ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সরেজমিন প্রথম সংসদীয় কমিটি

সুন্দরবনের শুঁটকিপল্লী এখন মুখরিত

প্রকাশিত: ০৪:৪৭, ১২ নভেম্বর ২০১৪

সুন্দরবনের শুঁটকিপল্লী এখন মুখরিত

বাবুল সরদার, সুন্দরবনের দুবলা শুঁটকি পল্লী থেকে ফিরে ॥ বঙ্গোপসাগর উপকূল বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের দুবলাসহ ১১ শুঁটকিপল্লী এখন কমপক্ষে ২৫ হাজার জেলে-বহরদারের পদচারণায় মুখরিত। এরা সকলেই কর্মব্যস্ত। তবে এরা ভাল নেই। নেই তাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল, সুপেয় পানি ও চিকিৎসাসেবা। সারাক্ষণ তাড়িয়ে বেড়ায় বনদস্যু আতঙ্ক। বছরের পর বছর ধরে শুঁটকি পল্লীর জেলে বহরদার জীবন-মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে দেশের জন্য শত কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করলেও তাদের ভাগ্য বদলে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ আজও নেয়া হয়নি। সংসদীয় কমিটির সাথে মতবিনিময়কালে এ সব কথা জেলেরাই বলেন। জেলেদের সার্বিক বিষয়টি সরেজমিন দেখতে প্রথমবারের মতো মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মীর শওকাত আলী বাদশার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ৩ দিনের সফরে সুন্দরবনের শুঁটকি পল্লীতে যান। ভারত ও মিয়ানমারের কাছ থেকে সমুদ্র বিজয়ের পর সরকার বিস্তৃত সমুদ্র সম্পদ রক্ষায় ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির নেতৃবৃন্দ সুন্দরবনের শুঁটকি পল্লী পরিদর্শন ও আলোরকোলে জেলেদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। দুবলা ফিসারম্যান গ্রুপের সভাপতি মেজর (অব) জিয়াউদ্দিনের সভাপতিত্বে মতবিনিময়কালে বক্তব্য রাখেন সংসদীয় কমিটির সদস্য শামছুন্নাহার এমপি, মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান পিউস কস্তা, মৎস্য অধিদফতরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শেখ মোস্তাফিজুর রহমান, জেলেদের আইডি কার্ড প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ আরিফুর রহমান তরফদার, খুলনা বিভাগীয় মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান, খুলনা ও বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রফুল্ল কুমার সমাদ্দার ও নারায়ণ চন্দ্র ম-ল, দুবলা ফিসারম্যান গ্রুপের কো-চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন, বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি বাবুল সরদার, জেলে ও বহরদার গাজী গোলাম রসুল, নুর মোহাম্মদ প্রমুখ। বঙ্গোপসাগরসহ বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগে কমপক্ষে ১৭টি বনদস্যু বাহিনীর মুক্তিপণের দাবিতে জেলে ও বনজীবীদের অপহরণ বাণিজ্যের কারণে আতঙ্কে থাকতে হয় জেলে, বহরদার ও ডিপো মালিকদের। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস ও বনদস্যুদের উৎপাত আশঙ্কার মধ্যেও জীবন-জীবিকার তাগিদে সাগর পাড়ের চরাঞ্চলে অবস্থান নেয় এ সব হতদরিদ্র জেলে। বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত মৌসুমে পল্লীর জেলেদের আহরিত ২৫ হাজার ২শ’ ৩৮ কুইন্টাল শুঁটকি মাছ থেকে সুন্দরবন বিভাগ রাজস্ব আয় করে ১ কোটি ২৭ লাখ ৯ হাজার টাকা। গত শুঁটকি মৌসুমে ৫৫ জন ডিপো মালিক, ১৩ জন বহরদার, ৮৯৫টি জেলে ঘরে থেকে প্রায় ২৫ হাজার জেলে শুঁটকির জন্য মাছ আহরণ করেন।
×