ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চাই দায়িত্বশীল বক্তব্য

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ১১ নভেম্বর ২০১৪

চাই দায়িত্বশীল বক্তব্য

সম্প্রতি বাংলাদেশের মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান এক জঙ্গী সম্পর্কে যা বলেছেন তা রীতিমতো অবাক করার মত। পর্যবেক্ষকরা এ বক্তব্যকে জঙ্গীবাদের পক্ষে একটি সাফাই বলে অভিহিত করেছেন। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের এই বক্তব্য সম্পর্কে ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবাদলিপিও প্রকাশ করা হয়। পুলিশ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জঙ্গী দমনে ভূমিকা রাখছে। অথচ তাদের কর্মকা- নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে পুলিশ শান্তি শৃংখলা ও জনগণের জীবন রক্ষার্থে জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে কাজ করবে কিভাবে? গত ১৭ অক্টোবর শুক্রবার জুমার নামাজের পর নিষিদ্ধ ঘোষিত হিযবুত তাহ্রীর অর্ধ শতাধিক জঙ্গী সদস্য রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি মসজিদের গেটে সরকারবিরোধী শ্লোগান ও উস্কানিমূলক লিফলেট বিতরণ করছিল। পুলিশ তাদের কর্মকা-ে বাধা দিলে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে শর্টগান দিয়ে গুলি ছুড়তে বাধ্য হয়। এ সময় হিযবুত তাহ্্রীর অন্যতম সদস্য নাফিস আহত হয়। আহত নাফিসকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার্থে ভর্তি করা হয়। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান হাসপাতালে জঙ্গী নাফিসকে দেখতে গিয়ে যেসব মন্তব্য করেছেন তা সচেতন মহলে সমালোচনা সৃষ্টি করেছে। একই মন্তব্যে তিনি জঙ্গী তৎপরতার বিরুদ্ধে কিছু না বলে উল্টো জঙ্গীদের পক্ষালম্বন করেছেন এবং জঙ্গীদের সাফাই গেয়েছেন। শুধু তাই নয়, পুলিশের চেইন অব কমান্ড নিয়েও সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘পুলিশের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বাড়াবাড়ি সাংঘাতিকভাবে বেড়ে গেছে। পুলিশের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, নাগরিকরা যেন দাসে পরিণত হয়েছে।’ গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় পুলিশকে জনগণের রক্ষক ও বন্ধু মনে করা হয়। পুলিশ জঙ্গীদের অবৈধ তৎপরতায় বাধা দিয়েছে এটাই কি তাদের অপরাধ? মানবাধিকার সংগঠনের চেয়ারম্যান জঙ্গী নাফিসের বিরুদ্ধে কিছুই বলেননি। অথচ আহত নাফিসের কাছ থেকে পুলিশ হিযবুত তাহ্্রীর ৬০টি লিফলেট উদ্ধার করেছে। এসব লিফলেট সে মুসল্লিদের মধ্যে বিতরণ করছিল। সোমবার জনকন্ঠে প্রকাশিত ‘জঙ্গীর পক্ষে মিজানের বক্তব্যে ঝড়, প্রশ্ন এখতিয়ার নিয়ে’ শীর্ষক সংবাদে জানা যায় এই নাফিসের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আদাবর থানায় একটি মামলা রয়েছে। সচেতন মহলের প্রশ্নÑ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কোন্ যুক্তিতে জঙ্গী নাফিসকে একজন ‘সাধারণ নাগরিক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন? সবারই প্রত্যাশা দায়িত্ববান কোন ব্যক্তিরই এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া উচিত নয়। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে সাধারণ মানুষ আরও দায়িত্বশীল, যৌক্তিক, গ্রহণযোগ্য বক্তব্য ও অবস্থান আশা করে।
×