ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঢাবির কার্জন হল এলাকায় হামলার ঘটনায় শহীদ মিনারে পাল্টাপাল্টি সভা

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ১১ নভেম্বর ২০১৪

ঢাবির কার্জন হল এলাকায় হামলার ঘটনায় শহীদ মিনারে পাল্টাপাল্টি সভা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল এলাকায় আলোকচিত্রী ইমতিয়াজ বেগ ও তার দুই ভাগ্নির ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দুইটি পক্ষের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ হয়েছে। সোমবার বিকাল সাড়ে তিনটায় সময় শহীদ মিনারের একদিকে ‘সন্ত্রাসীদের কবল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঁচাও’ ব্যানারে পূর্বঘোষিত প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু করে ‘ব্রতী’ নামের একটি সংগঠন। এর ঠিক বিপরীত পাশে শহীদ মিনারের মূল বেদীতে উঠার সিঁড়ির উপর দাঁড়িয়ে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অশ্লীলতা এবং বহিরাগতদের উৎপাত বন্ধ কর’ ব্যানারে সমাবেশ শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের প্রায় দেড় শতাধিক ছাত্র। তারা ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বহিরাগতদের হাত থেকে বাঁচাও’,‘অন্যায় সহ্য করা হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। এদিকে ব্রতীর মানববন্ধনেও উপস্থিত বক্তারা বক্তব্য দিতে থাকেন। চলে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য। এক পর্যায়ে দুই পক্ষই এক সঙ্গে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া শুরু করে। ফলে দুই মানববন্ধনের মাইক্রোফোনের আওয়াজে পুরো শহীদ মিনার এলাকায় হট্টগোল সৃষ্টি হয়। এ সময় অসংখ্য পুলিশ সদস্য দুই পক্ষকে ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সমাবেশে ‘অশ্লীলতা এবং বহিরাগতদের উৎপাত বন্ধ’ করার দাবি জানিয়ে ছাত্ররা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিদিন অসংখ্য বহিরাগত প্রবেশ করে এবং এরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় অসামাজিক কার্যকলাপ করে থাকে। আলোকচিত্রী ইমতিয়াজ বেগের ওপর হামলার ঘটনা সম্পর্কে তারা জানান, গণমাধ্যমে ওই ঘটনার একদিকের বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে। ছাত্রদের বক্তব্য কেউ তুলে ধরেননি। এতে ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা হয়েছে। এক পর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে সমাবেশস্থলে উপস্থিত বিজ্ঞ আইনজীবী ড. কামাল উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘ওরা কারা। তাদের নাম-পরিচয় দিন। শহীদ মিনার কি কারো বাপের সম্পত্তি। অনুমতি না থাকলে তারা কিভাবে আসলো। আমরা কি এ জন্যই সংগ্রাম করে শহীদ মিনার অর্জন করেছি। জড়িত ওই চার ছাত্রকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার, ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি ॥ এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চিহ্নিত চারজনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর সাংবাদিকদের জানান, এই ধরনের ঘটনা ঘটলে আমরা অভিযোগ ও আলামতের ভিত্তিতে জড়িতদের সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে থাকি। পরে তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে যদি অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয় তাহলে শাস্তি বৃদ্ধি করা হবে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে সমালোচনার ঝড়, দুইপক্ষের কাদা ছোড়াছুড়ি ॥ এদিকে এই ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হবার পর এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। কেউ কেউ এই ঘটনাকে ‘তুচ্ছ’ ঘটনা ‘বিচ্ছিন্ন’ ঘটনা বলে স্ট্যাটাস-কমেন্ট করতে থাকেন। কেউ কেউ এই ঘটনার সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের জড়িয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য ও মতামত ব্যক্ত করেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বক্তব্য ॥ পাল্টাপাল্টি সমাবেশের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক এম আমজাদ আলী বলেন, ব্রতী নামের সংগঠনটি সমাবেশ করার অনুমতি নিলেও তারা ভিন্ন ব্যানারে একাধিক সংগঠন মানববন্ধনে উপস্থিত হয়। যে কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে মানববন্ধন করে।
×