ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উদ্ভূত নিরাপত্তা ঝুঁকিতে বিশ্বব্যাপী মার্কিন স্থাপনায় সতর্কতা

সিআইএর নির্যাতনের তথ্য

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ১০ ডিসেম্বর ২০১৪

সিআইএর নির্যাতনের তথ্য

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর জঙ্গী সন্দেহে আটক ব্যক্তিদের উপর চালানো যৌন নির্যাতন ও অন্যান্য কঠোর জিজ্ঞাসাবাদের কৌশল গ্রাফিক্সসহ বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করতে যাচ্ছে দেশটির সিনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটি। বন্দীদের না ঘুমাতে দিয়ে দিনের পর দিন জিজ্ঞাসাবাদ চলেছে। কোন তথ্য না পেয়েও বন্ধ হয়নি নির্যাতন। এই প্রতিবেদনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সূত্র এ খবর জানিয়েছে। হোয়াইট হাউসের এক মুখপাত্র সোমবার জানিয়েছেন, এই প্রতিবেদন প্রকাশের আগে নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত মার্কিন স্থাপনাগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। খবর রয়টার্স ও নিউইয়র্ক টাইমসের। তবে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই প্রতিবেদন প্রকাশের আগে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসন ও তাদের রিপাবলিকান সমালোচকরা বিতর্কে জড়িয়েছেন। রিপাবলিকানরা এই প্রতিবেদন প্রকাশের বিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং বিদেশে এর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি রয়েছে। সিআইএর বিতর্কিত জিজ্ঞাসাবাদ পদ্ধতি নিয়ে এই প্রথম একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। নিরাপত্তার বিবেচনায় সিআইএর কর্মকা- বিষয়ে সব সময়ই চূড়ান্ত গোপনীয়তা অবলম্বন করা হয়। প্রতিবেদনটি মঙ্গলবার প্রকাশের কথা রয়েছে। এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, আল-কায়েদা শীর্ষনেতা আব্দেল রহমান আল নাসিরিকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কিভাবে চলন্ত ড্রিল মেশিন দিয়ে হুমকি দেয়া হয়েছে। তবে এই ড্রিল মেশিন কখনও তার ওপর প্রয়োগ করা হয়নি। কোন বিরতি না দিয়ে তাকে পাঁচ দিন ধরে জাগিয়ে রাখা হয়। একটুও ঘুমাতে না দিয়ে চলতে থাকে জিজ্ঞাসাবাদ। এ সময় নানা অত্যাচার চলে তার ওপর। অন্যদিকে অন্তত এক বন্দী ঝাঁড়ুর হাতল দিয়ে যৌন হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। প্রতিবেদনটি ছয় হাজার পৃষ্ঠার। এর মধ্যে ৪৮০ পৃষ্ঠা প্রকাশ করা হচ্ছে। ওই প্রতিবেদনে ২০ জন বন্দীর ওপর চালানো সিআইএর নির্যাতনের কথা জানানো হয়। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জোশ আর্নেস্ট বলেন, এ ধরনের আচরণ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য মর্যাদাহানিকর। ৯/১১-এর হামলার পর সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ আটক জঙ্গীদের জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় এমন জিজ্ঞাসাবাদ কৌশলের অনুমতি দেন। বুশের অনুমোদনেই হোয়াইট হাউস ও সিআইএ ও বিচার মন্ত্রণালয় বন্দীদের ওপর এসব অত্যাচার চালাত বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা আটক ব্যক্তিদের নিরাপত্তা আরও জোরদার করার পক্ষে মত দেন। সিআইএর নিপীড়নের এ খবর প্রকাশের বিরুদ্ধে ছিলেন রিপাবলিকানরা। এ ব্যাপারে রিপাবলিকান ও সিআইএ প্রবল আপত্তি জানিয়েছে। তবে ইনটেলিজেন্স কমিটির বেশির ভাগ সদস্য ডেমোক্র্যাট। তারা এই প্রতিবেদন প্রকাশ করার পক্ষে মত দেন। কিছু রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা সতর্ক করে বলেছেন, তাদের কাছে অভ্যন্তরীণ ও বিদেশী গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে, যাতে বলা হয়েছে, এই প্রতিবেদন প্রকাশের ফলে উত্তেজনা ও সহিংসতা হতে পারে এবং আমেরিকানদের মৃত্যুও হতে পারে। সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি সোমবার দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, এক দশক আগে সিআইএর কঠোর জিজ্ঞাসাবাদ ছিল সম্পূর্ণ ন্যায়সঙ্গত।
×