ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যুবকের গ্রাহকরা টাকা ফেরত পাচ্ছেন না

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ৮ ডিসেম্বর ২০১৪

যুবকের গ্রাহকরা টাকা ফেরত পাচ্ছেন না

এম শাহজাহান ॥ যুবকের স্থাবর ও অস্থাবর সব সম্পত্তি বিক্রি করেও গ্রাহকের পাওনা ২ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা পরিশোধ করা সম্ভব নয়। এছাড়া সঙ্কট সমাধানে গঠিত সরকারী কমিটি তাদের রিপোর্ট চূড়ান্ত করলেও যুবকের গ্রাহকরা এখনই টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। এ কারণে সংস্থাটির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার সুপারিশ করেছে সরকারী কমিটি। একই সঙ্গে স্থায়ী একটি কমিশন গঠনের পরামর্শ দিয়ে ২৬ দফা সুপারিশে যুবক ও তার অন্যসব সংস্থার লাইসেন্স বাতিল করার কথা বলা হয়েছে। সঙ্গে মানিলন্ডারিং আইনে সংস্থাটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য। জানা গেছে, সরকারী কমিটি তাদের রিপোর্ট চূড়ান্ত করে বাণিজ্য সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুনের কাছে জমা দিয়েছে। তিনি রিপোর্টটি ভালমতো পর্যবেক্ষণ করে এ সংক্রান্ত বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে সরকারী কমিটির প্রধান মোঃ আবদুল মান্নান জনকণ্ঠকে বলেন, যুবকের ব্যাপারে এর আগে দুটি অস্থায়ী কমিশন রিপোর্ট দিয়েছে। ওই রিপোর্ট পর্যালোচনা করে এ কমিটি তাদের সুপারিশ তৈরি করেছে। সুপারিশ তৈরির সময় গ্রাহকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় মাথায় রেখেই কাজ করেছেন কমিটির সদস্যরা। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বাণিজ্য সচিবের কাছে রিপোর্টটি জমা দেয়া হয়েছে। যুবকের ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা কবে নাগাদ টাকা ফেরত পাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সরকারী কমিটির সুপারিশে কিছু বলা হয়নি। এটা এখন সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বিষয়। যুবকের কি পরিমাণ সম্পত্তি আছে তা হিসাব-নিকাশ চূড়ান্ত হওয়ার পর সরকারই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে। তবে সরকারী কমিশন যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে এখন গ্রাহকের টাকা ফেরত দেয়ার কোন সুপারিশ নেই। সরকারী কমিটির রিপোর্টে যুবকের (যুব কর্মসংস্থান সোসাইটি) মতো অন্য কোন প্রতিষ্ঠান যাতে জনগণের অর্থ ও সম্পদ হাতিয়ে নিতে না পারে সেজন্য কঠোর আইন প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়। একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করে কোম্পানি আইন, সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন আইন সংশোধনের প্রস্তাব দেয়া হয় ওই রিপোর্টে। এ ধরনের সংগঠনের কোন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকরা যাতে না যান সে বিষয়েও সুপারিশ করা হয়েছে। কমিটির রিপোর্টে আরও বলা হয়, পৃথক আইন দিয়ে একটি স্থায়ী কমিশন বা সংস্থা তৈরি করা যেতে পারে। ওই কমিশন যুবকের সম্পত্তি সরকারের হেফাজতে নেয়া, রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচালনা ও বিক্রি করে অর্থ প্রকৃত গ্রাহকদের মূল পাওনা পরিশোধের ব্যবস্থা করবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে বিদ্যমান কোম্পানি আইনে এ নতুন ধারা সংযোজন বা নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে প্রশাসক নিয়োগের জন্য আইন ও নীতিমালা পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। গ্রাহকদের হয়রানি ও অর্থ আত্মসাতের জন্য দায়ী শনাক্তকৃত ৪০ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা এবং গ্রাহকদের দায়ের করা মামলা পরিচালনার জন্য বিভিন্ন জেলায় আইনী সহায়তা কমিটি গঠন ও বিনামূল্যে আইনী সহায়তা প্রদানের ব্যাপারে কাজ করবে স্থায়ী কমিশন। স্থায়ী কমিশন বিভিন্নস্থানে যুবকের বেদখল বা বেহাত হওয়া সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য সরকার কর্তৃক নিয়োজিত প্রশাসককে কাজ করার ক্ষমতা দেবে; যাতে প্রশাসক উদ্ধারকৃত লাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনা করতে পারে সে বিষয়ে সহায়তা করবে। যুবক সংস্থার অবশিষ্ট সম্পদ যাতে বেহাত হতে না পারে সেজন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার ক্ষমতা থাকবে প্রশাসকের হাতে।
×