ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিজামীর রায় নিয়ে সতর্কাবস্থায় সিএমপি

প্রকাশিত: ০৪:৪০, ২৯ অক্টোবর ২০১৪

নিজামীর রায় নিয়ে সতর্কাবস্থায় সিএমপি

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর রায়কে কেন্দ্র করে আজ নগরব্যাপী তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার পদক্ষেপ নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর মধ্যে সিটিএসবির দফতরে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার কন্ট্রোল রুম থেকেও তথ্য যোগাড় করা শুরু করেছে সিএমপির বিভিন্ন বিভাগ। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে থাকা এসব সিসিটিভি ক্যামেরার ওপরও নির্ভরশীলতা রয়েছে অনেক বেশি। র‌্যাব-পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা পুলিশও তল্লাশিসহ সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে মঙ্গলবার দুপুর থেকেই। আজ বুধবার সকালে এ রায় ঘোষণা কেন্দ্র করে দেশব্যাপী নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশও বিষয়টি জোরালোভাবে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন সিএমপির মুখপাত্র ও গোয়েন্দা বিভাগের এডিসি প্রকৌশলী মো. হাসান চৌধুরী। এদিকে, সিটিএসবির পক্ষ থেকে ২৮টি স্পটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও তল্লাশি অভিযানসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহকারী কমিশনার। জানা গেছে, বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রামের আনাচে কানাচে জামায়াত শিবিরের অপতৎপরতার ওপর পুলিশ প্রশাসনের কড়া নজরদারি রয়েছে। এ ছাড়াও র‌্যাবের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন স্থানে আকস্মিক অভিযান ও সন্দেহভানজদের তল্লাশি অব্যাহত থাকায় গত কয়েকমাস ধরে জামায়াত শিবিরের অপতৎপরতা অনেকটা শিথিল রয়েছে। কিন্তু এরপরও জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতের অপতৎপরতা ও হাঙ্গামার আশঙ্কা রয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে এ ধরনের অপতৎপরতা নস্যাত করতে ২৮টি স্পটে মঙ্গলবার দুপুর থেকেই শুরু হয়েছে ব্যাপক তল্লাশি। এছাড়াও জামায়াত শিবিরের ঘাঁটি হিসেবে খ্যাত চকবাজার এলাকায় সাদা পোশাকধারী থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ কাজ করছে বলে সিএমপির একটি সূত্রে জানা গেছে। গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রে জানানো হয়েছে, এ বিভাগের চারটি টিম সাদা পোশাকে সন্দেহপ্রবণ এলাকাগুলোতে কড়া নজরদারি করছে। শুধু নিজামীর রায়কে নয়, নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠনের তথ্য নিশ্চিত করা গেলেই সেখানেও চলছে অভিযান। আকস্মিক অভিযানের ফলে অপরাধীরা গা ঢাকা দেয়ার সুযোগ থাকছে না। তবে সঠিক তথ্য উপাত্তের মাধ্যমে শিবিরের মেস ও আবাসস্থলগুলোতে আকস্মিক অভিযান চালানোর সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে। জামায়াত শিবিরের এ শীর্ষ নেতার রায়কে কেন্দ্র করে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অনেকটা চাঙ্গা অবস্থানে থাকার যে সম্ভাবনা ছিল তা অনেকটা ভ-ুল হয়ে গেছে গোয়েন্দা বিভাগের তৎপরতার কারণে। এ ব্যাপারে সিএমপির মুখপাত্র ও গোয়েন্দা বিভাগের এডিসি প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসান চৌধুরী জনকণ্ঠকে জানান, পুরো সিএমপির পক্ষ থেকে এ রায়কে কেন্দ্র সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করলেই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে অপরাধীদের। এছাড়াও নগরব্যাপী তল্লাশি অভিযানের মধ্য দিয়ে সম্ভাব্য আন্দোলনকারীদের তটস্থ করে রাখা হয়েছে। ফলে রাস্তায় নামার কোন সুযোগ থাকছে না। এরপরও গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রাখা হয়েছে নগর জীবনের নিরাপত্তায়। এদিকে, সিটিএসবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে নগরীর ২৮টি স্পটে চেক পোস্ট বসিয়ে তল্লাশি অভিযান চালানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সহস্রাধিক পুলিশ সদস্যের মাধ্যমে। এছাড়া নগরীর ১৬টি থানার টহল টিম ও পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকছে। এ রায়কে কেন্দ্র করে পূর্বের তুলনায় বর্তমানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও অনেকটা জোরদার করা হয়েছে। নগরব্যাপী প্রাইভেট গাড়িসহ সিএনজি ট্যাক্সি এমনকি সাইকেল আরোহীকেও সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছে। অনেক সময় পথচারীদের মধ্য থেকেও তল্লাশি অভিযানের মাধ্যমে বিস্ফোরক দ্রব্য পাওয়ার ঘটনায় এ দফায় সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদসহ দেহ তল্লাশিও করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নগরব্যাপী ঘুরে দেখা গেছে, তল্লাশি অভিযানে পূর্ববর্তী স্পটগুলো পরিবর্তন করা হয়েছে। আগে রাস্তার মোড়ে তল্লাশি চালানো হলেও এবার তা মাঝপথেই করা হচ্ছে।
×