ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ খুঁজে পায়নি তদন্ত কমিটি

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ৬ নভেম্বর ২০১৪

গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ খুঁজে পায়নি তদন্ত কমিটি

সরেজমিন পরিদর্শন স্টাফ রিপোর্টার ॥ এখনও জাতীয় গ্রিডের কোথায় বিপর্যয় হয়েছিল তা উদ্ঘাটন করতে পারেনি তদন্ত কমিটি। বিপর্যয় ঘটার সম্ভাব্য সব জায়গা পরিদর্শন শেষে তদন্ত কমিটি বলছে কোন জায়গা থেকে বিপর্যয়ের উৎপত্তি তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বুধবার তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার কথা থাকলেও আরও এক থেকে দুই সপ্তাহের সময় চাইবে তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বুধবার সন্ধ্যায় এ প্রসঙ্গে জনকণ্ঠকে বলেন, যেসব স্থানে বিপর্যয় ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছে তদন্ত কমিটি সরেজমিন ঘুরে সেসব স্থানে কোন সমস্যা দেখেনি। ভেড়ামারা হাইভোল্টেজ ব্যাক টু ব্যাক সাবস্টেশন, আশুগঞ্জ এবং নারায়ণগঞ্জের হরিপুরের বিদ্যুত কেন্দ্রগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করেছে তদন্ত কমিটি। কিন্তু কোথাও বিপর্যয় ঘটার মতো কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। এখন আমরা আরও সময় চাইব। আবার নতুন করে অনেক কিছু খতিয়ে দেখতে হবে। বিদ্যুত বিভাগের একটি সূত্র জানায়, বিস্তারিত তদন্তের জন্য আগামী ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চাইতে পারে তদন্ত কমিটি। এদিকে বুধবার বিকেলে বিদ্যুত, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন দেশের বিদ্যুত সঞ্চালন ব্যবস্থা উন্নত করতে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পরামর্শক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। তবে তদন্ত প্রতিবেদন হাতে না পাওয়া পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে কোন কিছু বলতে রাজি হননি তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এর মধ্যে যেসব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ন্যাশনাল লোড ডেসপাস সেন্টার কতটুকু সাবধানতা অবলম্বন করেছে এবং মেশিনের পেছনে যে মানুষ থাকে তারা কতটা দক্ষ তা দেখা হচ্ছে। অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রতিবেদন যেভাবে লুকিয়ে রাখা হয় এখন তদন্ত রিপোর্ট সাধারণ মানুষের সামনে প্রকাশ করা হবে। এ ধরনের ঘটনার পর তদন্ত প্রতিবেদন দিতে আমেরিকার এক মাস এবং ভারতের ১৫ দিন সময় লেগেছিল বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী। উল্লেখ্য, শনিবার দেশজুড়ে বিদ্যুত বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানে বিদ্যুত বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে আট সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার। যাদের বুধবার তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার কথা ছিল। স্টাফ রিপোর্টার ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নিজস্ব সংবাদদাতা কুষ্টিয়া থেকে জানান, গ্রিড বিপর্যয়ের কারণে সারাদেশে বিদ্যুত বিপর্যয়ের ঘটনার তদন্তের জন্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি গতকাল বুধবার আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। বিদ্যুত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ও তদন্ত কমিটির প্রধান ড. কায়কাউস আহমদের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের এ কমিটি আশুগঞ্জ বিদ্যুত কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূরুল আলম, পরিচালক (কারিগরি) সাজ্জাদুর রহমানসহ গ্রিড লাইনের কন্ট্রোল রুমের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। তদন্ত কমিটির প্রধান ড. কায়কাউস আহমদ জানান, মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারিত ৩ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার সময় বেঁধে দিলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া সম্ভব হবে না। তবে খুব শীঘ্রই তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে। এছাড়া আরও কিছু বিদ্যুত কেন্দ্রে গিয়ে আমরা পরিদর্শন করবো। কুষ্টিয়া ॥ গত শনিবার দেশে ঘটে যাওয়া স্মরণকালের জাতীয় গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ উদঘাটনে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা কুষ্টিয়ায় বাংলাদেশ-ভারত ৫০০ মেগাওয়াট হাই ভোল্টেজ ডাইরেক্ট কারেন্ট ব্যাক টু ব্যাক স্টেশন’ পরিদর্শন করেছেন। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় তদন্ত কমিটির সদস্যরা ভেড়ামারা উপজেলার রামকৃঞ্চপুর উপকেন্দ্রে এসে পৌঁছান। তাঁরা এ সময় ভারত থেকে আসা ৪শ’ কেভি ও বাংলাদেশের ২শ’ কেভি বিদ্যুত লাইন পরিদর্শন ছাড়াও বিদ্যুত আমদানি এবং সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে বিতরণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন।
×