ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

লালমনিরহাট সীমান্তে বোমা বিস্ফোরণ নিয়ে গুঞ্জন

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ২৯ অক্টোবর ২০১৪

লালমনিরহাট সীমান্তে বোমা বিস্ফোরণ নিয়ে গুঞ্জন

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট, ২৮ অক্টোবর ॥ জামায়াত শিবির অধ্যুষিত হাতীবান্ধা উপজেলার সীমান্তের ভূটিয়ামঙ্গল গ্রামে কাঁটাতারের পাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় বোমা পাওয়া গেছে। এই বোমা বিস্ফোরণে একই পরিবারের দুই শিশুসহ ৪ জন আহত হয়েছে। বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটেছে ৩ দিন আগে। কিন্তু আহতের পরিবার, বিজিবি ও গ্রামবাসী বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাটি চেপে গেছে। এই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কী হরতালে নাশকতা করতে ভারত হতে জেএমবি, উগ্রপন্থী, জামায়াত ও শিবির বিশাল পরিমাণ বোমা এনে হাতীবান্ধায় মজুদ করেছে। জানা গেছে, শুক্রবার রাতে জেলার হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একই উপজেলার ভারতীয় কাঁটাতারে বেড়া ঘেঁষা সীমান্ত গ্রাম ভূটিয়ামঙ্গল গ্রামের সোলাইমান মুন্সির ছেলে আনসারুল তার জামাতা ফরিদুল ইসলাম, দুই নাতি পারভেজ ও কুলসুম শরীর ঝলসে যাওয়া অবস্থায় ভর্তি হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলা হয় বাড়িতে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে তারা আহত হয়। আহতদের কথামতো তাদের চিকিৎসা চলছে। কিন্তু ৩ দিন পরে ঝলসে যাওয়া শরীরে পচন ধরে যায়। এতে কর্মরত চিকিৎসকের মনে সন্দেহ হয়। পরে চিকিৎসককে জানানো হয় ভারতীয় কাঁটাতারের বেড়ার পাশে কুড়িয়ে পাওয়া বোমা বিস্ফোরণে তারা আহত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাটি হাসপাতালে রোগীদের দেখতে আসা স্বজনদের মাধ্যমে মঙ্গলবার সংবাদ কর্মীদের কাছে ফাঁস হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে তারা নিজ উদ্যোগে তদন্ত শুরু করে। এতে দেখা যায় বোমা বিস্ফোরণের পর পরই ভূটিয়া গ্রামে অবস্থিত বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা বাড়িটি পরিদর্শন করেছে। কিন্তু তারা বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষ ও থানা পুলিশকে রহস্যজনক কারণে জানায়নি। এদিকে এই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় হাতীবান্ধায় গুঞ্জন চলছে। ভুটিয়া গ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলা জামায়াত ইসলাম অধ্যুষিত। এই গ্রামে জামায়াত শিবিরের শক্ত ঘাঁটি রয়েছে। ’৭১-এর মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামি সাবেক মন্ত্রী নিজামী ও সাবেক মন্ত্রী মুজাহিদ বিএনপি জামায়াত ক্ষমতায় থাকার সময় বেশ কয়েকবার লালমনিরহাট, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রামে সফরে এসে সীমান্তে ঘুরে গেছে। এমনকি লালমনিরহাট সার্কিট হাউসে রাত্রীযাপন করার সময় সরকারী প্রোটেকল ভেঙ্গে গভীর রাতে সাদা মাইক্রোবাসে চেপে জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে গোপন বৈঠক করতে সীমান্তে গিয়ে ছিলেন। সেই সময় বিষয়গুলো গোয়েন্দাদের নজর এড়াতে পারেনি। কিন্তু তারা সপ্রোণোদিত হয়ে তদন্ত করতে পারেনি। সীমান্ত গ্রামটির সাধারণ মানুষ মনে করছে, ভারত হতে কোন সন্ত্রাসী চক্র দেশের ভিতরে নাশকতা চালাতে মজুদ করতে বোমা এনেছে। সন্ত্রাসীদের অসাবধানতা অবলম্বনের কারণে ১টি বোমা কাঁটাতারের বেড়া পার করতে পড়ে যায়। আবার অনেকে মনে করছে সোলাইমানের বাড়িতে কোন চক্র বোমা বানাতে গিয়ে এমনটি হতে পারে। আবার কেউ কেউ ভাবছে ভারতীয় বিএসএফের বোমা হতে পারে।
×