
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে জুলাই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে পা হারিয়েছেন শফিকুল ইসলাম রতন। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির পা হারানোয় পরিবারের উপার্জন থমকে গেছে। তিনি কলেজ এবং স্কুল পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের নিয়ে অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। সারিয়াকান্দি পৌর এলাকার ধাপগ্রামের মৃত ইলিয়াস উদ্দিন আকন্দের ছেলে শফিকুল ইসলাম রতন। যমুনা নদীর ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে পাড়ি দেন ঢাকায়। ঢাকায় তিনি অটোরিকশা চালিয়ে অর্থ উপার্জন করতেন। তার পাঠানো টাকা দিয়েই চলতো গ্রামে থাকা পরিবারের সংসার।
তিনি জানান, গত বছরের ১৬ জুলাই সকালে শহীদ আবু সাঈদ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার পর সারাদেশে যখন আন্দোলন বেগবান হয়, তখন শফিকুল ইসলাম রতন সেদিন বিকেলে মিছিলে যোগ দেন । বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে গাজীপুর শফিপুর এলাকায় পুলিশের গুলি রতনের ডানপায়ে পেছন থেকে বিদ্ধ হয়ে বের হয়ে যায়। তাতে রতন ছিটকে পরে যায়। ফলে তার ডান হাতে লোহার একটি এঙ্গেল ঢুকে যায়। এমন অবস্থায় তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে তিনি কোনও চিকিৎসা পাননি। পরে তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পঙ্গু হাসপাতালে কিছুটা সুস্থ হলে তাকে সারিয়াকান্দি গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। গ্রামের বাড়িতে অসুস্থ অনুভব করলে তাকে পুনরায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার পায়ে ইনফেকশন হয়। পরে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী তার ডান পা কেটে ফেলে দেয়া হয়। ফলে শফিকুল ইসলাম রতন পঙ্গু হয়ে যান । তবে ঢাকায় ব্রাক ব্যাংকের সহায়তায় তিনি একটি কৃত্রিম পা পেয়েছেন।
রতনের বড় মেয়ে সুস্মিতা আক্তার বগুড়া সৈয়দ আহম্মেদ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের মনোবিজ্ঞান বিষয়ের অনার্স ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী। ছোট মেয়ে মরিয়ম আক্তার সারিয়াকান্দি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণিতে পরে।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি পা হারিয়ে উপার্জনে অক্ষম হওয়ায় পড়াশোনা বন্ধের পথে রতনের মেয়েদের। নিজের পরিবারের ভরনপোষণ চালাতে তিনি তার মেয়ের একটি চাকরি দাবি করেন সরকারের কাছে।
শফিকুলের মেয়ে বলেন, একপা হারিয়ে আমার বাবা কোনও উপার্জন করতে পারছেন না। আমাদের পরিবার খুবই কষ্টে দিন অতিবাহিত হচ্ছে। পরিবারের ভরনপোষণ করতে সরকারের সহযোগিতা আমরা একান্তভাবে কামনা করছি।
Jahan