ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সুয়ারেজের নৈপুণ্যে বার্সিলোনার রক্ষা, ইনজুরি কাটিয়ে ফিরেই বেলের গোল, টানা ১ ম্যাচে গোল রোনাল্ডোর, রিয়াল মাদ্রিদ ৫-১ রায়ো ভায়োকানো, বার্সিলোনা ২-১ আলমেরিয়া

আবারও তারা ঝলমলে জয় রিয়ালের

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১০ নভেম্বর ২০১৪

আবারও তারা ঝলমলে জয় রিয়ালের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ তারা ঝলমলে জয় অব্যাহত আছে রিয়াল মাদ্রিদের। শনিবার স্প্যানিশ লা লিগায় আবারও গোলবন্যায় মেতে ওঠেন দলটির তারকা ফুটবলাররা। ঘরের মাঠ সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়াল ৫-১ গোলে হারায় অতিথি রায়ো ভায়োকানোকে। গ্যালাক্টিকোদের হয়ে গোলগুলো করেন ইনজুরি থেকে ফেরা গ্যারেথ বেল, সার্জিও রামোস, টনি ক্রুস, করিম বেনজেমা ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। বিস্ফোরক ফর্মে থাকা সি আর সেভেন এ নিয়ে লা লিগার চলতি মৌসুমে ১৮ গোল করলেন। এর মধ্যে টানা ১০ ম্যাচে গোল পেয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে চলমান মৌসুমে এখন পর্যন্ত রোনাল্ডোর গোল ২৩টি। টানা দুই ম্যাচ হারের পর আবারও হারের শঙ্কায় পড়েছিল বার্সিলোনা। এ্যাওয়ে ম্যাচে স্বাগিতক আলমেরিয়ার বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলের ইজ্জত রক্ষা করা জয় পেয়েছে কাতালানরা। প্রথমার্ধে থিয়েভি বিফুমার গোলে এগিয়ে গিয়েছিল আলমেরিয়া। এই গোলেই জয়ের স্বপ্ন দেখছিল দলটি। কিন্তু বিরতির পর বদলি লুইস সুয়ারেজের কল্যাণে কোন রকমে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লুইস এনরিকের দল। বার্সার হয়ে নেইমার ও জর্ডি এ্যালবার করা দুটি গোলই দুর্দান্ত দক্ষতায় বানিয়ে দেন উরুগুইয়ান তারকা। টানা অষ্টম জয়ের মধ্য দিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে রিয়াল মাদ্রিদ। ১১ ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে কার্লো আনচেলোত্তির দল। সমান ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয়স্থানে বার্সিলোনা। ম্যাচের শুরু থেকেই ভায়োকানের সীমানায় আক্রমণের ঢেউ বইয়ে দিতে থাকেন রিয়ালের তারকারা। দ্বিতীয় মিনিটেই সুযোগ পেয়েছিলেন রোনাল্ডো। কিন্তু তাঁর শট রুখে দেন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক। নবম মিনিটেই এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। চোট কাটিয়ে ফিরে গোল করেন ওয়েলস তারকা গ্যারেথ বেল। ৪০ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন রামোস। জেমস রড্রিগুয়েজের কর্নার কিক থেকে পা ছুঁয়ে বল জালে জড়ান গত মৌসুমে লা লিগার সেরা এই ডিফেন্ডার। ৪৪ মিনিটে ফিরতি এক গোলে রিয়ালকে একটু অস্বস্তিতে ফেলেছিলে ভায়োকানোর বুয়েনো। ২-১ গোলে প্রথমার্ধের খেলা শেষ হয়। বিরতির পর ৫৫ মিনিটে ব্যবধান ৩-১ করে রিয়াল। রোনাল্ডোর ব্যাক পাস থেকে পাওয়া বলে দূরপাল্লার শটে গোল করেন জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী মিডফিল্ডার টনি ক্রুস। ৫৯ মিনিটে বেনজেমার গোলে ব্যবধান ৪-১ করে রিয়াল। এবারও রোনাল্ডোর বাড়ানো শটে পা ছুঁয়ে গোল করেন ফরাসী তারকা। ম্যাচের ৮৩ মিনিটে নিজেই গোল করেন রোনাল্ডো। স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ইস্কোর বাড়ানো বল পেয়ে জাল খুঁজে পান বর্তমান ফিফা সেরা ফুটবলার। দুই তারকা ফুটবলার লুইস সুয়ারেজ ও নেইমারকে ছাড়াই আলমেরিয়ার বিরুদ্ধে খেলতে নামে বার্সিলোনা। যে কারণে শুরু থেকে মেসির সঙ্গে আক্রমণে ছিলেন তরুণ মুনির আল হাত্তাদি ও পেড্রো। কিন্তু মেসিসহ কেউই তেমন প্রভাব ফেলতে পারছিলেন না। ২৮তম মিনিটে ম্যাচের সহজতম সুযোগটি নষ্ট করেন মেসি। মুনিরের ক্রসে রাকিটিচের হেড ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক। তবে বল এসে পড়ে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা মেসির কাছে। ফাঁকা গোলপোস্টের মাত্র ছয় গজ দূর থেকে মেসির হেড ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। ৩৭ মিনিটে মেসির ভুলে এগিয়ে যায় আলমেরিয়া। প্রতিপক্ষের সীমানায় বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেয়েছিলেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। কিন্তু তার কাছে থেকে বল ছিনিয়ে নিয়েই পাল্টা আক্রমণে যায় স্বাগতিকরা। বল নিয়ে অনেকটা দৌড়ে দু’জন ডিফেন্ডারকে ডজ দিয়ে বাঁপ্রান্ত দিয়ে গোলরক্ষক ক্লাওডিও ব্রাভোকে বোকা বানিয়ে গোল করেন থিয়েভি বিফুমা। পিছিয়ে পড়ার পর দুই তারকাকে বেঞ্চে বসিয়ে রাখেননি বার্সা কোচ লুইস এনরিকে। বিরতির পর শুরু থেকেই মেসির সঙ্গে যোগ দেন নেইমার ও সুয়ারেজ। এ দু’জনই ম্যাচে ফেরান বার্সাকে। ৬১ মিনিটে আবারও ক্রসবার গোলবঞ্চিত করে বার্সিলোনাকে। এবার কর্নার থেকে বল পেয়ে জোরালো ভলি করেছিলেন সুয়ারেজ। ৭৩ মিনিটে নেইমারের গোলে সমতা ফেরায় বার্সা। এই গোলের পুরো কৃতিত্ব সুয়ারেজের। ডি বক্সের ভেতর পায়ের জাদুতে এক ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে তিনি বল বাড়ান ব্রাজিল তারকার দিকে। চলতি বলে দারুণ দক্ষতায় গোল করেন ব্রাজিল অধিনায়ক। ৭৯ মিনিটে আবারও গোলপোস্ট বাঁচিয়ে দেয় আলমেরিয়াকে। এবার সুয়ারেজ গোলের দিকে পেছন ফিরে বলটা উঠিয়ে দিয়েছিলেন মেসির মাথায়। কিন্তু ম্যাচে দ্বিতীয়বারের মতো তার হেড লাগে ক্রসবারে। ফলে লা লিগার সর্বোচ্চ গোলদাতা এই ম্যাচেও হতে পারেননি আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। ৮২ মিনিটে স্বস্তির গোল পায় কাতালানরা। এবারও সুয়ারেজ জাদু। ডি বক্সের ভেতর থেকে তার নিখুঁত ক্রসে কোনমতে পা লাগিয়ে গোলটি করেন এ্যালবা (২-১)।
×