারত-পাকিস্তান খেলতে আসে স্বভাবতই এখানে বিদেশী টিভি চ্যানেলগুলো চলে আসবে। তাদের জন্য বড় না পারি অন্তত ছোট একটা রুমের ব্যবস্থা করতে পারব, যেখানে বসে তারা কাজ করতে পারবেন। যেখানে আমি নিজের দেশের সাংবাদিকদেরই জায়গা দিতে পারছি না, সেখানে তাদের কোত্থেকে দেব। খাজা প্রস্তাব দিয়েছেন ভিআইপি গ্যালারি বড় করা ও ভিভিআইপিতে লিফটের ব্যবস্থা করতে। এখন দেখার বিষয়, খাজার এই স্বপ্ন কবে পূরণ করার খায়েশ হয় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং সচিবালয়ের।
×