ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ইতিহাস গড়ে গ্রুপ পর্ব শেষ রিয়াল মাদ্রিদের

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১১ ডিসেম্বর ২০১৪

ইতিহাস গড়ে গ্রুপ পর্ব শেষ রিয়াল মাদ্রিদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গৌরবময় রেকর্ড গড়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের গ্রুপ পর্বের খেলা শেষ করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। মঙ্গলবার ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা ৪-০ গোলে পরাজিত করে অতিথি বুলগেরিয়ার ক্লাব লুডোগোরেটস রাজগার্ডকে। সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে গ্যালাক্টিকোদের হয়ে গোলগুলো করেন বর্তমান ফিফা সেরা ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, বিশ্বের সবচেয়ে দামী ফুটবলার গ্যারেথ বেল, আলভারো আরবেলোয়া ও আলভারো মেডরান। এর আগে প্রথম লেগের ম্যাচে লুডোগোরেটসকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল রিয়াল। এদিকে ‘সি’ গ্রুপ থেকে শেষ ষোলোর ছাড়পত্র পেয়েছে ফ্রান্সের মোনাকো ও জার্মানির বেয়ার লেভারকুসেন। পরশু মোনাকো ২-০ গোলে রাশিয়ান ক্লাব জেনিট সেইন্ট পিটার্সবার্গকে হারিয়ে গ্রুপ সেরা হয়ে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করে। আর এ্যাওয়ে মাচে লেভারকুসেন পর্তুগালের ক্লাব বেনফিকার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে নকআউট পর্বে নোঙর ফেলেছে। আর সেরা ষোলোর আগেই বিদায় নেয়া জেনিট গ্রুপের তৃতীয় হয়ে নিশ্চিত করেছে ইউরোপা লীগে খেলা। ম্যাচটির আগে রিয়াল ও রোনাল্ডো দু’জনেরই সামনে হাতছানি দিচ্ছিল অনন্য রেকর্ড। নিরাশ হতে হয়নি কাউকেই। বুলগেরিয়ান ক্লাবকে হারিয়ে টানা জয়ের নতুন রেকর্ড গড়েছে কার্লো আনচেলোত্তির দল। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এখন রিয়ালের টানা জয় ১৯টি। এক্ষেত্রে তারা ছাড়িয়ে গেছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সিলোনার টানা ১৮ জয়ের রেকর্ড। ২০০৫-০৬ মৌসুমে কিংবদন্তি ফ্রাঙ্ক রাইকার্ডের হাত ধরে রেকর্ডটি গড়েছিল ক্যাটালানরা। অপ্রতিরোধ্য ছন্দে থাকা রিয়াল দারুণ এই রেকর্ড নিজের করে নিয়ে আরও অনন্য রেকর্ডের পথে পা ফেলেছে। আগেই সেরা ষোলো খেলা নিশ্চিত করেছিল রিয়াল। পরশুর ম্যাচটি তাই আক্ষরিক অর্থেই ছিল রেকর্ডের পথে হাঁটা ও নকআউট পর্বের আগে নিজেদের ঝালিয়ে নেয়া। টানা জয়ের রেকর্ড গড়ার পাশাপাশি আরও একটি গৌরবময় রেকর্ড গড়েছে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে প্রথম ক্লাব হিসেবে দু’বার গ্রুপ পর্বের ছয়টি ম্যাচেই জয় পেয়েছে রিয়াল। অর্থাৎ শতভাগ সাফল্য সঙ্গী করে পরের পর্বে উঠেছে স্প্যানিশ পরাশক্তিরা। এবারের আগে ২০১১-১২ মৌসুমেও গ্রুপ পর্বে সব ম্যাচ জিতেছিল গ্যালাক্টিকোরা। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে মাত্র পাঁচটি ক্লাবের আছে গ্রুপ পর্বে শতভাগ জয়ের রেকর্ড। আরও একটি দারুণ রেকর্ডের কাছাকাছি রিয়াল। সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে আর মাত্র এক জয় পেলেই নিজেদের মাঠে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে সর্বাধিক জয়ের রেকর্ড গড়বে দলটি। এক্ষেত্রে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের টানা ১২ জয়ে ভাগ বসাবে স্প্যানিশ পরাশক্তিরা। শেষ ষোলোর লড়াইয়েই এই সুযোগ পাচ্ছে আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ম্যানইউ ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ওল্ডট্রাফোর্ডে টানা ১২ ম্যাচ জিতে রেকর্ডটি নিজেদের করে রেখেছে। রেকর্ড ভাঙ্গাগড়া নিয়ে মত্ত থাকা রোনাল্ডো আরও একটি মাইলফলক পেরিয়েছেন। পেনাল্টি থেকে এক গোল করে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন তিনি। বর্তমানে রোনাল্ডোর গোলসংখ্যা ৭২টি। এক্ষেত্রে তিনি পেছনে ফেলেছেন ৭১ গোল করা রাউল গঞ্জালেসকে। ৭৪ গোল করে লীগের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা বার্সিলোনা জাদুকর লিওনেল মেসি। মৌসুমের শুরুতে কিন্তু সর্বোচ্চ গোলের দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন সি আর সেভেনই। কিন্তু বার্সা ডায়মন্ড হ্যাটট্রিক করে অনেকটা আকস্মিকভাবেই সবার ওপরে চলে যান। তবে রাউলকে ছাড়িয়ে যাওয়ায় এখন শীর্ষ গোলদাতার লড়াইটি দারুণভাবে জমে উঠল মেসি ও রোনাল্ডোর মধ্যে। সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে ম্যাচের শুরু থেকেই সফরকারী লুডোগোরেটসের ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে স্বাগতিক রিয়াল। ম্যাচের ১৯ মিনিটে রিয়ালের ফরাসী ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারানের হেড সরাসরি হাত দিয়ে প্রতিহত করে লালকার্ড দেখেন বুলগেরিয়ান ক্লাবের ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার মার্সেলিনহো। পেনাল্টি পায় রিয়াল। স্পট কিক থেকে দলের হয়ে প্রথম গোল করেন সুপারস্টার রোনাল্ডো। এই গোলেই রাউলকে তৃতীয় স্থানে নামিয়ে লীগের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হন পর্তুগীজ সুপারস্টার। এরপর রিয়ালের হয়ে বাকি গোলগুলো করেন বেল (৩৮), আরবেলোয়া (৮০) ও মেডরান (৮৮)।
×