ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

গণতন্ত্রের প্রতীক নূর হোসেনকে সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করল জাতি

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১১ নভেম্বর ২০১৪

গণতন্ত্রের প্রতীক নূর হোসেনকে সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করল জাতি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিনম্র শ্রদ্ধা, ভালবাসা আর নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে সোমবার পালিত হয়েছে শহীদ নূর হোসেন দিবস। জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে গণতন্ত্রের জন্য শহীদ যুবলীগ নেতা নূর হোসেনকে। দিনব্যাপী এসব কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে নেতারা নূর হোসেনের আত্মত্যাগের চেতনায় গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে ইষ্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ঐক্যবদ্ধ ছিল বলেই জাতি ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচন, ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এবং ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে জয়ী হয়েছি। আমরা গণতান্ত্রিক ঐক্য গড়ে তুলেছি। যে কোন মূল্যে নূর হোসেনের বুকের রক্তে অর্জিত গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে হবে। সকালে রাজধানীর শহীদ নূর হোসেন স্কোয়ারে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণের মধ্য দিয়ে জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে গণতন্ত্রের জন্য শহীদ হওয়া নূর হোসেনকে। একই সময় জুরাইন কবরস্থানের নূর হোসেনের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ, কবর জিয়ারত ও ফাতেহা পাঠ করা হয়। শহীদ নূর হোসেন স্কয়ারে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, গণফোরাম, জাসদ, জেএসডি, ওয়ার্কার্স পার্টি, সিপিবি, বাসদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মৈত্রী, ছাত্রলীগ, ছাত্র মৈত্রী, ওলামা লীগ, শহীদ নূর হোসেন সংসদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বঙ্গবন্ধু একাডেমি, মোটর চালক লীগসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। শহীদ নূর হোসেনের ভাই আলী হোসেনসহ পরিবারের সদস্যরাও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। মন্ত্রিসভার বৈঠকেও শহীদ নূর হোসেনকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। ‘জাতীয় ঐক্য’-এর ব্যানারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, নূর হোসেন অন্যায় মেনে নেয়নি, প্রতিবাদ গড়ে তুলেছে। বাঙালি জাতি কখনও অন্যায় মেনে নেয় না, প্রতিবাদ গড়ে তোলে। নূর হোসেনের কাক্সিক্ষত গণতন্ত্র পেয়েছেন কিনাÑ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনও পাইনি, তবে তার আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। দেশে এখনও স্বাধীনতা যুদ্ধ চলছে। নূর হোসেনের স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণ হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়িত হবে। আদালতের রায় নিয়ে বাগাড়ম্বর নয় সুরঞ্জিত ॥ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, আদালতের রায় নিয়ে কারও বাগাড়ম্বর করা উচিত নয়। আদালতের কাজ আদালতকে করতে দেয়া উচিত। যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের ফাঁসি সম্পর্কে আদালতের রায় নিয়ে কোন মন্তব্য না করার পরামর্শ দেন তিনি। সোমবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু একাডেমির উদ্যোগে শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের ব্যাপারে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের ওপর রিভিউ করার কোন বিধান নেই। যারা এ রায় নিয়ে কথা বলছেন তা মোটেও উচিত নয়। আদালতের রায় কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে অপেক্ষা করার জন্য তিনি পরামর্শ দেন। সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে একজন আইনজীবীর রিট আবেদন সম্পর্কে সুরঞ্জিত বলেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বাহাত্তরের সংবিধান হুবহু পুনর্বহাল করা হয়েছে। বাহাত্তরের সংবিধান কার্যকর হলে আদলতের বিচারকদের মর্যাদা অনেকগুণ বেশি বৃদ্ধি পাবে। শহীদ নূর হোসেনের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, এই দিন আমি প্রত্যক্ষ করেছিলাম নূর হোসেন নিজেকে উৎসর্গ করে কিভাবে স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রকে মুক্ত করে দিয়ে গেছেন। যার সুফল আজ দেশের জনগণ ভোগ করছে।
×