ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জানালেন মজেনা

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারি সংলাপ গঠনমূলক হয়েছে

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৩০ অক্টোবর ২০১৪

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারি সংলাপ গঠনমূলক হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তৃতীয় অংশীদারি সংলাপ ‘অত্যন্ত ইতিবাচক ও গঠনমূলক’ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজেনা। অতীতের চেয়ে এবারের সংলাপ আরও বেশি ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানান তিনি। বুধবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত এসব তথ্য জানান। অপরদিকে বাংলাদেশকে শক্তিশালী অর্থনীতির দেশে পরিণত করতে হলে অবশ্যই টেকসই জ্বালানির ওপর জোর দিতে হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। ড্যান ডব্লিউ মজেনা বলেন, তৃতীয় অংশীদারি সংলাপের প্রথম দিনে তিনটি গ্রুপ সুশাসন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং নিরাপত্তা সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেছে। এবারের সংলাপ খুবই ইতিবাচক ও গঠন হয়েছে বলেও তিনি জানান। রাষ্ট্রদূত জানান, এই সংলাপের মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যে আরও গভীর সম্পর্ক হবে। দুই দেশের মধ্যে অনেক ইস্যু রয়েছে, যেসব ইস্যুতে আমরা এক সঙ্গে কাজ ও পরস্পর সহযোগিতা করতে পারি। এই সংলাপের মধ্য দিয়ে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে দুই দেশের মধ্যে তৃতীয় অংশীদারি সংলাপ শুরু হয়। বুধবার দুই দিনব্যাপী এই সংলাপ শেষ হয়েছে। ওয়াশিংটনে আয়োজিত যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার তৃতীয় অংশীদারিত্ব সংলাপে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক ও যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ওয়েন্ডি শারম্যান। দুই প্রতিনিধি দল এই বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক ব্যাপকভিত্তিক বিষয়সমূহ নিয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করে। দুই দিনব্যাপী এই সংলাপে গ্রুপগুলো উন্নয়ন ও সুশাসন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়। একই সঙ্গে তারা আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়েও আলোচনা করে। দুই দেশের মধ্যে যে অত্যন্ত মজবুত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে তা আরও সম্প্রসারণের সুযোগ এনে দিয়েছে অংশীদারিত্ব সংলাপ। দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার সংযোগস্থলে অবস্থিত বাংলাদেশ বিশ্বের এ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকাগুলোর মধ্যে যোগসূত্র গড়ে তুলতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই দুই দেশের মধ্যকার ঘনিষ্ঠ বন্ধনকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে অংশীদারিত্ব সংলাপের এই সুযোগকে যুক্তরাষ্ট্র স্বাগত জানিয়েছে। টেকসই জ্বালানি বিনিয়োগ ফোরাম ॥ বাংলাদেশকে শক্তিশালী অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে অবশ্য টেকসই জ্বালানি ব্যবহারে জোর দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজেনা। বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে সবার জন্য টেকসই জ্বালানি বিনিয়োগ ফোরাম আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি এই মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজেনা ছাড়াও বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও নেপাল প্রতিনিধি জোহান্স জজ, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিগুছি কাজুহিকো, জার্মান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার প্রতিনিধি ড. উলফ্রাম ক্লেইন, টেকসই বিনিয়োগ ফোরামের নির্বাহী কর্মকর্তা মাহিন্দর গোলাটি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজেনা বলেন, টেকসই জ্বালানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এদেশে গ্যাস ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রচুর মজুদ রয়েছে। এসব সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। ড্যান মজেনা বলেন, প্রতিবেশী দেশ নেপাল, ভুটান ও ভারতের সেভেন সিস্টার্স অঞ্চলে প্রচুর জলবিদ্যুত রয়েছে। বাংলাদেশ এসব স্থান থেকে আমদানির মাধ্যমে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে পারে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে চলেছে। বিশেষ করে কৃষিক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। বাংলাদেশের জনসংখ্যা বেশি হলেও খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এছাড়া মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। এটা খুবই ইতিবাচক। বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবেই। অনুষ্ঠানে অন্য বক্তারা বলেন, এখনও বিশ্বের প্রায় তিনশ’ কোটি মানুষ সনাতন পদ্ধতিতে মাটির চুলায় কাঠ দিয়ে রান্না করে থাকে। এর ফলে ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়। এই ধোঁয়ায় মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। সে কারণে রান্নার এই সনাতন পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
×