ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকা-আশুগঞ্জ বিদ্যুত সঞ্চালন ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:১১, ৭ নভেম্বর ২০১৪

ঢাকা-আশুগঞ্জ বিদ্যুত সঞ্চালন ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হচ্ছে

হামিদ-উজ-জামান মামুন ॥ আশুগঞ্জ থেকে ঢাকায় বিদ্যুত আনতে সঞ্চালন ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে আশুগঞ্জ থেতে ভুলতা পর্যন্ত ৪০০ কেভি এবং ভুলতা থেকে রামপুরা পর্যন্ত ২৩০ কেভি দ্বৈত সার্কিট লাইন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে মোট ৮৫৩ কোটি ৬৮ লাখ ৭ হাজার টাকা। ফলে আশুগঞ্জে স্থাপিতব্য ২ঢ৪৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুত কেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুত অবমুক্ত করা হবে এবং রামপুরা ২৩০/১২০ কেভি উপকেন্দ্রের মাধ্যমে ঢাকা শহরে যথেষ্ট পরিমাণে বিদ্যুত সরবরাহ করা হবে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য এস এম গোলাম ফারুক অভিমত ও সুপারিশ দিয়েছেন। তিনি তাঁর অভিমতে জানান, প্রস্তাব পাওয়ার পর প্রকল্পটির বিষয়ে গত ৪ আগস্ট পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিদ্যুত বিভাগ উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায়। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা শহরে যথেষ্ট বিদ্যুত সরবরাহ সম্ভব হবে। এই প্রেক্ষিতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, আশুগঞ্জ গ্যাস সঞ্চালন ব্যবস্থার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এখানে বিশেষ করে বাখরাবাদ ও জিটিসিএলের স্থাপনায় বেশ কিছু পাইপ লাইন একত্রিত হয়েছে। তাই আশুগঞ্জে গ্যাসের চাপ বেশি রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আশুগঞ্জ বিদ্যুত কেন্দ্র এলাকায় আরও কিছু গ্যাসচালিত বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২২৩ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং ২ গুণ ৪৫০ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট স্থাপনের কাজ পরিকল্পনাধীন রয়েছে। আশুগঞ্জ থেকে উৎপাদিত এ বিদ্যুত এভাকুয়েট করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। উৎপাদিত এই বিপুল বিদ্যুত বর্তমান সঞ্চালন কাঠামোর মাধ্যমে এভাকুয়েট সম্ভব হবে না। ঢাকা শহরের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে অনেক বেশি। এ চাহিদা পূরণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্য পিজিসিবির প্ল্যানিং দফতরে লোড ফ্লো স্টাডিতে বিভিন্ন কেস বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আশুগঞ্জ থেকে ভুলতা পর্যন্ত ৪০০ কেভি ডাবল সার্কিট লাইন এবং ৪০০/২৩০ কেভি উপকেন্দ্র নির্মাণ করে নতুন বিদ্যুত কেন্দ্রগুলোর বিদ্যুত এভাকুয়েশন করা সম্ভব। তাছাড়া প্রস্তাবিত ভুলতা ৪০০/২৩০ কেভি উপকেন্দ্রে বিদ্যমান ঘোড়াশাল-রামপুরা ও হরিপুর-রামপুরা লাইনের ইন-আউটের মাধ্যমে রামপুরা ২৩০/১৩২ উপকেন্দ্রেও বিদ্যুত সরবরাহের মাধ্যমে রাজধানীতে যথেষ্ট পরিমাণে বিদ্যুত সরবরাহ করা যাবে এবং নতুন করে ২ঢ৪৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট থেকে উৎপাদিত বিদ্যুত এভাকুয়েট করা সম্ভব। এ প্রেক্ষিতে প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ২০১৫ সালের মধ্যে তিন হাজার কিলোমিটার নতুন সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করার বিষয়ে উল্লেখ আছে। এ প্রকল্পের আওতায় নতুন সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হবে, যা এই পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, আশুগঞ্জ ভুলতা ৭০ কিলোমিটার ৪০০ কেভি দ্বৈত সার্কিট লাইন নির্মাণ, ভুলতা-হরিপুর-রামপুরা এক কিলোমিটার ২৩০ কেভি দ্বৈত সার্কিট লাইন ইন ও আউট নির্মাণ, ভুলতা-ঘোড়াশাল-রামপুরা ২৩০ কেভি এক কিলোমিটার দ্বৈত সার্কিট লাইন ইন-আউট নির্মাণ এবং ভুলতা ৪০০/২৩০ কেভি, ২ঢ৫২০ এমভি এআইএস উপকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।
×