ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে নাজিব তুন রাজাকের দূতের সাক্ষাত

নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করবে মালয়েশিয়া

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ৩ ডিসেম্বর ২০১৪

নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করবে মালয়েশিয়া

বাংলানিউজ ॥ আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন ‘নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বিশেষ আবাসন প্রকল্প।’ রাজধানীর অদূরে কামরাঙ্গীরচরে এই আবাসন প্রকল্প নির্মাণ হবে মালয়েশিয়ার সহযোগিতায়। মালয়েশিয়ায় রাষ্ট্রীয় সফরের প্রথম দিনেই দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে এই বিশেষ হাউজিং প্রকল্পে সহযোগিতার আশ্বাস পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মঙ্গলবার বাংলাদেশ থেকে বেলা সোয়া দশটায় উড্ডয়নের পর স্থানীয় সময় বিকেল চারটায় কুয়ালালামপুর পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু নিজেকে বিশ্রামের সুযোগ না দিয়েই সন্ধ্যার আগেই সফরের কার্যসূচীতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী। সন্ধ্যা পৌনে ছয়টায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে হোটেল গ্রান্ড হায়াতের মিটিং রুমে সৌজন্য সাক্ষাত করতে আসেন মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রীর দক্ষিণ এশীয় বিষয়ক বিশেষ দূত সামি ভেলু। প্রায় আধা ঘণ্টার মতো আলোচনায় নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বিশেষ আবাসন প্রকল্পসহ আরও বেশ কয়েকটি প্রকল্পে মালয়েশীয় সরকারের সহযোগিতার বিশেষ আগ্রহের কথা জানান তিনি। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এ কে এম শামীম চৌধুরী। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিব জানান, বৈঠকে তিনটি বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে, প্রথমত রাজধানীর অদূরে কামরাঙ্গীরচরে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য হাউজিং প্রকল্প বাস্তবায়ন, চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারি ক্রুড অয়েল হ্যান্ডলিং প্রকল্প ও বাংলাদেশ রেলওয়েতে নতুন কোচ সংযোজন। তিনটি বিষয়েই মালয়েশীয় সরকারের বিশেষ দূত তাদের সহযোগিতার সম্ভাবনার কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন। শহীদুল হক বলেন, কামরাঙ্গীরচরে বহুতল ভবন নির্মাণ করে নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাসের সুবিধা নিশ্চিত করার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই অঞ্চলে অন্তত ৪৩টি প্লটে এ ধরনের বহুতল বিশিষ্ট হাউজিং নির্মাণের ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। পাশাপাশি এই হাউজিং প্রকল্পে যেন সহজ ও স্বল্প দামে সাধারণ এবং নিম্ন আয়ের মানুষ তাদের আবাসন পেতে পারে সে বিষয়েও জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি বাংলাদেশ রেলওয়েতে নতুন ৪শ’টি কোচ সংযোজনের জন্য মালয়েশিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেন সামি ভেলু। এর আগে কুয়ালালামপুরে প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া হয় লালগালিচা সংবর্ধনা। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ বিষয়ক উপমন্ত্রী হাজি ইসমাইল হাজি আবদুল মুত্তালিব ও মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার একেএম আতিকুর রহমান। এরপর বিশেষ মোটর শোভাযাত্রা সহকারে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় হোটেল গ্র্যান্ড হায়াতে। পথে বাংলাদেশ আর মালয়েশিয়ার পতাকা সজ্জিত ছিল সড়কের দুই পাশ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই অগ্রসরমান দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য, বন্ধুত্ব আর শ্রম সম্পর্কের নতুন দিক উন্মোচিত হবে প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে। সফরে আংশিক ভিসা অব্যাহতি চুক্তি, সমঝোতা স্মারক ও যৌথ ইশতেহার স্বাক্ষর হবে বলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রগুলো জানাচ্ছে। সফরে প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। পুত্রজায়ায় দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার আলোচনা ছাড়াও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী অংশ নেবেন বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের সুযোগ সম্পর্কিত সংলাপে। পুত্রজায়ায় তাঁর সম্মানে অনুষ্ঠিত হবে মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নৈশভোজ। কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশী কমিউনিটির প্রতিনিধিদের সঙ্গেও মতবিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়েছেন। এ ছাড়াও রয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদসহ একটি বড় ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল, বিশিষ্ট সাংবাদিক হাবিবুর রহমান মিলনসহ কয়েকজন সাংবাদিক ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
×