ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

গোলাম আযমের জানাজা বায়তুল মোকাররমে ঠিক হয়নি ॥ ১৫ আগস্ট ৩ নবেম্বর ২১ আগস্ট এ

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ৮ নভেম্বর ২০১৪

গোলাম আযমের জানাজা বায়তুল মোকাররমে ঠিক হয়নি ॥ ১৫ আগস্ট ৩ নবেম্বর ২১ আগস্ট এ

আমার ঘরে একটা টেলিভিশন আছে। বিশেষ করে নিউজ দেখি। দিনে নয়, রাতে। মাঝে মাঝে দু-একটা টক শো দেখি। দেখি স্বাধীনতার পক্ষে টকাররা কত হেলাফেলা করে টিভি ক্যামেরার সামনে বসেন। দেখি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে বুদ্ধিজীবী নামের কিছু লোকের কী পরিমাণ অধঃপতন হয়েছে? এরা রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে ইনিয়ে-বিনিয়ে কত যে কথা বলে তার সীমা-পরিসীমা নেই। কেবল একটা কথা বলতে পারে না, মনে মনে যত বড় পাকিস্তানীই হোক বা আইএসআইর প্যাকেট যত পকেটে আসুক, নিজেদের রাজাকার ঘোষণা করতে পারে না। প্রবলেম আছেÑ ১. রাজাকার, গোলাম আযম, নিজামী, সাঈদী, সাকা, কাশেম আলীÑ এরা ১৯৭১ সালে যেমন ঘৃণিত ছিল আজও তাই আছে, বরং বিচার শুরু হওয়ার পর থেকে আরও বেশি ঘৃণিত ও ধিক্কৃত হয়েছে, ২. জুতা খাওয়ার ভয় আছে। মোশতাককে যেমন গণথুতু দিয়েছিল তেমনি গোলামকেও কফিনে শুয়ে জুতা খেতে হয়েছে। ভবিষ্যতেও জুতার অভাব হবে না। জিয়া-খালেদাপুত্র তারেকও ‘একই মায়ের পেটের দুই ভাই’ বলা ছেড়ে দিয়েছে। শিবিরের প্রতি তার ভ্রাতৃত্ববোধ মনে হয় কমে গেছে। তবে আমার একটু ভিন্ন মত আছে। আপাতদৃষ্টিতে তারেক শিবিরের সঙ্গে গাঁটছড়া ছিঁড়ে ফেলেছে প্রমাণ করার চেষ্টা করলেও ভেতরে অন্য মতলব আছে। শোনা যায়, জামায়াত-শিবিরের চোরাচালানি ব্যবসার পার্টনার দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে এরই মধ্যে বারকয়েক দেখা করেছে দুবাই এসে। দেশে প্রচলিত এমন গুজব আছে। এছাড়া উপায়ই বা কি? মেধা বলতে তো দুর্নীতি করে অর্থ বানানো। ছয়-সাত বছর যাবত লন্ডনের এক পশ এলাকায় বসবাস করছে। এই যার জীবন তার পক্ষে লেখাপড়া শেখা সম্ভব নয়। বরং ইংরেজের দেশে থাকতে থাকতে ইয়েস-নো-ভেরি গুড জাতীয় কিছু পেটে ঢোকাটাই অস্বাভাবিক নয়। নামের পেছনে একটা ড. লাগিয়ে নিতে পারে। আজকাল তো রাজনীতি আর প্রশাসনে ‘ড.’-এর ছড়াছড়ি। লেখাপড়া ‘আন্ডার মেট্রিক-গ্র্যাজুয়েট’ এমন লোকও নামের পেছনে ‘ড.’ লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ভদ্র সমাজে বসছে। এমন একজনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল ভাই সাব আপনি ডক্টরেট করলেন কবে, কোথা থেকে? উত্তরে সেই একজন বললেনÑ ‘আমি ইন্টারনেট থেকে করেছি’। তারেকও যেভাবে হাওয়া ভবনে বসে টাকার পাহাড় বানিয়েছে তেমনি লন্ডনে বসে এক্সপার্ট ভাড়া করে একটা ‘ড.’ লাগাতে পারে। মূল বিষয়ে যাওয়ার আগে এই উপক্রমণিকা টানার পেছনে একটা কারণ আছে। জিয়া-খালেদাপুত্র তারেক লন্ডনে বসে ইদানীং কিছু কিছু সাংবিধানিক বিকৃতি রপ্ত করেছে। তার বিকৃতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী, বাঙালীর জাতি রাষ্ট্রের পিতা, অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের সংগ্রামী মানুষের আদর্শিক পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে মিথ্যা উদ্ভব বিকৃত কথা বলে চলেছে। ফেরারি আসামি হলেও তার জীবনযাপন ধনকুবেরের মতো। অবশ্য সে তো ধনকুবেরই। হাওয়া ভবন দিয়ে যা লুটেছে তা এক জীবন কেন কয়েক জীবন ধনাঢ্য জীবনযাপন করলেও শেষ হবে না। দেশে যেমন মিথ্যা-বানোয়াট কথা বলার জন্য খালেদা জিয়ার ভাড়াটিয়া বুদ্ধিজীবী আছে তেমনি তারেকেরও লন্ডনে ভাড়াটিয়া এক্সপার্ট রয়েছে। শোনা যায়, লন্ডনের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চতর ডিগ্রীধারী বেশকিছু রাজাকারসন্তান তারেকের পাশে রয়েছে। তারা তারেককে যতসব ‘আলতু-ফালতু’ জিনিস শিখে হাতে ধরিয়ে দেয় আর অশিক্ষিত পড়ন্ত বেলার যুবক হোটেল ও টিভি ভাড়া করে তা বলে দেয়। বৃহস্পতিবার এই লেখা লিখতে বসে টিভি স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখলাম শ্যুটেড-বুটেড হয়ে তারেক পূর্ব লন্ডনের এক প্রবাসী বাঙালী সমাবেশে হাত নেড়ে নেড়ে বক্তৃতা করছে। বলছে বঙ্গবন্ধু না কি ‘পাকিস্তানী পাসপোর্ট’ নিয়ে দেশে এসে ‘অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল’ করেছেন (?) যেসব রাজাকারসন্তান তাকে বলার জন্য একথা ধরিয়ে দিয়েছে তারা না বুঝে দেয়নি। কিন্তু পড়ন্ত বেলার অর্বাচীন যুবক এও জানে না যে, বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে স্বাধীন-সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট এবং বাঙালীর জাতি রাষ্ট্রের পিতা। তিনি ১৬ ডিসেম্বর দীর্ঘ সংগ্রাম ও চূড়ান্ত পর্যায়ে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের পর ৮ জানুয়ারি পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে বিশেষ বিমানে করে লন্ডন ও দিল্লী হয়ে ১০ জানুয়ারি তার স্বপ্নের সোনার বাংলায় ফিরে আসেন। অর্বাচীন যুবক জানে না ১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারি তৎকালীন ছাত্রলীগের পল্টন সমাবেশে সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ স্বাধীনতার যে ইশতেহার পাঠ করেন, সেই দিনই বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা ঘোষণা করা হয়। এ ঘোষণার রাজনৈতিক ভিত্তি ছিল। তারপর ’৭১-এর ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে, বাঙালী জাতির নির্বাচিত নেতা, অর্থাৎ সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা দেন, এই সাংবিধানিক এখতিয়ার কেবল তারই ছিল। বাংলার জনগণ তাকে দিয়েছিল ভোটের মাধ্যমে ’৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে। আর কারও ছিল না। এই পড়ন্ত বেলার অর্বাচীন যুবক তাও জানে না ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল বাংলাদেশের নির্বাচিত পার্লামেন্ট সদস্যগণ কুষ্টিয়ার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে একত্রিত হয়ে স্বাধীনতার যে ঘোষণাপত্র প্রকাশ ও অস্থায়ী (প্রবাসী) বিপ্লবী সরকার গঠন করেছিলেন উভয় ক্ষেত্রেই বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশ জাতি রাষ্ট্রের পিতা ও রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এবং মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক (সুপ্রীম কমান্ডার অব আর্মি ফোর্স) ঘোষণা করা হয় এবং বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা, নীতি-আদর্শ ও নামে ভারপ্রাপ্ত উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন মুজিবনগর সরকার মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেন এবং পাকিস্তানী হানাদার সামরিক জান্তাকে পরাজিত করে আত্মসমর্পণে বাধ্য করিয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনেন। অবশ্যই এসব তারেকের জানার কথা নয়, তার মায়েরও না। কারণ তারা এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, লেখাপড়া করে জানার মতো অবস্থাও তাদের নেই। তবে হ্যাঁ, তারেকের বাপ মিলিটারি জিয়াউর রহমান জানতেন বলেই প্রথম দিন থেকে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে বাংলাদেশকে পাকিস্তানী ধারায় ফিরিয়ে নেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। আর এই ষড়যন্ত্রে তার আইএসআই কানেকশন ছাড়া আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরের জঘন্য ষড়যন্ত্রকারী মোশতাকের সঙ্গে যোগ দেয় এবং ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের মতো বর্বর মানবতাবিরোধী হত্যাযজ্ঞ ঘটায়। এরই ধারাবাহিকতা ৩ নবেম্বরের হত্যাকাণ্ড, এরই ধারাবাহিকতা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ষড়যন্ত্র। স্বাধীনতার পক্ষের রাজনৈতিক শক্তিতো মিলিটারি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে যোগ দেবে না তাই স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমদের সঙ্গে নেয়। এই মিলিটারি জিয়াই গোলাম আযম গংকে দেশে এনে আবার রাজনীতি করতে দেয়। নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়। দল করতে দেয়। জিয়ার বহুদলীয় গণতন্ত্রের সেøাগান একটি মিথ্যা সেøাগান। মূলত এটি একাত্তরে গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগের দায়ে অভিযুক্ত এবং নাগরিকত্ব হারানো গোলাম আযমদের নাগরিকত্ব ও রাজনীতি ফিরিয়ে দেয়, শাহ আজিজের মতো রাজাকারকে প্রধানমন্ত্রী, আবদুল আলিম মান্নানের মতো রাজাকারদের মন্ত্রী বানায়। তার স্ত্রী খালেদা জিয়া তো নিজামী-মুজাহিদের মতো আলবদর কমান্ডার বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী-গণহত্যাকারীর গাড়িতে শহীদের রক্তরাঙা জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে তাদের মন্ত্রী বানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের শহীদ, শহীদ পরিবার, মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের জনগণকে অপমানিত করেছে। মিলিটারি জিয়া-মোশতাক যে ষড়যন্ত্র শুরু করেছিল তারই বহির্প্রকাশ নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড ১৫ আগস্টে ঘটেছে। ৩ নবেম্বর ঘটেছে এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউতে গ্রেনেড হামলা। কি নৃশংস ছিল সেই গ্রেনেড হামলা, পর পর ১৩টি গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে শেখ হাসিনাসহ পুরো আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকে নিশ্চিহ্ন করাই ছিল লক্ষ্য। আল্লাহর রহমতে শেখ হাসিনা বেঁচে গেলেও দলীয় নেত্রী আইভী রহমানসহ ২৩ জন নেতাকর্মী নিহত হন, আহত হন তিনশ’র মতো। সিটি মেয়র মোহাম্মদ হানিফ, আবদুর রাজ্জাক গ্রেনেডের স্পিøন্টার নিয়ে ইন্তেকাল করেছেন। এখনও অনেকে শরীরে স্পিøন্টারের যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে আছেন। কত নৃশংসতা যুদ্ধাপরাধী-মানবতাবিরোধী অপরাধী জামায়াত, খালেদা-তারেক মাতা-পুত্র বাংলাদেশে ঘটিয়েছেন তা লিখে শেষ করা যাবে না। যে কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. আআমস আরেফিন সিদ্দিক ৩ নবেম্বরের জেলহত্যা দিবসের প্রেসক্লাবের আলোচনাসভায় একটি অত্যন্ত যৌক্তিক প্রস্তাব দিয়েছেন যে, ১৫ আগস্ট, ৩ নবেম্বর, ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ড এবং বিগত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে-পরে যেভাবে মানুষ হত্যা, নির্যাতন, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের ঘটনা ও ঘটনার পেছনের মানুষগুলোকে চিহ্নিত করার জন্য কমিশন গঠন করা দরকার। এই কমিশন তদন্ত শেষে সত্যি ঘটনা উদঘাটন করে জাতির সামনে তুলে ধরবেন। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে সত্যি ঘটনা জানানোর দরকার এবং তাহলে কেউ আর তাদের বিভ্রান্ত করতে পারবে না। আমি মনে করি, আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছি, সমর্থন করেছি, সহযোগিতা করেছি আমাদের দায়িত্ব হলো যে যেখানে যেভাবে আছে স্ব স্ব অবস্থান থেকে সাধ্য অনুযায়ী ভূমিকা পালন করা। এই যে কুখ্যাত রাজাকার-যুদ্ধাপরাধী এবং বাংলাদেশবিরোধী এবং ৯০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত গোলাম আযমের অপরাধের বিচার দেশের সর্বোচ্চ আদালত করেছেন। কিন্তু আমরা কি আমাদের কাজ করেছি? খুনী জিয়া-মোশতাকরা জাতির পিতার জানাজা পড়তে দেয়নি, জাতীয় ৪ নেতার জানাজা পড়তে দেয়নি, অথচ গোলাম আযমের জানাজা হয়েছে জাতীয় মসজিদ রায়তুল মোকাররমেÑ এতে আমি অপমানিত, অসম্মানিত বোধ করছি। কেবল এক যুবক বাঁধন জুতো নিক্ষেপ করে জাতির সম্মান কিছুটা হলেও রক্ষা করেছে। গোলাম আযমের মতো রাজাকার, খুনী, নারী ধর্ষকদের কারোই মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে জানাজা হতে পারে না। এই গোলাম আযম, নিজামী, মীর কাশেমরা ’৭১-এ মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে কেবল তাই নয়, স্বাধীনতার চূড়ান্ত পর্যায়ে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে ঘাতকরা পাকিস্তানে পালিয়েছিল এবং সেখানে ‘পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি’ নামে কমিটি করে রাবেতা আলম এ ইসলাম, সৌদি আরব, সিরিয়া, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা চাঁদা তুলেছে এই বলে যে, পূর্ব পাকিস্তান হিন্দুরা দখল করেছে, তারা পুনরুদ্ধারের জন্য লড়াই করছে। মিলিটারি জিয়ার কারণে দেশে ফিরে তারা সংগঠন করার পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, মানারাত, আল-আমিন একাডেমি, ইকরা, ইবনে সিনা, এমনি শত শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। এগুলোর আয় বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা। এমন কি পরিবহন, মিষ্টির দোকান, ফটোকপির দোকান এসব ব্যবসাও তাদের হাতে। এগুলোই হচ্ছে তাদের নাশকতা সৃষ্টির ব্যয় বহনকারী প্রতিষ্ঠান। আজ সময় এসেছে এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার। যারা বাংলাদেশের জন্মের বিরোধিতা করেছে, এখনও পাকিস্তান যাদের মূল জায়গা তাদের প্রতি কোনরকম অনুকম্পা দেখানো উচিত নয়। জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব আজ বিশ্বমানের এবং সেভাবেই তিনি বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তার কাজ তিনি করছেন। অথচ মুক্তিযুদ্ধ করেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমর্থন করে, যুদ্ধাপরাধীর বিচারও চায়, এমন রাজনৈতিক দল শক্তি কি আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন জোটের বাইরে থাকতে পারে? না থাকা উচিত? তারপরও আছে, সিপিবি, বাসদের মতো দল। এখনও তারা বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে যতখানি বলে, তার চেয়ে বেশি বলে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ হাসিনা তথা সরকারের বিরুদ্ধে। এদের কারণেই বিশাল অবদান রাখার পরও শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ আজ খণ্ড-বিখণ্ড, নিষ্ক্রিয়। এমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বে মিছিলে এখন ২/৩শ’র বেশি তরুণের দেখা মেলে না। তারা ভুলে গেছে এই যে, এমরান এইচ সরকার শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র হলেন, লাকি আখতার, ‘সেøাগান কন্যা’ হলেন, এসবই সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলেই। খালেদা জিয়া ও তার বিএনপি-জামায়াত থাকলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও হতো না, শাহবাগ চত্বর বা গণজাগরণ বলে কোন অবিধারও জন্ম হতো না। আমাদের পদাধিকার বলে বুদ্ধিজীবীরাও ভুলে যান শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় আছে বলেই তারা মধ্যরাতের আস্ফালন দেখাতে পারছেন। বৃহস্পতিবার মাঝরাতে লেখার টেবিলে বসে লিখতে লিখতে বাংলা ভিশনের একটি টক শো দেখছিলাম। তাতে দেখলাম সঞ্চালক নিজেই ‘জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের আঁতাত’ এ কথাটি আলোচকদের মুখ দিয়ে বলাবার প্রাণান্তকর চেষ্টা করছেন। এই সঞ্চালকই আগের দিন অপর একটি টিভি চ্যানেলে আলোচক হিসেবে বসে বলছিলেন, ‘জামায়াত নাকি আওয়ামী লীগ-বিএনপির চেয়েও শক্তিশালী সংগঠন।’ উপস্থিত আলোচকদের কেউ এর প্রতিবাদ করেননি। আওয়ামী লীগের পাশে বিএনপিকে দাঁড় করানো যায়, জামায়াতকে যায় কি? বস্তুত এটিও কেবল আলোচনার স্বার্থে আলোচনা নয়, এর পেছনেও মতলব রয়েছে। এরা হয় জামায়াতের অর্থের গোলাম নয় তো ঘোলা পানিতে মাছ শিকার হোক দেখতে চায়। ৭ নবেম্বর ২০১৪ লেখক : ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক
×