ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্দান্ত ছন্দে থেকেও হারের স্বাদ সানচেজের, হতাশ কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গার, সোয়ানসি সিটি ২-১ আর্সেনাল

আর্সেনাল ধরাশায়ী সোয়ানসির কাছে ॥ ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ১১ নভেম্বর ২০১৪

আর্সেনাল ধরাশায়ী সোয়ানসির কাছে ॥ ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ হতশ্রী দশা অব্যাহত আছে আর্সেনালের। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলে হোঁচট খাওয়ার পর এবার ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে হারের স্বাদ পেয়েছে গানার্সরা। রবিবার অনুষ্ঠিত এ্যাওয়ে ম্যাচে এগিয়ে গিয়েও স্বাগতিক সোয়ানসি সিটির কাছে ২-১ গোলে হার মেনেছে আর্সেন ওয়েঙ্গারের দল। অপ্রতিরোধ্য ছন্দ অব্যাহত রেখে ম্যাচে দুর্দান্ত গোল করে আর্সেনালকে এগিয়ে নিয়েছিলেন চিলিয়ান তারকা এ্যালেক্সিস সানচেজ। কিন্তু মাত্র তিন মিনিটের ব্যবধানে মিডফিল্ডার জিলফি সিগার্ডসন ও ফরাসী ফরোয়ার্ড বাফেটিম্বি গোমিসের গোলে মধুর জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সোয়ানসি। পরশুর অন্যান্য ম্যাচে স্টোক সিটি ২-১ গোলে টটেনহ্যাম হটস্পারকে ও নিউক্যাসল ইউনাইটেড ২-০ গোলে পরাজিত করে ওয়েস্টব্রুমউইচকে। সান্ডারল্যান্ড ও এভারটনের মধ্যকার অপর ম্যাচটি অমীমাংসিত থাকে ১-১ গোলে। ইপিএলে মৌসুমে দ্বিতীয় হারের স্বাদ পাওয়া আর্সেনাল পয়েন্ট তালিকার পঞ্চম স্থানে উঠে আসার সুযোগ হারিয়েছে। ১১ ম্যাচ শেষে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে গানার্সদের অবস্থান ষষ্ঠ। সমান ম্যাচে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে সবার শীর্ষে চেলসি। ২৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে সাউদাম্পটন। ২১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি। গত সপ্তাহে ইউরোপসেরার লড়াইয়ে বেলজিয়ামের ক্লাব আন্ডারলেচটের বিরুদ্ধে তিন গোলে এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত ৩-৩ গোলে ড্র করেছিল আর্সেনাল। ওই শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই এবার ইপিএলে হারের জ্বালায় পুড়তে হয়েছে ওয়েঙ্গার বাহিনীকে। লন্ডনের ক্লাবটি চ্যাম্পিয়নন্স লীগে বিদায় নেয়ার শঙ্কায় থাকায় এই ম্যাচে রক্ষণাত্মক পদ্ধতি বেছে নেন কোচ ওয়েঙ্গার। এই বিষয়টিই শেষ পর্যন্ত কাল হয় আর্সেনালের জন্য। ঘরের মাঠ লিবার্টি স্টেডিয়ামে সোয়ানসি অধিনায়ক এ্যাশলে উইলিয়ামস ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে হাঁটুর ইনজুরিতে পড়লে কোচ গ্যারি মোনাকের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়ে। কিন্তু ওয়েলসের এই আন্তর্জাতিক ডিফেন্ডার কিছুক্ষণ পরই খেলার জন্য উঠে দাঁড়ালে স্বাগতিকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। শেষ পর্যন্ত অধিনায়ক মাঠে থাকাটা অনুপ্রাণিত করে সোয়ানসিকে। দারুণ জয়ই এর বড় প্রমাণ। ম্যাচের প্রথম ভাল সুযোগ আসে নবম মিনিটে। আর্সেনালের এ্যালেক্স ওক্সালেড-চেম্বারলেইনের প্রচেষ্টা জেফারসন মনটেরো বক্সের ভেতর থেকে প্রতিহত করেন। এরপর সোয়ানসির সিগার্ডসনের ফ্রিকিক ক্যালুম চেম্বার্স হেড করে বাইরে পাঠিয়ে দেন। এরপর থেকেই যেন আর্সেনাল ম্যাচে গতি হারিয়ে ফেলে। এই সুযোগে বলের পজিশন নিজেদের করে নেয় সোয়ানসি। ম্যাচের ২২ মিনিটে বক্সের ভেতর উইলফ্রিড বনিকে চেম্বার্স ধাক্কা দেয়ার অপরাধে স্বাগতিকদের পেনাল্টির আবেদন নাকচ করে দেন রেফারি ফির ডোড। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে কিছুটা গা-ঝাড়া দেন সানচেজ, ওয়েলব্যাকরা। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বিরতির পরও অবশ্য সোয়ানসির দুর্গে বেশ কয়েকটি আক্রমণ চালান আর্সেন ওয়েঙ্গারের শিষ্যরা। তবে আবারও সেই সানচেজ, ওক্সালেড-চেম্বারলেইনদের ব্যর্থতায় এগিয়ে যাওয়া হয়নি। ম্যাচের ৬৩ মিনিটে অবশেষে কাক্সিক্ষত গোল পায় অতিথিরা। অক্সালেড-চেম্বারলেইন ও কাজোরলা সোয়ানসি রক্ষণভাগ ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়লে ওয়েলব্যাক বল পেয়ে সানচেজের দিকে বাড়িয়ে দেন। পোস্টের খুব কাছে থেকে ফ্যাবিয়ানাস্কিকে পরাস্ত করে আর্সেনালকে এগিয়ে নেন সানচেজ। এটি সাবেক বার্সিলোনা তারকার সর্বশেষ চার ম্যাচে ষষ্ঠ গোল। এরপরই চমক দেখায় স্বাগতিকরা। ম্যাচের ৭৫ মিনিটে সিগার্ডসনের অবিশ্বাস্য গোলে সমতা ফেরায় সোয়ানসি। প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে ফ্রিকিক থেকে গোলরক্ষক সিজিনসিকে পরাস্ত করেন সিগার্ডসন। তিন মিনিট পর মোনটেরোর অসাধারণ ক্রস থেকে বদলি খেলোয়াড় গোমিস লাফিয়ে উঠে দুর্দান্ত হেডে গোল করে সোয়ানসিকে অসাধারণ জয় পাইয়ে দেন। ম্যাচ শেষে আর্সেনাল কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গার বলেন, এই হার অত্যন্ত হতাশাজনক। ১-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর এভাবে হার মেনে নেয়া যায় না। সোয়ানসি কোচ গ্যারি মোঙ্ক বলেন, ছেলেদের বিশ্বাস ছিল ভাল ফলাফল করা সম্ভব। এটা সত্যি হয়েছে। সিগার্ডসনের গোলটি অসাধারণ।
×