ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হরতাল ঠেকাতে পারেনি ক্রিকেটপ্রেমীদের, জামায়াতকে ধিক্কার

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ৬ নভেম্বর ২০১৪

হরতাল ঠেকাতে পারেনি ক্রিকেটপ্রেমীদের, জামায়াতকে ধিক্কার

খুলনা স্টেডিয়ামে প্রচুর দর্শক, আনন্দ-উল্লাস স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ জামায়াতের হরতালের কারণে বুধবার খুলনার ক্রিকেটপ্রেমীদের মাঠে আসতে কিছুটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে কষ্ট স্বীকার করেও ক্রিকেটপাগল হাজার দর্শক খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয়েছেন। তাঁরা বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচের তৃতীয় দিনের খেলা উপভোগ করেছেন। নেচে-গেয়ে প্রিয় দলের খেলোয়াড়দের উৎসাহ দিয়েছেন। অনেকেই আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালীন খুলনায় হরতল দেয়ার জন্য জামায়াতকে ধিক্কার জানিয়েছেন। স্টেডিয়ামের গেটের বাইরে যুবক-তরুণরা হরতালবিরোধী সেøাগানও দিয়েছেন। ৩ নবেম্বর খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের মধ্যে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হয়। ওইদিন দেশব্যাপী জামায়াতের হরতাল থাকলেও টেস্ট ম্যাচের কারণে স্থানীয়ভাবে জামায়াতের নেতারা সেদিন খুলনাকে হরতালের আওতামুক্ত রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তখন খুলনার ক্রিকেটপ্রেমীরা ভেবেছিলেন জামায়াত নেতাদের হয়তো বোধোদয় হয়েছে। দর্শক ভোগান্তি ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশেষ করে ক্রিকেট দুনিয়ায় দেশের ভাবমূর্তি ঠিক রাখতে জামায়াত খুলনাকে হরতালমুক্ত রেখেছে। কিন্তু না, এর একদিন বাদেই ডাকা হরতালে জামায়াত খুলনায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টেস্ট ম্যাচে কোন ছাড় দেয়নি। তারা ছাড় না দিলে কি হবে? ক্রিকেটপাগল দর্শকেরা হরতাল উপেক্ষা করে ইজি বাইক, বেবিট্যাক্সি, মোটরসাইকেল ইত্যাদি যানবাহনে চড়ে মাঠে এসেছেন। হাজার হাজার দর্শক খেলা উপভোগ করছেন। আনন্দ-উল্লাসে মেতে ছিলেন। এদিন শিশু-কিশোরদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। বাগেরহাটের রামপাল থেকে খেলা দেখতে এসেছিলেন কলেজ ছাত্র মেরাজুল ইসলাম। তিনি জানান, সোম ও মঙ্গলবার তিনি বাড়ি থেকে এসে খেলা দেখেছেন। বুধবারও তিনি বাড়ি থেকে এসেছেন। এদিন হরতালের কারণে বাস বন্ধ ছিল। যে কারণে তিনি ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে করে এসেছেন। এ জন্য পথে অনেক বেশি টাকা খরচ হয়েছে। ফুলতলা থেকে আসা যুবক যুবায়ের হোসেন বলেন, টাকা খরচ বেশি এবং পথে একাধিক যানবাহন বদল করে আসতে হয়েছে। এ জন্য সময় নষ্ট, অধিক যাতায়াত খরচ এবং কিছুটা ভোগান্তি হয়েছে। তিনি বলেন, তারপরও মাঠে এসে খেলা উপভোগ করতে পারছি এটাই ভাল লাগছে। শুধু মেরাজুল কিংবা যুবায়ের নয়, অসংখ্য দূরের মানুষ জামায়াতের হরতাল উপেক্ষা করে স্টেডিয়ামে এসে খেলা উপভোগ করেন। দর্শকেরা আক্ষেপ করে বলেন, জিম্বাবুয়েতো বিদেশী দল। খেলছে বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে। আন্তর্জাতিক এই ম্যাচটিকে ঘিরে খুলনাকে হরতালের আওতামুক্ত রাখা যেত। এতে বিদেশের কাছে আমাদের সম্মান বজায় থাকত। কিন্তু জামায়াত তা বুঝলো না। দর্শক হিসেবে স্টেডিয়ামে উপস্থিত প্রাক্তন কলেজ শিক্ষক হাফিজুর রহমান বলেন, মাঠে দর্শকদের উপস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে জামায়াতের হরতালের কারণে ক্রিকেটপ্রেমীদের মাঠে আসার ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা হলেও পাগল দর্শকরা ঠিকই পৌঁছে গেছেন। হরতাল তাঁদের ঘরে আটকে রাখতে পারেনি। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, দেশের সাধারণ মানুষের মন থেকে হরতাল ক্রমশ নির্বাসিত হচ্ছে। রাজনৈতিক কোন দাবি আদায়ে এই কর্মসূচী আর চালিকাশক্তি হিসেবে কাজে আসছে না।
×