ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিএসএমএমইউতে দুটি বহির্বিভাগ উদ্বোধন

জনগণের সেবাই আমাদের কাজ ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ২৩ নভেম্বর ২০১৪

জনগণের সেবাই আমাদের কাজ ॥ প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণই সিদ্ধান্ত নেবেন, তাঁরা কাকে ভোট দেবেন। দেশ ও জনগণের প্রতি আমাদের দায়িত্ব আমরা পালন করে যাচ্ছি। জনগণের সেবা করাই আমাদের কাজ। শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি বহির্বিভাগ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলন হলে দেয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্তের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক প্রমুখ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়া হয়। আমরা সেগুলো পুনরায় চালু করে গ্রামাঞ্চলের লাখ লাখ সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছি, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে আরেকটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে আরও দুটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করব। ইতোমধ্যে সেই নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসা সেবা দেয়ার লক্ষ্যে দেশে আরও দুটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। মানুষকে ভালভাবে উন্নত সেবা দিতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া সেনাবাহিনীর যেসব হাসপাতালে ৫শ’ শয্যা রয়েছে সেগুলোকে মেডিক্যাল কলেজ করার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে ২৩টি সরকারী মেডিক্যাল কলেজ আছে। আরও পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজ চালুর প্রক্রিয়া চলছে। গত ৬ বছরে ৬টি ডেন্টাল কলেজ, ৫টি হেলথ টেকনোলজি ইনস্টিটিউট, ৭টি নার্সিং কলেজ ও ১২টি নার্সিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করেন তিনি। রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসকদের ভাল ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোগী অর্ধেক ভাল হয়ে যায় ভাল ব্যবহার করলে। আপনাদের (চিকিৎসক) ব্যবহারের ওপর রোগীরা ভরসা পায়। সেদিক চিন্তা করেই চিকিৎসা দেবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালের ডিসেম্বরে এই আউটডোর কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। প্রায় চার বছরের মাথায় এসে তিনি এই কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন। এই কমপ্লেক্স উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে রোগীরা আরও উন্নত চিকিৎসা সেবা পাবেন এবং চিকিৎসকরাও উন্নত পরিবেশে রোগীদের সেবা দিতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা। চিকিৎসায় উৎকর্ষের প্রয়োজনে গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করে ১৯৯৮ সালের ৩০ এপ্রিল তৎকালীন পিজি হাসপাতালকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি স্বাধীন দেশে একটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে নাÑ এটা কিভাবে হয়? সে সময় বিরোধী দলের সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতার কথা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। গবেষণার ওপর আরও গুরুত্ব দিতে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমি জানতে পেরেছি গবেষণাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনস্টিটিউশনাল রিভিউ বোর্ড (আইআরবি) গঠন করা হয়েছে। আমি আশা করব চিকিৎসা গবেষণার ক্ষেত্রে আপনারা আরও মনোযোগী হবেন। নার্সিং শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নার্সের যথেষ্ট ঘাটতি আছে। আরও নার্স নিয়োগ দিতে হবে। আগে নার্সিং ক্ষেত্রে কেউ ভর্তি হতে চাইত না। স্বাস্থ্য সেবায় নার্স প্রয়োজন। আমাদের এখানে রোগী ও চিকিৎসকের তুলনায় নার্সের সংখ্যা কম। ১৯৭২ সালে দেশজুড়ে থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার যে উদ্যোগ বঙ্গবন্ধু গ্রহণ করেছিলেন তারই ধারাবাহিকতায় কমিউনিটি ক্লিনিক গড়ে তোলা হয় বলে শেখ হাসিনা জানান। শুধু রাজনৈতিক বিবেচনায় ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে এই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেয় বলে জানান তিনি। বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৮ হাজার ৮৫৭ জন সহকারী সার্জন এবং সহকারী ডেন্টাল সার্জন নিয়োগ দেয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীতে এত নিয়োগ কেউ দেয়নি। ঢাকার কুর্মিটোলায় এবং খিলগাঁওয়ে পৃথক দুটি ৫শ’ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল চালুর কথা উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী, রেলের একটি নিজস্ব হাসপাতাল রয়েছে। এটাকে শুধু রেলের জন্য না রেখে জেনারেল হাসপাতাল করে দিলে শাহজাহানপুরের লোকজন চিকিৎসা পাবে।
×