ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে মংলা ইপিজেড

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১০ নভেম্বর ২০১৪

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে মংলা ইপিজেড

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ মংলা রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (মংলা ইপিজেড) ঘুরে দাঁড়াতে শুরু“ করেছে। এখানে দেশী-বিদেশী ১৭টি শিল্প প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে রয়েছে। আরও ১২টি কারখানা বাস্তবায়নের কাজ চলছে। গত জুন মাস পর্যন্ত মংলা ইপিজেডে উৎপাদিত পণ্য রফতানি হয়েছে ২৮০ দশমিক ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে মংলা বন্দর সংলগ্ন এলাকায় মংলা ইপিজেডের যাত্রা শুরু“। ২৫৫ দশমিক ৪১ একর জমির ওপর এই ইপিজেড স্থাপিত। বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনামলে মংলা ইপিজেড চরম অবহেলার শিকার হয়। সরকারী নজরদারির অভাব, সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়াসহ নানা কারণে শিল্পোদ্যোক্তারা এখানে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাননি। ওই সময়কালে নতুন এই ইপিজেডের কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়ে। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় এসে মংলা বন্দরের আধুনিকায়ন, ইপিজেডকে কার্যকর করার জন্য নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তারই ধারাবাহিকতায় সন্ত্রাস দমন ও মংলা বন্দরের ড্রেজিংসহ অনেক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। ডুবতে বসা মংলা বন্দর গতিশীল ও লাভজনক হয়েছে। শিল্পোদ্যোক্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করাসহ সরকার ও কর্তৃপক্ষের নেয়া নানা পদক্ষেপে মংলা ইপিজেড ঘুরে দাঁড়াতে শুরু“ করেছে। নতুন নতুন শিল্প-কারখানা গড়ে উঠছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মংলা ইপিজেডের মোট ১৯০টি শিল্প প্লটের মধ্যে ১৫৫টি ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বরাদ্দকৃত প্লটে দেশী-বিদেশী ১৭টি শিল্প প্রতিষ্ঠানে পণ্য উৎপাদন হচ্ছে। বাকি ১২টি বাস্তবায়নের কাজ চলছে। ৩৫টি প্লট বরাদ্দের অপেক্ষায় রয়েছে। চালু ১৭টি কারখানার মধ্যে ৮টি সম্পূর্ণ বিদেশী মালিকানাধীন (‘এ’ টাইপ), ৪টি যৌথ মালিকানধীন (‘বি’ টাইপ)। এ ছাড়াও সম্পূর্ণ দেশীয় মালিকানাধীন (‘সি’ টাইপ) প্রতিষ্ঠান আছে ৫টি। ‘এ’ টাইপ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ভারতের ২টি কোম্পানি এগ্রো প্রোডাক্টস এবং সিগারেট ও সিগার; চীনের ৩টি কোম্পানি এগ্রো প্রোডাক্টস, বিভিন্ন মেশিনের রাবার শিট, রাবার পার্টস এবং ম্যানিকুইন হেড, উইগ প্রভৃতি; চীন-যুক্তরাজ্য যৌথ মালিকানার একটি কোম্পানি সোয়েটার; ভারত-যুক্তরাজ্য যৌথ মালিকানার একটি কোম্পানি লাগেজ ও ব্যাগ এবং ভারত-থাইল্যান্ড যৌথ মালিকানার একটি কোম্পানি এগ্রো প্রোডাক্টস উৎপাদন করে। ‘বি’ টাইপ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত ৩টি কোম্পানি এগ্রো প্রোডাক্টস এবং বাংলাদেশ-ইতালি মালিকানাধীন একটি কোম্পানি ইলেকট্রনিকস ও ইলেকট্রিক্যাল সামগ্রী প্রস্তুত করে। ৫টি বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২টি গার্মেন্টস এক্সেসরিজ ও ৩টি এগ্রো প্রোডাক্টস উৎপাদন করে। গত জুন মাস পর্যন্ত মংলা ইপিজেডে বিনিয়োগ হয়েছে ১৩ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ সময় ২৮০ দশমিক ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পণ্য রফতানি হয়েছে। কর্মসংস্থান হয়েছে ১৪১৬ জন দেশী ও ৯ জন বিদেশী নাগরিকের। সূত্র জানায়, বর্তমানে মংলা ইপিজেডে ৪৭টি প্লটে বাস্তবায়নধীন ১২টি কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় ইলেক¿নিকস ও ইলেকট্রিক্যাল সামগ্রী প্রস্তুত করবে জাপানী ২টি ও চীন-বাংলাদেশ যৌথ একটি কোম্পানি। শতভাগ বাংলাদেশী ৬টি কোম্পানি পেপার প্রোডাক্টস, এগ্রো প্রোডাক্টস, গার্মেন্টস, নিটিং ও অন্যান্য টেক্সটাইল এবং ধাতব সামগ্রী প্রস্তুত করবে। পাটের সুতা, কাপড়, ব্যাগ প্রভৃতি সামগ্রী প্রস্তুত করবে চীন-থাইল্যান্ড যৌথ মালিকানার একটি কোম্পানি। নেদারল্যান্ডস-বাংলাদেশ যৌথ মালিকানার একটি কোম্পানি মাটির টেরাকোটা টাইলস প্রস্তুত করবে এবং টুথব্রাশ ও বলপেন প্রস্তুত করবে চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশ যৌথ মালিকানার একটি কোম্পানি। এসব কারখানা চালু হলে কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
×