ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

একুশ শতক ॥ গণমাধ্যম নীতিমালার ঠিকানা

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ৯ নভেম্বর ২০১৪

একুশ শতক ॥ গণমাধ্যম নীতিমালার ঠিকানা

এখনও সুযোগ পেলেই জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকে। নবেম্বরের প্রথম সপ্তাহেও দৈনিক প্রথম আলোতে প্রখ্যাত সাংবাদিক মাহফুজ আনাম এই বিষয়ে একটি নিবন্ধ লিখেছেন। আলোচনাটি বিস্তারিতই। আমরা সেটি নিয়ে আলোচনা করব না- তবে সামগ্রিকভাবে গণমাধ্যমের জন্য যে নীতিমালার প্রয়োজন সেটি নিয়ে কথা বলব। ক’দিন আগেও বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনের সবচেয়ে বড় সমস্যাটি জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল। গণমাধ্যম তো বটেই রাজনৈতিক কর্মসূচীরও কেন্দ্রবিন্দু ছিল এটি। প্রণয়নের সময় আমরা এটি ভাবতে পারিনি যে, এমন একটি নীতিমালা এত বড় একটি ইস্যুতে পরিণত হবে। বোঝা যায়, এদেশে কখন যে কোনটা বড় ইস্যু হবে সেটি কেউ আগে থেকে আন্দাজ করতে পারে না। এই নীতিমালার প্রণেতারা যে পারেননি (এদের মাঝে আমিও আছি) সেটি আমি নিশ্চিত করেই বলতে পারি। এই নীতিমালাটিকে সাংবাদিক নেতারাই সবচেয়ে বেশি সমালোচনা করেন, অথচ সাংবাদিক নেতাদের দাবির প্রেক্ষিতেই তাদেরকে সঙ্গে নিয়েই সরকার একটি কমিটি গঠন করে নীতিমালার খসড়া প্রণয়ন করে। কার্যত নীতিমালাটি বিদ্যমান অবস্থা থেকে উত্তরণের একটি দিক নির্দেশনা মাত্র। আমি যখন এই নিবন্ধটি লিখছি তখন সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় সম্প্রচার কমিশন ও আইন প্রণয়নের জন্য একটি লম্বা কমিটি গঠন করার কাজ করছে। ২০১৪ সালের আগস্টের ৬ তারিখে প্রজ্ঞাপন জারি করার আগে মন্ত্রিসভা খসড়া অনুমোদনের পর থেকেই জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা নিয়ে পর্যাপ্ত আলোচনা হয়েছে। প্রজ্ঞাপন জারির পরও সেই আলোচনা অব্যাহত ছিল। সর্বশেষ গত ২৪ আগস্ট ১৪ ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে আর্টিক্যাল ১৯ সহ বেশ কয়েকটি সংগঠন মিলে একটি গোল টেবিল বেঠকের আয়োজন করে যেখান থেকে একটি অভিন্ন গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়নের দাবি ওঠে। আমি দাবিটি উত্থাপন করার পর বিএফইউজে নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল এবং ড. গোলাম রহমান এই দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান। এরপর দেশ টিভিতে আমি একই দাবির পুনরুল্লেখ করি। তখনও আলোচকগণ আমার সঙ্গে একমত পোষণ করেন। তারপর বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটে এক সেমিনারে আমি একই বিষয়ে একটি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করি যাতে সকল গণমাধ্যমের জন্য একটি নীতিমালা, একটি কমিশন ও একটি ওয়েজবোর্ড গঠনের প্রস্তাব করা হয়। এই নিবন্ধেও সেই কথাটিই আমি বলার চেষ্টা করেছি। সেই আলোচনায় যাবার আগে আমরা সম্প্রচার নীতিমালা নিয়ে কয়েকটা কথা বলতে চাই। এটি মনে রাখা প্রয়োজন যে, সম্প্রচার নীতিমালাটি নিয়ে বিতর্কের অবসান এখনও হয়নি। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি ২০ দলীয় রাজনৈতিক জোট সম্প্রচার নীতিমালার বিরুদ্ধে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করেছে। নীতিমালার কপি পোড়ানো থেকে শুরু করে এর বাক্য-শব্দ চুলচেরা ময়নাতদন্ত অব্যাহতই আছে। বিশেষ করে টিভি চ্যানেলগুলোর গরম অবস্থা চরম পর্যায়েই ছিল। আমার জানা মতে মিডিয়া তো বটেই অন্য কোন নীতিমালা নিয়ে এমন ব্যাপক আলোচনা কমই হয়েছে। তবে আমার কাছে পুরো বিষয়টিই কেমন যেন তালগোল পাকানো মনে হয়েছে। যারা সমাবেশ করেছেন বা নীতিমালার কপি পুড়িয়েছেন তারা না হয় রাজনৈতিক কারণেই সেটি করেছেন। দেশের বিরোধীদলীয় রাজনীতির দেউলিয়াত্ব তাতে প্রতিভাত হয়। তাদের পক্ষের বুদ্ধিজীবীরা একে বাকশালী আলামত, সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ, গণতন্ত্রের অবসান, মৌলিক অধিকারের হরণ, তথ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার অপপ্রয়াস এসব তকমা দিয়েছেন। কিন্তু যারা এই নীতিমালার কমিটিতে ছিলেন তারা যে কি কারণে এর সমালোচনায় মুখর হলেন সেটি আমি বুঝিনি। কমিটির সভায় বসে একমত হয়ে টিভির পর্দায় বা সেমিনারে ভিন্নমত পোষণ করাটা দ্বিমুখী নীতির প্রতিফলন। আমার কাছে আরও বিস্ময়কর লেগেছে যে, নীতিমালায় সম্প্রচার মাধ্যমকে গলা টিপে হত্যা করা হবে বলে অভিযোগ করা হলেও এটি আসলে আইন নয়, এতে কোন শাস্তির ব্যবস্থা নেই বা এটি মোটেই বাধ্যতামূলক কোন বিধান নয়। তথ্যমন্ত্রীর আশ্বাস ছাড়াও এটি সর্বজনবিদিত যে নীতিমালা দিয়ে কারও বিচার বা শাস্তি কখনও হয় না। এই নীতিমালার প্রধানতম অর্জন হচ্ছে একটি কমিশন গঠন করে সরকারের খবরদারির কিছুটা দায় তার ওপর ন্যস্ত করা যেখানে সাধারণ মানুষ, সম্প্রচার কর্তৃপক্ষ ও সরকার সকলেরই প্রবেশাধিকার থাকবে। সরকার যদি এই কাঠামোটি সঠিকভাবে গড়ে তুলে তবে গণমাধ্যমের জন্য একটি বড় ধরনের অর্জন হতে পারে। একই সঙ্গে যদি একটি কার্যকর আইনের কথাও ভাবা হয় তবে অনেক শূন্যস্থান পূরণ হয়ে যাবে। তবে বিরাজমান অনেক আইন ও বিধিবিধান গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য বিরাট প্রশ্নবোধক চিহ্ন হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। সেগুলো নিয়েও ভাবতে হবে। এটি বিস্ময়ের ব্যাপার যে, সম্প্রচার নীতিমালা নিয়ে তারস্বরে চিৎকার করা হলেও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার অন্তরায় হিসেবে প্রমাণিত আইন ১৯৭৩ সালের প্রেস এ্যান্ড পাবলিকেশন্স আইন, ৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন বা আইসিটি আইন ২০০৬ (২০১৩ সালে সংশোধিত) নিয়ে কেউ একটি শব্দও করেননি। অথচ মিডিয়ার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে এই আইনগুলো। যে সব শব্দ যেমন ‘বন্ধু দেশসমূহের সম্পর্ক নষ্ট’ করা বা ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতার’ সংজ্ঞা নিয়ে যারা বিভ্রান্ত তারাও এটি বুঝেননি যে, সম্প্রচার নীতিমালার আগের অনেক আইনে এসব শব্দ সংজ্ঞাহীনভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। এমনকি সংবিধানেও এইসব শব্দ আছে। স্বাধীনতার পর থেকেই এইসব শব্দ ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সরকার যখন প্রয়োজন হয়েছে তখন এইসব শব্দকে তার মতো করে ব্যাখ্যা করে আইনী ব্যবস্থাও নিয়েছে। অথচ এসবের বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বলছেন না। এতে এটি প্রতীয়মান হয় যে, সম্প্রচার নীতিমালার সমালোচনা বস্তুত একটি রাজনৈতিক কর্মকা-। আমি খুব অবাক হয়েছি যে, সম্প্রচার নীতিমালার কথা বলতে গিয়ে কেউ একজন এসব আইন বাতিল, সংশোধন নিয়ে কোন বাক্যই উচ্চারণ করেননি। মাহফুজ আনাম সাহেবও সেদিকে তাকাননি। (দৈনিক প্রথম আলো, ৭ নবেম্বর ১৪-ক্রোড়পত্র, পৃষ্ঠা-৩)। আনাম সাহেব বিজ্ঞাপন সম্পর্কে বলেছেন যে, আমাদের টিভিতে নাকি কোন খারাপ বিজ্ঞাপন দেখানো হয় না। আমার ধারণা তিনি বাংলাদেশের টিভি দেখেন না। যদি দেখতেন তবে এটি তাকে অবাক করত যে টিভিতে রতœ-পাথর-মোটা-তাজা-দেওয়ানবাগীসহ অর্থহীন, কুৎসিত ও কুরুচিপূর্ণ বিজ্ঞাপন ইচ্ছেমতো প্রচার করা হয় যা অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। এবার আসল কথায় আসা যাক। যদিও আমি একই সঙ্গে জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা এবং অনলাইন নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির সদস্য তথাপি আমি মনে করি প্রকৃতপক্ষে আজকের দিনে সম্প্রচার নীতিমালা বা অনলাইন নীতিমালা কিংবা সংবাদপত্র নীতিমালা নামে আলাদা আলাদা কয়েকটি (অন্তত তিনটি) নীতিমালা প্রণয়ন করার কোন যৌক্তিক কারণ নেই। আজকের দিনে কাগজ, টিভি বা অনলাইন পোর্টাল বলতে আলাদা আলাদা কিছু নেই। এখন পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ থাকে। সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানের থাকে ওয়েবসাইট। অনলাইন তো সংবাদপত্র আর সম্প্রচারের সম্মিলিত রূপ। অন্যদিকে আইপিটিভি-আইপিরেডিও জাতীয় প্রযুক্তির ফলে মোবাইল ফোন থেকে সিনেমা হল পর্যন্ত ডিজিটাল প্রযুক্তির যে দাপট তাতে কোনটাকে কোনটা থেকে আলাদা করা যাবে তা বলা কঠিন। এখন ইচ্ছে করলে যে কেউ সরকারের সম্প্রচারের লাইসেন্স ছাড়া ইন্টারনেট প্রটোকলকে ব্যবহার করে রেডিও বা টিভি সম্প্রচার করতে পারেন। বস্তুত এটি বৈধ না অবৈধ সেটিও কোন আইনে স্পষ্ট করে বলা নেই। কোন নীতিমালায় এর উল্লেখও নেই। ফলে কোন একটি অনলাইন গণমাধ্যম একই সঙ্গে একটি কাগজের পত্রিকা, বেতার ও টেলিভিশনের সম্মিলিত প্রকাশনা ও প্রচারের কাজ করে যেতে পারে। ভাবতে হবে যে, সেই গণমাধ্যমটির জন্য কোন নীতিমালা প্রযোজ্য হবে? অন্যদিকে মিডিয়াতো কেবল কাগজ, টেলিভিশন, বেতার বা পোর্টালের মাঝে সীমিত নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বড় ধরনের মিডিয়ায় পরিণত হয়েছে। ব্লগ নামক ইন্টারনেটভিত্তিক একটি কর্মকা- অন্য অনেক মাধ্যমের চাইতে শক্তিশালী মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। আমরা যদি গণজাগরণ মঞ্চের উদ্ভব ও বিকাশের দিকে তাকাই তবে অনলাইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ব্লগের ক্ষমতার বিষয়টি আঁচ করতে পারব। অন্যদিকে বাঁশের কেল্লা, রামুর ঘটনা ইত্যাদি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় যে তথ্যপ্রযুক্তি কতটা শক্তিশালী মিডিয়ার জন্ম দিয়ে চলেছে। আমরা হয়ত এখনও আন্দাজই করতে পারছি না যে, ইন্টারনেট দুনিয়াটাকে কতটা কেমন বদলে দিচ্ছে। ফলে একদিকে মিডিয়া বা গণমাধ্যমের সংজ্ঞা যেমন বদলাতে হবে তেমনি সনাতনী মানসিকতাকেও পাল্টাতে হবে। ডিজিটাল যুগের উপযুক্ত মানসিকতা ছাড়া এই যুগের কিছুই সামনে নেয়া যাবে না। সেই কারণেই বহুদিন ধরেই আমি একটি জাতীয় গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়নের কথা বলে আসছি। আমি আবার বলতে চাই যে, সম্প্রচার ও অনলাইন এই দুটি নীতিমালা প্রণয়ন করার কমিটিতেই আমি যুক্ত-তবুও আমি সম্পূর্ণভাবে অভিন্ন গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়নের পক্ষে। একই সঙ্গে আমি এটি মনে করি যে, প্রচলিত পত্রিকার ডিক্লারেশন পদ্ধতি, প্রেসের ডিক্লারেশন, টিভি- বেতারের লাইসেন্স, অনলাইন পোর্টালের লাইসেন্স, আইপিটিভি-আইপিরেডিও, কমিউনিটি রেডিও, ব্লগ বা অন্যসব ডিজিটাল মাধ্যমের অনুমতি দেবার জন্য একটি নীতিমালা ও একটি কর্তৃপক্ষ থাকা উচিত। এখন ডিসি সাহেবরা কেন পত্রিকার ডিক্লারেশন দেবেন সেটি আমি বুঝি না। ইংরেজ আমলে ব্রিটিশরা তাদের শাসন পাকাপোক্ত করে প্রকাশ মাধ্যমকে শৃঙ্খলিত করার জন্য যে ব্যবস্থা চালু করেছিল, সেটি পাকিস্তানও অব্যাহত রাখে। কিন্তু একই ব্যবস্থা এখনও কেন চালু রাখতে হবে সেটি আমি বুঝি না। ডিসিদের সঙ্গে পত্রিকার ডিক্লারেশন কিভাবে যুক্ত সেটি বুঝতে অক্ষম। একই সঙ্গে তারা ছাপাখানার ডিক্লারেশন কেন দেবেন তাও আমি জানি না। এখন কি আমাদের বোঝা উচিত নয় যে, প্রযুক্তি ছাপাখানাকে এখন আর সিসার হেরফের ছাচে রেখে দেয়নি। বরং এখন আমাকে ছাপাখানার জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। লেসার প্রিন্টার ও প্লটার দিয়ে যখন আমি যা খুশি, যেখানে খুশি ছাপতে পারি তখন ছাপাখানার কেন ডিক্লারেশন লাগবে সেটাও আমি জানি না। ছাপাখানা তো এখন আমার পকেটে। এমনকি আমি ঘরে বসে অফিসের প্রিন্টারে প্রিন্ট করার ক্ষমতা রাখি। এখানে ডিসি সাহেবরা কি করতে পারেন? সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি সেটি হচ্ছে গণমাধ্যমকে জনস্বার্থ রক্ষা করতে হয়। তারা জনগণের জন্য কাজ করে এবং জনগণের জন্য উপাত্ত সরবরাহ করে। এইসব গণমাধ্যম যা করতে পারে তা সব প্রযুক্তিতেই করতে পারা উচিত। যা করতে পারে না তা কোন প্রযুক্তিতেই করতে পারা উচিত নয়। এটি এমন নয় যে, আমি কাগজের পত্রিকায় ভুল তথ্য দিতে পারব না কিন্তু ইন্টারনেটে দিতে পারব। আবার কাগজের পত্রিকার সাংবাদিকদের জন্য ওয়েজবোর্ড থাকবে টিভি-অনলাইনের জন্য থাকবে না সেটি কেন তাও বুঝি না। প্রেস কাউন্সিল কি ভূমিকা পালন করে সেটিও আমি বুঝতে অক্ষম। আমি মনে করি সরকার হ-য-ব-র-ল যুগের অবসান ঘটিয়ে ডিজিটাল যুগের জন্য একটি গণমাধ্যম নীতিমালা ও কমিশন গড়ে তুলবে এবং তারই আলোকে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর সমন্বয় করবে। প্রতিটি প্রযুক্তির জন্য আলাদা ব্যাখ্যা বা সংজ্ঞা থাকতে পারে- এমনকি প্রযুক্তিনির্ভর নির্দেশনাও থাকতে পারে-কিন্তু নীতিমালার জঙ্গল তৈরি করা ঠিক হবে না। প্রতিটি প্রযুক্তির জন্য আলাদা আলাদা কমিশন গঠন করাও ঠিক হবে না। একটি কমিশনই সকল বিষয়ে দেখাশোনা করতে পারে। সর্বোপরি সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব ভিন্ন থাকলেও ওয়েজবোর্ড আলাদা হতে পারে না। সার্বিকভাবে এই অনুরোধটি আমি করতে চাই যে, সম্প্রচার নীতিমালা ও অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালার সঙ্গে কাগজের পত্রিকাগুলোর জন্য একটি নীতিমালার খসড়া তৈরি করে সবগুলোকে সমন্বিত করে সকল গণমাধ্যমের জন্যই একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হোক। সেই নীতিমালার আলোকে একটি গণমাধ্যম কমিশন গঠন করা হোক এবং ওয়েজবোর্ডকে সকল গণমাধ্যমের জন্য সম্প্র্রসারিত করা হোক। প্রেস কাউন্সিলও সকল গণমাধ্যমের জন্য কাজ করতে পারে। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধন করলেই হবে। গণমাধ্যম নীতিমালাকে ঘাটে ঘাটে না ভিড়িয়ে কাজের কাজটি করার জন্য অনুরোধ করছি। সুখবরটি হচ্ছে যে, অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালার যে খসড়াটি আমরা তৈরি করেছি সেটিকে সামান্য সংশোধন করেই এটিকে একটি অভিন্ন গণমাধ্যম নীতিমালায় পরিণত করা যায়। ঢাকা, ৭ নবেম্বর ২০১৪ লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাস-এর চেয়ারম্যান, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যারের জনক ॥ ই-মেইল : সঁংঃধভধলধননধৎ@মসধরষ.পড়স, ওয়েবপেজ: িি.িনরলড়ুবশঁংযব.হবঃ, িি.িনরলড়ুফরমরঃধষ.পড়স
×