ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

খুলনায় জিততে চায় জিম্বাবুইয়ে

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ২৯ অক্টোবর ২০১৪

খুলনায় জিততে চায় জিম্বাবুইয়ে

মিথুন আশরাফ ॥ মিরপুর টেস্টের মিশন শেষ। এবার তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের মিশনে নামার পালা। দুই দলই যে প্রতিটি ম্যাচকেই একটি করে মিশন হিসেবে নিচ্ছে। দ্বিতীয় টেস্টটি হবে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে। আর এখানে বাংলাদেশকে হারাতে চায় জিম্বাবুইয়ে। দ্বিতীয় টেস্টে জিতে প্রথম টেস্টে ৩ উইকেটে হারের স্বাদ মেটাতে চায়। সিরিজে আনতে চায় সমতা। জিম্বাবুইয়ে অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেইলরই এমনটি জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘আমরা সিরিজে ফিরতে পারি। আমাদের সে ক্ষমতা আছে। সামনের ম্যাচে আমাদের জেতার ইচ্ছে আছে।’ প্রথম টেস্ট যেখানে পাঁচদিনে শেষ হওয়ার কথা, সেখানে তিনদিনেই শেষ হয়ে গেছে। হেরেছে জিম্বাবুইয়ে। এবার দ্বিতীয় টেস্টের দিকে নজর টেইলরদের। যে মিশনে নেমেও গেছে দলটি। বাংলাদেশ দল অনুশীলনে এখনই না নামলেও জিম্বাবুইয়ে দল ঠিকই অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার দুই দলই খুলনা যাবে। এর আগে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামেই যত বেশি পারা যায় অনুশীলন করে নিতে চাচ্ছে জিম্বাবুইয়ে। দ্বিতীয় টেস্টের আগে কোনভাবেই সময় নষ্ট করতে রাজি নয় সফরকারীরা। মঙ্গলবার থেকে রবিবার-হাতে পাওয়া ৬ দিন কোনভাবে হাতছাড়া করতে চাচ্ছে না। জয় যে চাই-ই তাদের। জিম্বাবুইয়ে অধিনায়ক জয়ের কথা যে ভাবছেন, তা বোধ হয় উইকেটের ভাবনা মাথায় রেখেই। মিরপুরে যে রকম উইকেট হয়েছে, খুলনায় সে রকম উইকেট হবে না। এমন ভাবনা থেকেই আত্মবিশ্বাসী টেইলর। তাই তো বলেছেন, ‘এই উইকেটটা (মিরপুরের) বেশ উপভোগ্য ছিল। তবে ব্যাটসম্যানরা রান না করায় ম্যাচটি হারতে হয়েছে আমাদের। জিম্বাবুইয়ে বাংলাদেশকে দেড় শ’ রানের টার্গেট দিতে পারলে ভাল হতো। তবে দিন শেষে আমরা হেরে গেছি, এটাই বড় কথা। আমরা যেমন ব্যাটিং করেছি, তাতে জয়টা আশা করা যায় না। খুলনা ও চট্টগ্রামের পিচ কেমন হতে পারে এই ব্যাপারে আমাদের কোন ধারণা নেই। এখানে (মিরপুরে) পেস ছিল। আমাদের বোলিং ইউনিট হয়ত ভাল কিছু করার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু ব্যাটিংয়ে আমরা ধসে পড়েছি। তবে আমি নিশ্চিত খুলনায় পেসারদের জন্য সুবিধা থাকবে না।’ খুলনায় এখন পর্যন্ত জিম্বাবুইয়ে কোন টেস্ট ম্যাচ খেলেনি। এরপরও এত আত্মবিশ্বাস কোথা থেকে আসে? আসে, কারণ এখানে যে একটি ম্যাচ খেলা হয়েছে জিম্বাবুইয়ের। সেই ২০০৬ সালে এই স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বিপক্ষে একটি ওয়ানডে খেলেছে জিম্বাবুইয়ে। সেটিতেও অবশ্য বাংলাদেশই জয় পেয়েছিল। তবে মাঠ সম্বন্ধে ঠিকই ধারণা হয়ে গেছে জিম্বাবুইয়ের। টেইলর মিরপুরের উইকেটের বেশি পেস আশা করেননি। কিন্তু তার দলের পেসাররাই চমক জাগিয়েছে। টেইলর বলেছেন, ‘এই উইকেটে খুব বেশি পেস আশা করিনি। আর বাংলাদেশী বোলাররা ভাল করেছে। আমি জানি এখানকার স্পিনাররা যে কোন উইকেটেই দারুণ বোলিং করে।’প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের সামনে ১০১ রানের টার্গেট দেয়ার পরও জিম্বাবুইয়ে যে খেলা দেখিয়েছে। প্রশংসা পাচ্ছে। এরপরও ম্যাচ হারে ভীষণ হতাশ টেইলর। বলেছেন, ‘ম্যাচে হেরে যাওয়াই আমাদের জন্য সবচেয়ে বেশি হতাশার। ১০১ রান নিয়েও আমরা সম্ভাবনা জাগিয়েছিলাম। দ্বিতীয় ইনিংসে আমরা মাত্র ১১৪ করেছি, এটি খুবই কম। দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণেই হেরে গেছি আমরা। দলের প্রত্যেকেই খুব হতাশ। তবে আমরা পরের দুই টেস্টে ভাল করতে চাই। প্রত্যেকেই খুলনা ও চট্টগ্রামে ভাল কিছু করার জন্য ক্ষুধার্ত হয়ে আছে।’ জিম্বাবুইয়ে দল বোলিং এ্যাকশনে ত্রুটি থাকায় নিষিদ্ধ হওয়া প্রসপার উতসেয়াকে না পেয়েই দুর্বল হয়ে পড়েছে। ভরসা করার মতো স্পিনার যে নেই। তাই উইকেট পেসারদের জন্য সুবিধা থাকুক আর নাই থাকুক, পেসারদের নিয়েই খেলতে হবে জিম্বাবুইয়েকে। টেইলরও তাই বুঝিয়ে দিলেন, ‘হ্যাঁ, থাকতে পারে পেসার বেশি। স্পিনে আমরা কিছুটা দুর্বল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা শেন উইলিয়ামস ও প্রসপার উতসেয়াকে হারিয়েছি। কিন্তু এটা অজুহাত নয়। দলে যারা আছে তারা প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছে। এরপরও সামনের ম্যাচে দলে পরিবর্তন আসতে পারে। তবে আমরা উইকেট ও কন্ডিশন বুঝে সিদ্ধান্ত নেব, দলে নতুন পেসার থাকবে কি থাকবে না।’ তবে এখনই সিরিজে বাংলাদেশকে সব প্রাপ্তি দিয়ে দিতে রাজি নন টেইলর। এখন সিরিজে বাংলাদেশই ফেবারিট, মানবেন কিনা? এমন প্রশ্নে টেইলরের জবাব, ‘এখনও সিরিজ শেষ হয়নি। আরও ২টি ম্যাচ বাকি আছে। আমরা সিরিজে ফিরতে পারি।’ প্রথম টেস্টের আগেও হুঙ্কার দিয়েছিলেন টেইলর। কাজে দেয়নি। এবার কী কোন কাজে দেবে? খুলনায় বাংলাদেশকে হারানোর খায়েশ মিটবে জিম্বাবুইয়ের?
×