ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযোদ্ধার মানবেতরভাবে জীবনযাপন

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২২ নভেম্বর ২০১৪

মুক্তিযোদ্ধার মানবেতরভাবে জীবনযাপন

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় গ্রামের মৃত রামচন্দ্র বাকচীর পুত্র ১৯৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধা সুরেন্দ্র বাকচী (৬৬) ওরফে সুশোন বাকচী বর্তমানে কঠিন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে খুবই কষ্টে মানবেতরভাবে জীবনযাপন বা বেঁচে আছেন। প্রায় এক বছর ধরে তাঁর ডান হাত, পা প্যারালাইসিসে অবস হয়ে গিয়ে তাঁর এখন আর চলার কোন শক্তি নাই। কোন প্রকার হাঁটাচলা করতে না পারায় ঘরেই তাঁকে শুয়ে-বসে কাতরাতে হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধা সুরেন্দ্র বাকচী চিরকুমার রয়েছেন অর্থাৎ তিনি বিয়ে করেন নাই তাই তাঁর কোন স্ত্রী ও সন্তানাদিও নেই। ভাইবোন ও ভাইপো, ভাতিজিদের সহানুভূতির উপর নির্ভর করেই তাঁকে চলতে হচ্ছে। খাওয়া-দাওয়া, স্নানাদি এমনকি প্রাকৃতিক কাজকর্ম সারতেও তাদের সহায়তা নিতে হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধা সুরেন্দ্র জানান ৭/৮ বছর ধরে তিনি কঠিন রোগে আক্রান্ত। দেশের বিভিন্ন স্থানের বড় বড় ডাক্তারের চিকিৎসা নিয়েছেন কিন্তু ভাল হতে পারেন নাই। এখন তিনি বেঁচে থাকার আশা একপ্রকার ছেড়েই দিয়েছেন। কেউ তাঁকে দেখতে গেলে বলেন তোমরা আমাকে দোয়া আর্শীবাদ কর আমি যেন আর কষ্ট না পেয়ে শান্তিতে চির নিদ্রায় শায়িত হতে পারি। মুক্তিযোদ্ধা সুরেন্দ্র’র এই আকুতি শুনে কেউ যেন চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না। সুরেন্দ্র বাকচী আরও বলেন, তাঁরা পাঁচ চাচাতো-কাকাতো ভাই যথাক্রমে সুরেন্দ্র বাকচী, নীহার বাকচী, যাদব বাকচী, জাপান বাকচী, অখিল বাকচী একসঙ্গে ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। এদের ইতোমধ্যেই ভাই যাদব বাকচী, নীহার বাকচী, জাপান বাকচী বিভিন্ন কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা সুরেন্দ্র’র বড় ভাই সন্তোষ বাকচীও কঠিন রোগে আক্রান্ত। তাই তাঁর মনেও, সেই আশঙ্কা কাজ করায় আরও বেশি কাতর হয়ে পড়েছেন তিনি। বর্তমানে তিনি যে ভাতা পাচ্ছেন তা দিয়ে গ্রাম্য এক ডাক্তারের চিকিৎসা নিচ্ছেন কিন্তু কোন উন্নতি হচ্ছে না। বিদেশে উন্নত চিকিৎসা করানোর মতো সামর্থ্যও তাঁর নাই। তাঁর ইচ্ছা যদি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট বা সরকারী সহায়তায় বিদেশে উন্নত চিকিৎসা সেবা নিতে পারতেন তাহলে হয়ত সুস্থ হতে পারতেন। বিধান চন্দ্র টিকাদার গ্রাম+ডাক- জলিরপাড়, গোপালগঞ্জ।
×