ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকার নতুন দুই প্রশাসক ॥ উত্তরে রাখাল দক্ষিণে শওকত

প্রকাশিত: ০৭:০৭, ১২ ডিসেম্বর ২০১৪

ঢাকার নতুন দুই প্রশাসক ॥ উত্তরে রাখাল দক্ষিণে শওকত

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে নতুন প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী আগামী বছরের প্রথমার্ধে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হলে এই দুই প্রশাসকই হবেন আপাতত ঢাকা সিটির শেষ প্রশাসক। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব পেয়েছেন পাট অধিদফতরের মহাপরিচালক রাখাল চন্দ্র বর্মন। আর দক্ষিণের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংযুক্ত বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শওকত মোস্তফা। আইন অনুযায়ী ছয় মাস তাঁরা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন। তবে এ দুই কর্মকর্তার নিয়োগের আদেশে মেয়াদের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি অনুবিভাগের কর্মরত এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা নিয়োগ দিয়েছি। মেয়াদ নির্ধারণ করবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব চালিয়ে আসা মোঃ ফারুক জলিলকে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক পদে থাকা মোঃ ইব্রাহিম হোসেন খানকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়েছে। গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন দেয়ার নির্দেশ দেন। আগামী ২০১৫ সালের প্রথমার্ধেই এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেন তিনি। সে হিসাবে আগামী জুনের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন হওয়ার কথা। সে হিসাবে এই দুই প্রশাসকই হবেন আপাতত শেষ প্রশাসক। এরপর নির্বাচিত মেয়র দায়িত্ব নেয়ার কথা। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০২ সালের এপ্রিলে। এরপর টানা প্রায় ১০ বছর মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা। ২০১১ সালের ২৯ নবেম্বর ডিসিসি দুই ভাগে বিভক্ত করার আইন জাতীয় সংসদে পাস হয়। এ আইন পাসের আগ পর্যন্ত সাদেক হোসেন খোকা অবিভক্ত ডিসিসির মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তী সময়ে ২০১২ সালের ২৯ এপ্রিল বিভক্ত ডিসিসি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের দিন ধার্য করা হয় ২৪ মে। কিন্তু ভোটার তালিকা আর সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত আইনী জটিলতায় আটকে যায় নির্বাচন। এরপর ২০১৩ সালের ১৩ মে উচ্চ আদালত ডিসিসি নির্বাচনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। উচ্চ আদালত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে সরকার আবারও নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু করে। নির্বাচন কমিশনও ডিসিসি নির্বাচনের জন্য উদ্যোগ নেয়। তারা (ইসি) নীতিগত সিদ্ধান্তে উপনীত হয় ১৩ সালের অক্টোবর-নবেম্বর নাগাদ ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের দুই অংশের নির্বাচন সম্পন্ন করার। কিন্তু ঢাকার সুলতানগঞ্জ ইউনিয়ন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় ডিসিসি উত্তর ও দক্ষিণের নির্বাচন অনুষ্ঠানে আবারও হোঁচট খায় নির্বাচন কমিশন। তবে পরবর্তী সময়ে সুলতানগঞ্জকে সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভুক্তির কাজটি সম্পন্ন করা হয়। এর মধ্যে শুরু হয়েছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ডামাডোল। সংসদ নির্বাচনের ডামাডোলের কারণে সব ধরনের প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও থমকে যায় ডিসিসি নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যক্রম। আওয়ামী লীগ সরকার টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এলে নতুন করে আলোচনায় আসে ডিসিসি। তবে শুরুতে নির্বাচন না দিয়ে প্রশাসক পদে নিয়োগের মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম চালানো হয়। এখন সরকার আবার ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের উদ্যোগ নিচ্ছে।
×