ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে এত বড় সঙ্কট কখনও আসেনি ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৬:৪৯, ২৬ অক্টোবর ২০১৪

দেশে এত বড় সঙ্কট কখনও আসেনি ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ খালেদা জিয়ার পায়ের নিচের মাটি সরে যাচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কথা বলেছেন তার সমালোচনা করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাসের ঘরে বসে আছেন। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে ফখরুল বলেন, আপনি বালু চরের মধ্যে বসবাস করছেন। তাই নিজের কথা ভাবুন। নিজের দিকে তাকান। দেখতে পাবেন দেশের সকল জনগণ আপনার কাছ থেকে দূরে সরে গেছে। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ভাষাসৈনিক ও রাজনীতিবিদ অলি আহাদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অলি আহাদ স্মৃতি সংসদ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে শরিক হওয়ার আহ্বান জানান। যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে গ্রেফতারের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, এটা কোন গণতন্ত্র? রাজপথে মিছিল করতে দেয়া হচ্ছে না, ঘরের মধ্যে সভা করতে দেয়া হচ্ছে না। এরপরও এখনো যারা বলে দেশে গণতন্ত্র আছে তারা জ্ঞানপাপী ও আহাম্মকের রাজ্যে বাস করছে। তিনি বলেন, দুদক আওয়ামী লীগ নেতাদের দুর্নীতিমুক্ত বলে সার্টিফিকেট দিচ্ছে। আর বিরোধী দলের নেতাদের দুর্নীতির কথা বলে হয়রানি করছে। আওয়ামী লীগ সন্মানিত লোকদের সন্মান করতে জানে না অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, মওলানা ভাসানী, তাজউদ্দিন আহমেদ, এমএজি ওসমানী, ভাষা সৈনিক মতিন ও অলি আহাদের মতো মানুষকে তারা সন্মান দেয়নি। তারা নিজেদের ছাড়া কাউকে সন্মান দিতে জানে না। বরং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। তিনি বলেন, ভাষা মতিনকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সন্মান জানানো হয়নি। পিয়াস করিমের মরদেহ শহীদ মিনারে নিতে দেয়া হয়নি। ভুইফোঁড় কয়েকটি সংগঠন দেশের বিশিষ্ট নয় ব্যক্তিকে শহীদ মিনারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। তারা কারা? এরা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে না। আমি বলতে চাই এরা রাষ্ট্রদ্রোহী। এরা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, দেশ কঠিন সঙ্কটের মধ্যে আছে। দেশের ইতিহাসে এতো বড় সঙ্কট কখনও আসেনি। এটা তৈরি করেছে গণতন্ত্রের কথা বলে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ। তিনি বলেন, অলি আহাদ ছিলেন একটা বটগাছ, মহীরূহ। অলি আহাদ একজন অকুতোভয় রাজনীতিক ছিলেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি সমাজ ও মানুষকে বদলে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। ৫২’র ভাষা আন্দোলনে তিনি অগ্র সেনাপতির মতো ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি যা বিশ্বাস করতেন, মনের ভেতর লালন করতেন তা অকপটে বলে যেতেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যন শমসের মবিন চৌধুরী, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এনাম আহম্মেদ চৌধুরী, খালেদা জিয়ার প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক উল হক, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অলি আহাদের মেয়ে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা প্রমুখ। আলালের মুক্তি দাবি ॥ বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক ও যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ দলের প্রায় ৮০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতারের ঘটনায় ক্ষোভ, নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আলালের গ্রেফতারের প্রতিবাদে সোমবার সারাদেশে বিক্ষোভ করবে যুবদল ॥ যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে সোমবার সারাদেশের সকল জেলা ও মহানগর সদরে বিক্ষোভ করবে যুবদল। যুবদলের এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
×