
রাজশাহীতে নাবিল গ্রুপের "নাবা পোল্ট্রি অ্যান্ড ডেইরি ফার্ম”-এর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার চরম অব্যবস্থাপনা গত দুই দশকে রাজশাহীর পরিবেশকে করছে ভয়াবহভাবে দূষিত। রাজশাহী বিভাগের গ্রামীণ জনপদ এখন আর শুধু ফসলের মাঠ নয়, বিষের ভাগাড়ে রূপ নিচ্ছে। বিশেষ করে নাবিল গ্রুপের মালিকানাধীন “নাবা পোল্ট্রি”-তে খোলা আকাশের নিচে ফেলা হচ্ছে মুরগির বিষ্ঠা ও গবাদিপশুর মলমূত্র। এর ফলে শুধুমাত্র গন্ধ নয়, পানির উৎসও হয়ে পড়ছে বিষাক্ত। মানুষ পড়ছে স্বাস্থ্যের ঝুঁকিতে এবং প্রাণ হারাচ্ছে পরিবেশ।
ইতিপূর্বে জনকণ্ঠ অনলাইন ভার্সনে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর ফলে পরিবেশ অধিদপ্তর নড়ে চড়ে বসে। এরই ধারাবাহিকতায় পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী ও গোদাগাড়ী উপজেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নাবিল গ্রুপের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। শনিবার (১৯ জুলাই) বিকাল থেকে প্রায় ২ ঘণ্টা সরেজমিন পরিদর্শন করে উক্ত অভিযান পরিচালনা করা হয়।
উক্ত অভিযানে গোদাগাড়ী উপজেলার ঝিকরাপাড়া নাবা (পোল্ট্রি) ফার্ম লি.-কে ১,৯৯,৮০০ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। একই সাথে মেসার্স নাইম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী নাইমকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও দুই শত টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। মোট দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহীর সরকারি পরিচালক বলেন, গোদাগাড়ী প্রশাসন রাজশাহী ও পরিবেশ অধিদপ্তর, রাজশাহীর যৌথ উদ্যোগে নাবা ফার্ম লি. (পোল্ট্রি), ঝিকড়াপাড়া, গোদাগাড়ী, রাজশাহী নামক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মুরগির লিটার দ্বারা পরিবেশ দূষণের অভিযোগে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন গোদাগাড়ী সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. শামসুল ইসলাম এবং প্রসিকিউশন প্রদান করেন মোঃ কবির হোসেন, সহকারী পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর, রাজশাহী জেলা কার্যালয়।
এ অভিযানে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০২১-এর বিধি ৭(৩) লঙ্ঘনের দায়ে দণ্ড (১৫) মোতাবেক মেসার্স নাইম ট্রান্সপোর্ট-এর স্বত্বাধিকারী নাইমকে ০৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ২ শত (দুই শত) টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয় এবং নাবা ফার্ম লি. (পোল্ট্রি), ঝিকড়াপাড়া, গোদাগাড়ী, রাজশাহী-কে ১,৯৯,৮০০/- (এক লাখ নিরানব্বই হাজার আটশত) টাকা অর্থদণ্ড করা হয়।
এ সময় উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহীর কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরিবেশ সুরক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে নাবিল গ্রুপের কর্মকর্তাকে মুঠোফোনে ফোন দিয়ে অর্থদণ্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে কিছু না বলে ফোন কেটে দেন।
আফরোজা