
ছবি: জনকণ্ঠ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে মাঝরাতে সরকারি অর্থায়নে নির্মাণাধীন একটি আরসিসি (রেডিমিক্স) সড়কে রড ছাড়াই ঢালাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি এলাকাবাসী বুঝতে পেরে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন এবং কাজে বাধা দিলে পৌর কর্তৃপক্ষসহ ঠিকাদারের লোকজন সটকে পড়েন।
গত শনিবার (১৯ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টার দিকে পৌর শহরের দ্বিজেন্দ্র নাথ দেব (নারু)মাস্টারের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে পৌর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ডাক্তার নাজমা হাউস থেকে বাংলালিংক টাওয়ার পর্যন্ত ৬৭৫ মিটার আরসিসি রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। এ কাজে ব্যয় ধরা হয় দুই কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজার ৮২৬ টাকা। কাজটির দায়িত্ব পান মেসার্স মোস্তফা সন্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের কাজের সঙ্গে উলিপুর পৌর কর্তৃপক্ষে কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা জড়িত বলে দাবি করেন তারা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী দেবাশীষ, প্রাক্তন শিক্ষক রবি চক্রবর্তী, রন্টু সরকার, মঞ্জুরুল, গৌতম পোদ্দার জানান, শনিবার রাত ১২টার দিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রড ছাড়া গভীর রাতে শ্রমিকরা রাস্তা ঢালাইয়ের কাজ করছিল। এমন সময় বিষয়টি জানতে পেরে আমরা সেখানে যাই এবং বাধা দেই। এতে তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয়দের সমঝোতায় রাস্তা থেকে রেডিমিক্স সরিয়ে ফেলা হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নিম্নমানের সামগ্রীর সঙ্গে রাস্তার সিসি ঢালাই চার ইঞ্চি থাকার কথা। কিন্তু সেখানে আড়াই থেকে তিন ইঞ্চি রয়েছে। সিমেন্টের পরিমাণ এক অনুপাত চার থাকার কথা থাকলেও সেখানে আটটির বেশি বালু ব্যবহার করা হয়। এছাড়া মাঝরাতে ২০ ফুট রাস্তায় রড ছাড়াই ঢালাই করা হয়। এর আগে ওই একই রাস্তার ড্রেনের কাজে নানা অনিয়ম হয়।
নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (আইইউজিআইপি) এবং কাজের দায়িত্বরত সহকারী প্রকৌশলী রাসেল মিয়া, রড ছাড়া রাতের আঁধারে রাস্তা ঢালাইয়ের কাজ করা ঠিক হয়নি বলে ভুল স্বীকার করেন তিনি।
এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুল আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার বলে বলেন, "ঘটনাস্থলে আমি ছিলাম। রাতে কাজ করার পর আরসিসি ঢালাই রেডিমিক্স বেশি হওয়ায় সেগুলো ওখানে ঢেলে দেওয়া হয়। পরে সেগুলো সেখান থেকে অপসারণ করা হয়।"
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি গোলাম রব্বানি বলেন, "রাতে রেডিমিক্স মাল বেশি হওয়ায় ওখানে ঢেলে দেওয়া হয়েছিল। পরে এলাকাবাসীর তোপের মুখে সেগুলো সরিয়ে ফেলা হয়।"
উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পৌর প্রশাসক নয়ন কুমার সাহা বলেন, "অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি শুনেছি, পরে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীকে অবগত করা হয়েছে।"
Mily