
ছবিঃ সংগৃহীত
কুড়িগ্রামে স্বল্প মূল্যে মানুষের চিকিৎসা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে চালু হয়েছে দশ টাকার হাসপাতাল। এই হাসপাতালে অল্প খরচে মিলছে চিকিৎসা সেবা। এতে করে খুশি সেবাগ্রহীতারা। দেশে বর্তমানে চিকিৎসা সেবার খরচ বেড়ে যাওয়ায় চরম কষ্টে পড়েছে সাধারণ মানুষ। অনেক মানুষ টাকার অভাবে একপ্রকার বিনা চিকিৎসায় মারা যায়।
উত্তরের শেষ প্রান্তের জেলা কুড়িগ্রাম। এ অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। এই সব হতদরিদ্রসহ সকল মানুষের জন্য কুড়িগ্রাম জেলায় চালু হয়েছে দশ টাকার হাসপাতাল। গত ডিসেম্বরে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ফুল’-এর উদ্যোগে নাগেশ্বরী উপজেলায় এই হাসপাতালটি চালু করা হয়। এই হাসপাতালে ডায়াবেটিস, টাইফয়েড, জন্ডিস, কিডনিসহ রক্তের সকল ধরনের পরীক্ষা, প্রস্রাব পরীক্ষাসহ আল্ট্রাসনোগ্রাম, ইসিজি করা যায় স্বল্প মূল্যে। প্রতিদিন সকাল ১০টা হতে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দু’জন চিকিৎসকের মাধ্যমে নারী, শিশু, বয়স্ক রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
প্রত্যন্ত চরাঞ্চলসহ নাগেশ্বরী উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৬ হাজার পরিবারের মানুষ দশ টাকার কার্ড গ্রহণ করেছে। এই কার্ডের বিনিময়ে পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। হাসপাতালের কার্ডধারী ছাড়াও একশত টাকার বিনিময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার সুযোগ রয়েছে। রক্ত পরীক্ষাসহ আল্ট্রাসনোগ্রাম, ইসিজি করা যায় অল্প খরচে। মানুষের অর্থনৈতিক খরচ কমার পাশাপাশি মানসম্মত চিকিৎসা সেবা পেয়ে খুশি সেবাগ্রহীতারা।
‘ফুল’ হাসপাতালে আসা কয়েকজন রোগী জানান, এই হাসপাতালে অল্প খরচে মানসম্মত চিকিৎসা সেবা পাওয়ায় প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ খুব খুশি। সময় যতই যাচ্ছে, দিন দিন ততই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হাসপাতালটিতে। তারা দাবি করেন, হাসপাতালটিতে আরও আধুনিক চিকিৎসা সেবা চালু করলে জেলার মানুষ কম খরচে ভালো স্বাস্থ্যসেবা পাবে।
‘ফুল’ হাসপাতালের কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী জানান, এই হাসপাতালটি চালু হওয়ায় কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। নাগেশ্বরী উপজেলার ১৩ জন বেকার যুবক-যুবতীর কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
‘ফুল’-এর সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. ইমতিয়াজ হোসেন জানান, প্রতিদিন হাসপাতালে উপসহকারী মেডিকেল অফিসারের মাধ্যমে গর্ভবতী নারী, শিশু, বয়স্ক রোগীদের বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ৩০/৪০ জন রোগী চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।
নির্বাহী পরিচালক আব্দুল কাদের জানান, নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোকে মানসম্মত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই হাসপাতালটি চালু করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ফুল’। সরকারি-বেসরকারি সহায়তা পেলে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার পরিধি বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে।
নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিব্বির আহমেদ জানান, আমি হাসপাতালটি পরিদর্শন করে নিজে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেছি। স্বল্প মূল্যে এমন চিকিৎসা সেবা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা হওয়ায় গরিব মানুষ উপকৃত হবে।
ইমরান