ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এপ্রিল-মে’তে চসিক নির্বাচনের সম্ভাবনা

প্রকাশিত: ০৬:১২, ৭ ডিসেম্বর ২০১৪

এপ্রিল-মে’তে চসিক নির্বাচনের সম্ভাবনা

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন প্রধান আলোচনা আগামী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচন। নির্বাচন কমিশন প্রদত্ত ইঙ্গিত অনুযায়ী আগামী এপ্রিল-মে’র মধ্যে এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে কর্পোরেশনের আওতাধীন ভোটার সংখ্যা আরও প্রায় ৮০ হাজার বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২০১০ সালের ১৭ জুন চসিকের বিগত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আর প্রথম সভা হয় ২৬ জুলাই। সে হিসাবে বর্তমান মেয়র ও কাউন্সিলরদের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২৫ জুন। সে অনুযায়ী ২৬ জানুয়ারি থেকে ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধিবদ্ধ নিয়ম রয়েছে। পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়ের ১৮০ দিন পূর্বে যে কোন সময় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। এ লক্ষ্য নিয়ে নির্বাচন কমিশন এগিয়ে যাচ্ছে বলে জেলা নির্বাচন কমিশন অফিস সূত্রে জানা গেছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ নগরীতে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের ন্যায় গুরুত্ব বহন করে থাকে। দলীয় ব্যানারে প্রতীকে নির্বাচন না হলেও দলের মনোনয়নই প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়ে থাকে। নির্বাচনের মাধ্যমে এটি হবে ৫ম নির্বাচন। ২০০৪ সালে প্রথম নির্বাচিত মেয়র হন আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। এরপর আরও দুই দফায় নির্বাচিত হয়ে তিনি মেয়রের হ্যাটট্রিক বিজয়ের অধিকারী হন। ২০১০ সালের চতুর্থবারের নির্বাচনে তিনি হেরে যান। আওয়ামী লীগ ঘরানার এম মনজুর আলম বিএনপির সমর্থনে মেয়র পদে নির্বাচিত হন। তার ক্ষমতার মেয়াদ আগামী ২৬ জুলাই পর্যন্ত। এদিকে এ নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যে স্থানীয় রাজনীতি ধীরে ধীরে গতি লাভ করতে শুরু করেছে। বড় দুই জোট অর্থাৎ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে এবারও মেয়র পদে লড়াই সীমাবদ্ধ যে থাকবে তা নিশ্চিত। দুই জোটের প্রার্থীর মনোনয়ন নিয়ে নানা আলাপ-আলোচনা চাউর হয়ে আছে। সে হিসেবে আওয়ামী লীগের পক্ষে আলোচনায় রয়েছেন সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন ও কোষাধ্যক্ষ এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম। অপরদিকে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের পক্ষে বর্তমান মেয়র মনজুর আলম ও নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেনের নাম দীর্ঘদিন থেকে আলোচনায় আসলেও এখন নতুন করে সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ আল নোমান ও সাবেক রাষ্ট্রদূত গোলাম আকবর খন্দকারের নাম উঠে এসেছে। তবে সবকিছু চূড়ান্ত হবে দুই জোটেরই হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তের ওপর। এদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষে আ জ ম নাছির ও আবদুচ ছালাম মেয়র পদে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক হলেও মহিউদ্দিন চৌধুরী কাজ করে যাচ্ছেন ঘোষণা ছাড়াই। শনিবার তিনি জনকণ্ঠকে জানান তিনি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের দুই ডাক সাইটে মন্ত্রী স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোঃ নাসিম ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আওয়ামী লীগ নেতাদের ইঙ্গিত দিয়েছেন দলের পক্ষে মহিউদ্দিন চৌধুরীই মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাঁরা মহিউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গেও কথা বলেছেন। মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীরা এখন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। লালখান বাজার এলাকা থেকে জিইসি মোড় এলাকায় নির্বাচনী প্রচারের জন্য একটি কেন্দ্রীয় অফিস স্থাপনেরও প্রস্তুতি চলছে। অপরদিকে, চউক চেয়ারম্যান ও নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম গত প্রায় বছরখানেক ধরে মেয়র নির্বাচনের জন্য তৎপর হয়ে মাঠে রয়েছেন। বর্তমানে তিনি প্রতিটি ওয়ার্ডে সমাবেশ করে চলেছেন। গত রমজানের ঈদে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য ও ইফতার সামগ্রী বিতরণ করেছেন। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে আ জ ম নাছির জানান, তিনি মেয়র পদে নির্বাচন করতে ইচ্ছুক। তবে দল যাকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবে তা তিনি মেনে নেবেন। তার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, দলীয় হাইকমান্ড মহিউদ্দিন চৌধুরীকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিলে আ জ ম নাছির তাঁর পক্ষে কাজ করবেন নিঃসন্দেহে। তবে আবদুচ ছালামের ব্যাপারে দলের অধিকাংশ নেতার ঘোর আপত্তি রয়েছে। গত ৪ ডিসেম্বর দলের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় আবদুচ ছালামের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। চট্টগ্রামের উন্নয়নের ব্যানারে নিজের নামে আবদুচ ছালাম যেসব কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছেন তা দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী হিসেবে অভিযোগ আনা হয়েছে। আবদুচ ছালামকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের নোটিস ॥ শনিবার মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোষাধ্যক্ষ ও চউক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের বিরুদ্ধে দলীয় সাংগঠনিক কর্মকা-ে বিভ্রান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ এনে নোটিস দেয়া হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন স্বাক্ষরিত এ নোটিসে বলা হয়েছে, অবিলম্বে তিনি দলীয় শৃঙ্খলা কর্মকা- থেকে বিরত না থাকলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×