ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পুঁজিবাজারে ১৪ মাসের সর্বনিম্ন লেনদেন

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১২ ডিসেম্বর ২০১৪

পুঁজিবাজারে ১৪ মাসের সর্বনিম্ন লেনদেন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ টানা দুই কার্যদিবসে সূচকের ইতিবাচক প্রবণতার পর বৃহস্পতিবার সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। প্রধান বাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জে নতুন স্বয়ংক্রিয় লেনদেন ব্যবস্থা চালুর দিনে কিছুটা মানিয়ে নিতে সমস্যা হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমেছে। বিশেষ করে নেটিং বা শেয়ার বিক্রি করে নতুন করে সেই টাকায় শেয়ার কিনতে না পারার কারণেই লেনদেনে এই মন্দাবস্থা। দিনটিতে ডিএসইতে ১৩৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা গত ১৪ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন পুঁজিবাজারে। এর আগে ২০১৩ সালের ২০ অক্টোবর ডিএসইতে ১১০ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। তবে অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক একচেঞ্জের আগেই সফটওয়ারেই লেনদেন হয়েছে। নতুন সফটওয়ার চালুর দিনে বিনিয়োগকারীদের লেনদেন প্রক্রিয়ার পরিচিত না হওয়া সত্ত্বেও কিছুটা ইতিবাচক প্রবণতা ছিল। কিন্তু শেয়ার বিক্রির টাকায় নতুন করে শেয়ার কিনতে না পারায় লেনদেন কমতে থাকে। প্রায় সব ব্রোকার হাউসেই এই সমস্যা দেখা দেয়। তবে লট না থাকায় অনেকেই খুচরা শেয়ার বিক্রি করেছেন। ১ বা ২টি করেও শেয়ার বিক্রির বা ক্রয়ের আদেশ দিয়েছেন। তবে দিনশেষে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ার কারণে সূচকের বড় ধরনের পতন ঘটেনি। দিনশেষে ডিএসইর সার্বিক সূচকটি আগের দিনের চেয়ে ১০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৪৯৩৩ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩০৬টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১১৭টির, কমেছে ১৪৮টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ৪১টি কোম্পানির শেয়ার দর। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৩৬ কোটি ৮৯ লাখ ২৭ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। বুধবারে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৪২১ কোটি ৫৯ লাখ ৮২ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। সেই হিসাবে বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ২৮৪ কোটি ৭০ লাখ ৫৫ হাজার টাকা বা ৬৭.৫৩ শতাংশ। বৃহস্পতিবার ডিএসইর টপ-২০ তালিকায় থাকা কোম্পানিগুলোর মোট ৬৯ কোটি ৩৬ লাখ ৫৯ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ৬৭.৫৩ শতাংশ। ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে সামিট এলায়েন্স পোর্টের। দিনভর এ কোম্পানির ৯ লাখ ৫ হাজার ৩২০টি শেয়ার ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৬৬ হাজার টাকায় লেনদেন হয়েছে, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ৫.৭৩ শতাংশ। এ ছাড়া কাসেম ড্রাইসেলসের ৭ কোটি ২২ লাখ, গ্রামীণফোনের ৫ কোটি, বিডি থাইয়ের ৪ কোটি ৯০ লাখ, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের ৪ কোটি ৩৭ লাখ, স্কয়ার ফার্মার ৪ কোটি ৩২ লাখ, অগ্নি সিস্টেমসের ৪ কোটি ৬ লাখ, বেক্সিমকো লিমিটেডের ৪ কোটি ৬ লাখ, তুং হাই নিটিংয়ের ৩ কোটি ৮২ লাখ এবং হামিদ ফেব্রিকসের ৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ডিএসইতে দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো : আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, রহিম টেক্সটাইল, তুং হাই নিটিং, কাসেম ড্রাইসেল, প্রাইম লাইফ, অগ্নি সিস্টেম, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, বিডি থাই, নদার্ন ইন্স্যুরেন্স ও মিথুন নিটিং। দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো : মডার্ন ডাইং, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, হামিদ ফেব্রিক্স, দুলা মিয়া কটন, সোনালি আঁশ, মেঘনা কনডেন্স মিল্ক, সাফকো স্পিনিং ও মাইডাস ফাইনান্স। দিনশেষে অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সাধারণ মূল্য সূচক ৩৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৯২৫৬ পয়েন্টে। সেখানে দিনভর লেনদেন হওয়া ২১৮টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৫৩টির, কমেছে ১৩৩টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩২টি কোম্পানির। লেনদেন হয়েছে ২৫ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের দিন এ সময়ে লেনদেন হয়েছিল ৪৫ কোটি ১৭ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। সে হিসাবে বৃহস্পতিবার সিএসইতে লেনদেন কমেছে ২০ কোটি ১৩ লাখ টাকা। সিএসইতে লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : সামিট এলায়েন্স পোর্ট লিমিটেড, হামিদ ফেব্রিক্স, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, তুং হাই নিটিং, বেক্সিমকো, বিডি থাই, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন, গ্রামীণফোন, কাসেম ড্রাইসেল ও মবিল যমুনা বিডি।
×