ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার মিশন

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ১১ নভেম্বর ২০১৪

ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার মিশন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তিন দিনের চীন সফরে সোমবার বেজিং এসে পৌঁছেছেন। এর মধ্য দিয়ে এশিয়ার তিনটি দেশে তার আট দিনের সফর শুরু হলো। এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা ফোরামের (এ্যাপেক) শীর্ষ বৈঠকটি এবার বেজিংয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নানা কারণে বিশ্লেষক মহল ওবামার এ সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটি চীনে ওবামার দ্বিতীয় সফর। এই সফরে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাণিজ্য সহযোগিতা চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ নামের এ চুক্তিতে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি ও এ্যাপেক সম্মেলনের স্বাগতিক দেশ চীনকে রাখা হচ্ছে না। তবে চীনের সঙ্গে একটি দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তি করতে ইচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্র। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার সরাসরি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে বুধবার। ওবামা এমন এক সময়ে চীন সফরে এলেন যখন বিভিন্ন ইস্যুতে দেশ দুটোর মধ্যে তিক্ত সম্পর্ক বিরাজ করছে। অন্যদিকে দেশে ওবামার নিজস্ব ভাবমূর্তি ক্রমে বিলীন হওয়ার পথে। ওবামার দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এখন মার্কিন রাজনীতিতে এক রকম কোণঠাসা অবস্থায়। প্রেসিডেন্টের মেয়াদকালে দু’বছর বাকি থাকতে হারানো ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে তাই সচেষ্ট রয়েছেন ওবামা। ওবামাকে বহনকারী এয়ার ফোর্স ওয়ান বিমানটি বেজিংয়ের উদ্দেশে রবিবার মধ্যরাতে ওয়াশিংটন ত্যাগ করে। বেজিংয়ে এসে নামার পর তাকে যথারীতি লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়। বেজিংয়ে প্রথমে তার সঙ্গে সাক্ষাত সদ্য ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণকারী জোকো ইদোদোর সঙ্গে। স্পষ্টভাষী ইদোদো সম্প্রতি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। তার অবস্থানটি দৃশ্যত জিনপিং, যিনি কঠোর হাতে দেশ পরিচালনা করছেন তার বিপরীত। ওবামা শৈশব কাটিয়েছিলেন ইন্দোনেশিয়ায়। ওবামা ইদোদোকে আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সোমবার আরও পরের দিকে বেজিং এশিয়া ব্যবসায়িক নির্বাহীদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন ওবামা। রাতে তিনি বেজিং ন্যাশনাল এ্যাকোয়াটিকস সেন্টারে ভোজে অংশ নেবেন ও মনোরম আতশবাজি উপভোগ করবেন। বুধবার তিনি চীন থেকে মিয়ানমারে যাবেন। এরপর তার গন্তব্য অস্ট্রেলিয়া। শনি ও রবিবার ব্রিসবেনে অনুষ্ঠেয় জি-২০ সম্মেলেন তিনি অংশ নেবেন। চীন সফর ওবামা প্রশাসনের জন্য এশিয়ায় মার্কিন প্রভাব বিস্তারের শেষ সুযোগ। ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক এ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের এশিয়া বিশেষজ্ঞ আর্নেস্ট বাওয়ার মনে করেন, ‘প্রেসিডেন্টের জন্য এটি এক কঠিন সফর’। তিনি বলছেন, ওবামাকে এশীয় নেতৃবৃন্দ সাক্ষাত দেবেন এই প্রশ্নটি মাথায় রেখে যে, (কংগ্রেসের) মধ্যবর্তী নির্বাচনের পর বারাক ওবামা কে? এমনকি নির্বাচনের আগেও এ অঞ্চলে ওবামার প্রভাব অনেক কমে গিয়েছিল। চীনের ক্রমবর্ধমান ক্ষমতা বৃদ্ধির মুখে এ অঞ্চলে মার্কিন মিত্র জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর দিকে জোর দিয়ে এসেছে। এরই মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে ইসলামিক স্টেটের উত্থান এবং পশ্চিম আফ্রিকায় ইবোলা মহামারীর বিস্তার মার্কিন সামরিক ও কৌশলগত সহায়তা এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগর থেকে অন্যদিকে ঘুরে যায়। Ñনিউইয়র্ক টাইমস অনলাইন
×