ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

খুলনা টেস্ট ড্রর পথে ॥ ভালই জবাব দিচ্ছে জিম্বাবুইয়ে

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ৬ নভেম্বর ২০১৪

খুলনা টেস্ট ড্রর পথে ॥ ভালই জবাব দিচ্ছে জিম্বাবুইয়ে

১০২ রানে এগিয়ে বাংলাদেশ মিথুন আশরাফ খুলনা থেকে ॥ ‘এই মুহূর্তে আমার কাছে মনে হচ্ছে ম্যাচটি ড্র হতে চলেছে’Ñ বলেছেন বাংলাদেশ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ১৩৭ রান করে তিনি খুলনা টেস্টের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিয়ান। প্রথম সেঞ্চুরিটি তামিম ইকবালের (১০৯) ব্যাট থেকে এসেছে। দুইজনের শতকে দলও প্রথম ইনিংসে ৪৩৩ রান করে। কিন্তু এ দুইজন মিলে দলকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন যেমন, সাকিব তামিমের শতকের জবাব দিয়ে ম্যাচের তৃতীয় সেঞ্চুরিয়ান জিম্বাবুইয়ের হ্যামিল্টন মাসাকাদজাও (১৫৪*) জিম্বাবুইয়ের হাল ধরেছেন। সঙ্গে রয়েছেন রেগিস চাকাবভাও (৭৫*)। তৃতীয় দিন শেষে জিম্বাবুইয়ে ৫ উইকেটে ৩৩১ রানও করে ফেলেছে। পিছিয়ে রয়েছে এখনও ১০২ রানে। তবে যে হাতে আছে মাত্র দুই দিন। তাই ড্র’র কথা সরাসরিই বলে দিলেন সাকিব। কেন ড্র হতে চলেছে? ম্যাচত আমাদের হাতে ছিল। না বোঝার কোন কারণই নেই। সাকিবও বললেন, ‘ফিল্ডিংটা বাজে হয়েছে। এই ধরনের ম্যাচে ফিল্ডিংটা গুরুত্বপূর্ণ। হাফ চান্সগুলোও নেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ হাফ চান্স দূরে থাক, শামসুর রহমান শুভ তো একের পর এক ক্যাচ হাতের নাগালে থাকার পরও মিস করেছেন। এমনভাবে ক্যাচ মিস করলে কী আর জেতা ম্যাচও জেতা যায়। বাংলাদেশের বেলাতেও তাই হচ্ছে। প্রথম ইনিংসে শামসুর (২), মুমিনুল (৩৫), মাহমুদুল্লাহ (৫৬), মুশফিক (১১), শুভগত (১৫), তাইজুল (৩২), শাহাদাত (১৮), জুবায়ের (১) বিশেষ কিছু করতে পারেননি। তবে সাকিব ও তামিম যে প্রথমবারের মতো শতক জুটি গড়েছেন, সেখানেই বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। চতুর্থ উইকেটে ১৩২ রানের জুটি গড়েছেন এই দুইজন। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে রানের দিক দিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি এটি। আর চতুর্থ উইকেটে সর্বোচ্চ জুটি। প্রথমদিন অনেক বেশি সেøা খেলে ৩ উইকেটে ১৯৩ রান করার পর দ্বিতীয় দিনে সাকিব-তামিমের শতকে অনেক দূর এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। হাতে থাকা ৭ উইকেটই পড়ে। তবে রান হয় সাড়ে চার শ’র কাছাকাছি। যেটি সবাইকে আশাবাদি করে তুলে। দ্বিতীয় দিনেই আবার জিম্বাবুইয়ের ১ উইকেট তুলে নেয়ায় ম্যাচে বাংলাদেশের ভাল করার সম্ভাবনা জেগে উঠে। কিন্তু সব আশা, আকাক্সক্ষা শামসুর রহমান শুভ ধ্বংস করে দেন। মাসাকাদজার মতো ব্যাটসম্যানকে দুইবার আউট করার সুযোগ পেয়েও হাতছাড়া করেন। সহজ ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি। যেখানে ১৫ ও ১৯ রানেই মাসাকাদজা আউট হয়ে যাওয়ার কথা, সেখানে দিন শেষে নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ স্কোরটিই গড়ে ফেলেছেন মাসাকাদজা। চার শতক করেছেন। এর মধ্যে তিনটিই বাংলাদেশের বিপক্ষে। এই ব্যাটসম্যানকে ঠেকানো যায়নি ঠিক, তবে মধ্যাহ্ন ভোজের বিরতির আগে ব্রায়ান চারিকে (২৫) তুলে নেয়া গেছে। তাইজুল ও সাকিব মিলে জিম্বাবুইয়ে ইনিংসে ধস নামানোর অনেক চেষ্টা করেছেন। দলীয় ৮৪ রানেই চারিকে আউট করেছেন তাইজুল। দ্বিতীয় সেশনে জিম্বাবুইয়ে ইনিংসে ধস নামে। সাকিব একাই তিনটি উইকেট তুলে নেন। ১৮৯ রানের মধ্যে ব্রেন্ডন টেইলর (৩৭), ক্রেইগ এরভিন (১৭), এলটন চিগুম্বুরাকে (১) আউট করে দেন। তখন মনে হচ্ছিল জিম্বাবুইয়ে ফলোঅনেও পড়ে যেতে পারে! ফলোঅন এড়াতে যে তখনও ৪৪ রান লাগত। ফলোঅন না হলেও তৃতীয় দিনেই অলআউট হয়ে যাবে জিম্বাবুইয়ে এমন সম্ভাবনাও জাগে। যদি কোনভাবে ধস ঠেকাতে না পারে জিম্বাবুইয়ে। কিন্তু ধস ঠেকানো দূরে থাক, এমন খেলাই দেখিয়েছেন মাসাকাদজা-চাকাবভা আর একটি উইকেটও হারায়নি জিম্বাবুইয়ে। তৃতীয় সেশন পুরোটা দুইজন মিলেই খেলেছেন। ষষ্ঠ উইকেটে দুইজন মিলে ১৪২ রানের জুটিই গড়ে ফেলেছেন। রানের দিক দিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে যা জিম্বাবুইয়ের তৃতীয় সেরা জুটি। উইকেটে জুটি করার দিক দিয়ে প্রথম। যেভাবে ধস শুরু হয়েছিল, এমন সময় মাসাকাদজা উইকেটে না থাকলে তৃতীয় দিন অলআউটও হতে পারত জিম্বাবুইয়ে। বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনাও জেগে উঠত। কিন্তু শুরুতে যে শামসুর ক্যাচ ফেলা শুরু করেছেন, এরপর থেকে সেই ধারা আরও একাধিকবার বজায় থাকে। মুশফিক নিজেই একবার মাসাকাদজাকে রানআউট করতে পারেননি!
×