ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জামায়াতের অস্ত্র সংগ্রহের ক্লু খোঁজা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ১১ নভেম্বর ২০১৪

জামায়াতের অস্ত্র সংগ্রহের ক্লু খোঁজা হচ্ছে

রফিকুল ইসলাম আধার, শেরপুর ॥ যুদ্ধাপরাধের মামলায় চূড়ান্ত বিচারে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের আলবদর প্রধান, জামায়াতের সিনিয়র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরের শেষ মুহূর্তে তার নিজ এলাকা শেরপুরে জামায়াত-শিবিরের জঙ্গী নাশকতার আশঙ্কায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায়। ১০ নবেম্বর সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষ রজনীগন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় ওই অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। এছাড়া সোহাগপুর বিধবাপল্লীসহ রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের নিরাপত্তায় গণসচেতনতা গড়ে তুলতে পুলিশের তরফ থেকে ‘ওপেন হাউস ডে’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতার পরও জামায়াত-শিবির চক্রের অস্তিত্ব জানান দেয়ার চেষ্টা থেমে নেই। রবিবার রাতে কামারুজ্জামানের মুক্তির দাবিতে শহরে ঝটিকা মিছিল ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানোর পর বিপুল পরিমাণ জিহাদী বইসহ গ্রেফতার হয়েছে নাহিদ হোসেন (১৮) নামে এক শিবির নেতা। অন্যদিকে শেরপুর সীমান্তে উলফা-জামায়াত গোপন বৈঠক ও উলফার কাছ থেকে জামায়াতের অস্ত্র সংগ্রহের ক্লু খুঁজতে তৎপর হয়ে এলাকা চষে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন বিভাগের গোয়েন্দারা। নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার অঙ্গীকার ॥ যুদ্ধাপরাধের মামলায় কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরকে সামনে রেখে সোমবার দুপুরে জেলা পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় কামারুজ্জামানের মামলার বিধবাপল্লীতে অবস্থানরত রাষ্ট্রপক্ষের ৪ সাক্ষীসহ শেরপুরের ৯ জন সাক্ষীর নিরাপত্তাসহ ওই মামলার সঙ্গে জড়িত বিশিষ্ট ব্যক্তি, আওয়ামী লীগ নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, মুক্তিযোদ্ধা ও প্রগতিশীল সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। এ জন্য পুলিশ-র‌্যাব ও বিজিবিসহ অন্যান্য সংস্থার সদস্যদের সমন্বয়ে ব্যাপক নজরদারি, টহল ও তল্লাশি পরিচালনার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকজনসহ সচেতন নাগরিকদের সতর্কতা বৃদ্ধিসহ ব্যাপক জনসচেতনতা গড়ে তুলতেও তাগিদ দেয়া হয়। প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ জনগণের সমন্বয়ে নিñিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। সভায় সরকারদলীয় হুইপ আতিউর রহমান আতিক এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, যুদ্ধাপরাধের মামলায় কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরের মুহূর্তে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি বা নাশকতারোধে শেরপুরে আইনশৃঙ্খলার সঙ্গে সম্পৃক্ত সকল বিভাগকে শতভাগ সতর্কাবস্থায় থাকতে হবে। এ জন্য জনপ্রতিনিধিসহ সকল দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান ও সচেতন নাগরিকসহ ব্যাপক জনসচেতনতার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি। বিধবাপল্লীর নিরাপত্তায় ওপেন হাউস ডে ॥ সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ী উপজেলার সোহাগপুর বিধবাপল্লীর নিরাপত্তায় অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের পর এবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, জনগণ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দ-প্রাপ্ত জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের মামলার রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের নিয়ে ‘ওপেন হাউস ডে’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে উপজেলার কাকরকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত ওই ‘ওপেন হাউস ডে’ তে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহিবুল ইসলাম খান। নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম আমিনুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শহীদ উল্লাহ তালুকদার মুকুলসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। জিহাদী বইসহ শিবির নেতা গ্রেফতার ॥ পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতার পরও শেরপুরে ঘাপটি মেরে থাকা জামায়াত-শিবির চক্র মাঝে-মধ্যেই দুই-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে তাদের অস্তিত্ব জানান দেয়ার চেষ্টা ঠিকই চালিয়ে যাচ্ছে। তারা মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে শেরপুর শহরে ঝটিকা মিছিল, গাড়ি ভাংচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের মতো ৩টি ঘটনা ঘটিয়েছে। জামায়াতের অস্ত্র ক্রয়ের ক্লু খুঁজছে গোয়েন্দারা ॥ সোহাগপুর বিধবাপল্লীর অদূরে মধুটিলা ইকোপার্কে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফা ও জামায়াতের মধ্যকার গোপন বৈঠক এবং উলফার কাছ থেকে জামায়াতের অস্ত্র ক্রয়ের ক্লু খুঁজছে পুলিশ-র‌্যাবসহ আরও একাধিক প্রতিষ্ঠানের গোয়েন্দারা।
×