ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে ব্যবসায়ী

রাজধানীতে চারজনের আত্মহত্যা, নিরাপত্তা কর্মীর মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ২ নভেম্বর ২০১৪

রাজধানীতে চারজনের আত্মহত্যা, নিরাপত্তা কর্মীর মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীতে এক নারী খাদ্য পরিদর্শকসহ চারজন আত্মহত্যা করেছে। উত্তরায় এক নিরাপত্তা কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। এদিকে পুরনো ঢাকার ধোলাইখাল এলাকায় অজ্ঞানপার্টির খপ্পরে পড়ে এক ব্যবসায়ী ৮০ হাজার টাকা ও মোবাইল সেট খুঁইয়েছেন। অন্যদিকে খিলক্ষেত থেকে তিন হাজার বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে র‌্যাব। শনিবার পুলিশ ও মেডিক্যাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার সকালে মিরপুরে অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে নাদিয়া সুলতানা মিনা (৩৫) নামে এক খাদ্য পরিদর্শক আত্মহত্যা করেছেন। খবর পেয়ে পুলিশ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ওই নারীর লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠায়। মিরপুর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মোঃ আসিফ ইকবাল জানান, নিহত নাদিয়ার স্বামী আখতারুজ্জামান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন সিস্টেম এ্যানালিস্ট। তারা মিরপুরের পাইকপাড়া এলাকায় থাকতেন। তিনি জানান, শুক্রবার রাতে স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে নাদিয়া অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তার স্বামী তাকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় নাদিয়ার মৃত্যু হয়। এসআই আসিফ ইকবাল জানান, মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে আসল ঘটনা জানা যাবে। নিহত নাদিয়ার আত্মীয় স্বজন জানান, স্বামীর পরকীয়া সহ্য করতে না পেরে নাদিয়া আত্মহত্যা করেছে। নাদিয়ার খালা লায়লা ইয়াসমিন জানান, নাদিয়ার স্বামী আসিফ ইকবালের একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ঐ মেয়েকে কেন্দ্র করে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ চলছিল। এতে স্বামীর ওপর অভিমান করে নাদিয়া ঘুমের ওষুধ খেয়েছে। এদিকে শুক্রবার রাত ২টার দিকে পল্টন থানাধীন নয়াপল্টন এলাকার ৬/এ নম্বর বাসার পঞ্চম তলা ভবনের তৃতীয় তলায় গৃহপরিচারিকা সোনিয়া আক্তার (১৭) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ওই বাড়ির দারোয়ান মোঃ হানিফ জানান, মধ্যরাতে সোনিয়া ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে জরুরী বিভাগে নিয়ে আসা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌনে ৩টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি জানান, সোনিয়া ওই বাড়িতে তিন বছর ধরে কাজ করতেন। তবে কি কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তা জানাতে পারেননি হানিফ। নিহতের বাবার নাম খলিল মিয়া। গ্রামের বাড়ি নোয়াখালি জেলার মাইজদি (সুধারাম) থানা এলাকায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজের পুলিশ ফাঁিড়র ইনচার্জ পরিদর্শক মোজাম্মেল হক জানান, এ ঘটনায় দারোয়ান মোঃ হানিফকে আটক করা হয়েছে। অন্যদিকে শুক্রবার গভীর রাতে পুলিশ দারুস সালাম মাজার রোড এলাকার শাহান শাহ আবাসিক হোটেলের কক্ষ থেকে হাসান মাহমুদের (৪৫) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ঢামেক মর্গে পাঠায়। নিহত হাসান মাহমুদের পরিবারের বরাত দিয়ে দারুস সালাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহানুর আলী জানান, অভাব অনটনের কারণে পরিবারে সঙ্গে ঝগড়া করে হাসান মাহমুদ শুক্রবার ওই হোটেলে ওঠেন। ওইদিন গভীররাতে তিনি ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। একই সময় বনানী থানাধীন মহাখালী এলাকার জিপি-৪১ নম্বর বাসা থেকে থেকে সালমা আক্তার (১৭) নামে এক গৃহপরিচারিকার আতœহত্যা করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ওই বড়ি থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ঢামেক মর্গে পাঠায়। নিহতের বাবার নাম রশীদ মিয়া। গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি উপজেলার বেড়াল গ্রামে। বনানী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ শরিফ হোসেন জানান, সালমা আক্তার ওই বাড়ির শামছুর রহমান শামীমের বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করত। তিনি জানান, রাতে সে বাথরুমে ঢুকে ভেন্টিলেটারের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে ব্যবসায়ী ॥ শনিবার সকালে পুরানো ঢাকার ধোলাইখাল এলাকায় অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ৮০ হাজার টাকা খুইয়েছেন আক্তার হোসেন (৪৫) নামে এক সুতা ব্যবসায়ী। তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত আক্তারের মামাত ভাই ছাইদুর রহমান জানান, আক্তার টাঙ্গাইলের মির্জাপুর বাজারে সুতার ব্যবসা করেন। ৮০ হাজার টাকা নিয়ে তিনি মালামাল কেনার জন্য রাজধানীর ঢাকায় আসছিলেন। পথে তিনি অজ্ঞানপার্টি খপ্পড়ে টাকা পয়সা ও মোবাইল খুইয়েছেন। তিনি জানান, সকাল ১১টার দিকে আক্তার অজ্ঞান অবস্থায় ধোলাইখালের রাস্তার পাশে পড়ে ছিলেন। পরে পথচারীরা মোবাইলে তাকে ফোন দিলে তিনি সেখান থেকে আক্তারকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যান। ফেন্সিডিল উদ্ধার ॥ শনিবার ভোরে খিলক্ষেত একটি ট্রাক থেকে তিন হাজার বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে র‌্যাব। র‌্যাব-১ এর অপারেশন অফিসার কামরুল হাসান জানান, শনিবার ভোরে র‌্যাব-১ এর একটি টহল টিম ওই ট্রাকটিকে থামার সঙ্কেত দেয়। এ সময় ট্রাক থামিয়ে চালক ও হেলপার পালিয়ে যায়। পরে ট্রাকে তল্লাশি চালিয়ে ৩ হাজার বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়।
×