ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কেলেঙ্কারি

বাদলের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা বিসিবি ও ক্লাব সমিতির

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ৫ ডিসেম্বর ২০১৪

বাদলের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা বিসিবি ও ক্লাব সমিতির

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘আমি তো চাকরিজীবী। চাকর বলেছেন। ঠিক আছে। কিন্তু উনি (লুৎফর রহমান বাদল) কী? তা সবাই জানে, দেশবাসী জানে। এমন লোকের মুখে বড় বড় কথা মানায় না।’ কথাটি বলেছেন বিসিবির পরিচালক ইসমাইল হায়দার মল্লিক। তাহলে কী শেয়ার কেলেঙ্কারির বিষয়টিই বলতে চাইছেন মল্লিক। যে কেলেঙ্কারিতে দেশের আপামর ক্ষুদ্র শেয়ার ব্যবসায়ীরা মুহূর্তেই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন। সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা নিয়ে খেলা, এরচেয়ে নিন্দনীয় কাজ আর কী থাকতে পারে। শুধু কী শেয়ার কেলেঙ্কারি, ক্রিকেটেও তো বাদলের বিরুদ্ধে আছে ভুড়িভুড়ি অভিযোগ। শোনা যায়, আম্পায়ার ও ক্রিকেটারদের অর্থের প্রলোভন দেখানো নাকি তার কাজ। যে বোর্ডের তত্ত্বাবধানেই ক্রিকেট পরিচালিত হচ্ছে, একজন ক্রিকেট সংগঠন হিসেবে সেই বিসিবির বিরুদ্ধে উল্টা-পাল্টা কথা বলতেও পিছপা হচ্ছেন না বাদল। আর তাই মল্লিকের সঙ্গে বিসিবির কর্মকর্তারাও একজোট হয়েছেন। শুধু কী বিসিবি পরিচালকরাই, ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেটের ক্লাব সমিতিও ক্ষেপেছে বাদলের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি বাদলের উদ্দেশ্যমূলক, উদ্ভট ও নৈতিকতা বিবর্জিত নিন্দনীয় ও ঘৃন্য সমালোচনা মূলক বক্তব্যের তীব্র নিন্দাও জানিয়েছে ক্লাব সমিতি। বিসিবির পরিচালক ও ক্লাব সমিতির সভাপতি মনজুর কাদেরও নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন। ক্লাব সমিতি এখন এ নিন্দনীয়, ক্রীড়াঙ্গনের কুলাঙ্গার ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও কামনা করছে। কী করেছেন বাদল? কয়েকদিন আগে বিসিবি সভাপতির কাছে ঢাকা লীগ নিয়ে একগাদা অভিযোগ করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য-লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে ‘হোম অব ক্রিকেট’ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে খেলতে দেয়া হচ্ছে না, আম্পায়ারিংয়ের মান ভাল না। দুটো অভিযোগই ভিত্তিহীন প্রমাণ হয়েছে। যে আম্পায়ারদের পরিচালিত খেলায় একবার জিতেছে রূপগঞ্জ, সেই আম্পায়ারদের পরিচালনাতেই একবার হেরেছে। জয়ী ম্যাচ নিয়ে কোন কথা নেই বাদলের। অথচ হারা ম্যাচ নিয়ে যত কথা। আর মিরপুরে সবাইকেই খেলার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। বাদলের কোন অভিযোগই যখন আমলে নেয়া হচ্ছে না, তখন আরও চটে গিয়ে বিসিবি পরিচালকরা সবাই ‘চোরচোট্টা’ বলতেও পিছপা হননি বাদল। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের বিরুদ্ধেও কথা বলেছেন। তিনি নাকি সব ম্যানিপুলেশনের সঙ্গে জড়িত! বিসিবির বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে উল্টা-পাল্টা বলায় বিসিবি প্রতিবাদ জানিয়েছে। এক মেইল বার্তায় বিসিবি জানায়, ‘৪ ডিসেম্বর কয়েকটি জাতীয় দৈনিক এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে অংশগ্রহণকারী দল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বাদলের বক্তব্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের দৃষ্টি গোচর হয়েছে। বাদল তার বক্তব্যে চলতি ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগের আম্পায়ার নিয়োগ সম্পর্কে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রথম নির্বাচিত সভাপতি ও পরিচালকবৃন্দ সম্পর্কে যে মন্তব্য প্রদান করেছেন তা শালীনতা বিবর্জিত, কুরুচিপূর্ণ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও শিষ্টাচার বহির্ভূত। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড মনে করে, বাদল ব্যক্তিগত হীন স্বার্থ চরিতার্থের উদ্দেশে একজন সংসদ সদস্য এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির মতো সম্মানিত ব্যক্তি এবং তাঁর সুযোগ্য ও সফল নেতৃত্বে পরিচালিত একটি নির্বাচিত বোর্ডের সদস্যদের জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হেয় প্রতিপন্ন করেছেন। বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক মনজুর কাদেরের নেতৃত্বাধীন ক্লাব সমিতিও বাদলের অসুস্থ মানসিক আচরণের নিন্দা জানাতে গিয়ে জানায়, ‘বাদলের মনগড়া কুরুচিপূর্ণ উক্তি বিসিবির তথা বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনকে কলুষিত করেছে। বিসিবি সভাপতি একদিকে যেমন একজন সুশিক্ষিত, মার্জিত ও চৌকোস প্রশাসক অন্যদিকে অকৃত্তিম জনপ্রতিনিধি হিসেবে একজন সম্মানিত সংসদ সদস্য। তার যোগ্য ও সফল নেতৃত্বে বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ড যখন সুসংগঠিত ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দল প্রভূত সাফল্য নিয়ে দেশের সুনামকে গৌরবোজ্জ্বল করে দৃঢ় প্রত্যয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক সেই সুন্দর মুহূর্তকে ম্লান ও খাট করার জন্য ঘৃণ্য উদ্দেশ্যেমূলক চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে একটি চিহ্নিত মহল। আর তারই তল্পিবাহক এই বাদল।
×