ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২

মাত্র ৩ হাজার টাকার জন্য মামার দাফনে বাধা! ২ লাখ টাকা দাবি ভাগ্নের, ৩০ হাজারে সমঝোতা

মো. কবির হোসেন, রাজবাড়ী

প্রকাশিত: ২৩:৫৬, ২০ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২৩:৫৭, ২০ জুলাই ২০২৫

মাত্র ৩ হাজার টাকার জন্য মামার দাফনে বাধা! ২ লাখ টাকা দাবি ভাগ্নের, ৩০ হাজারে সমঝোতা

ছবিঃ সংগৃহীত

মাত্র ৩ হাজার টাকার দাবিতে মামা ইবাদত মল্লিকের মরদেহ দাফনে বাধা দেন ভাগ্নে আবদুস সালাম। অবশেষে ৩০ হাজার টাকায় সমঝোতা হলে সম্পন্ন হয় দাফন। রাজবাড়ী সদর উপজেলার বানীবহ ইউনিয়নের বার্থা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৩০ বছর আগে আসালত মল্লিকের ছেলে ইবাদত মল্লিকের বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন ভাগ্নে আবদুস সালাম। সে সময় কাজের বিনিময়ে থাকার সুযোগ পেলেও বেতন হিসেবে দাবিকৃত ৩ হাজার টাকা পাননি বলে তার অভিযোগ।

গত ১৯ জুলাই (শনিবার) সকাল সাড়ে ৮টায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্ট্রোকজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন ইবাদত মল্লিক। মরদেহ গ্রামের বাড়িতে আনা হলে জানাজার পূর্ব মুহূর্তে ভাগ্নে আবদুস সালাম জানাজা ও দাফনে বাধা দেন। তার দাবি—তাকে পাওনা টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত মামার দাফন করা যাবে না।

বানীবহ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সালাম বলেন, “ইবাদত মল্লিক মারা যাওয়ার পর জানাজার আগে ভাগ্নে আবদুস সালাম মরদেহ দাফনে বাধা দেয়। আমি তাকে জিজ্ঞেস করি, এ বিষয়টি আগে আমাকে কেন জানায়নি। সে কোনো উত্তর দিতে পারেনি। তার দাবির পরিমাণ তখন দাঁড়ায় ২ লাখ টাকা। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হয়, মৃতের পরিবার ভাগ্নেকে ৩০ হাজার টাকা পরিশোধ করবে। ইবাদত মল্লিকের ছেলে শাজাহান সালাম তাকে ওই অর্থ বুঝিয়ে দেন। এরপর বিকেল সাড়ে ৫টায় বার্থা কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।”

ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাবিব শেখ নামে একজন পোস্ট করলে তা ভাইরাল হয়। নেটিজেনরা ভাগ্নের এমন অমানবিক আচরণের তীব্র সমালোচনা করেন।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, “এমন আচরণ পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।” আবার কেউ বলছেন, “টাকা পরিশোধ করা ফরজ।” আবার কেউ বলছেন, “আগে কেন বললেন না, মারা যাওয়ার পর এমন সময় কেন বললেন?” কেউ বলছেন, “ব্যাপারটা খুব দুঃখজনক।”

ইমরান

×