ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২

রাষ্ট্র যাতে মেহেদীর কথা ভুলে না যায়, রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়: শহীদ মেহেদীর পিতা

নিজস্ব সংবাদদাতা, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ২১:৪১, ২০ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২১:৪১, ২০ জুলাই ২০২৫

রাষ্ট্র যাতে মেহেদীর কথা ভুলে না যায়, রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়: শহীদ মেহেদীর পিতা

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত মেহেদীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রেনেসাঁ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান।

মেহেদী ছিলেন মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার রায়পাড়া গ্রামের সন্তান। পড়াশোনা করতেন স্থানীয় একটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে, লক্ষ্য ছিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়া। কিন্তু গত বছরের ২০ জুলাই, নারায়ণগঞ্জের চিটাগাং রোড এলাকায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তার।

বাবা মো. সানাউল্লাহ, যিনি বসুন্ধরা গ্রুপে সাধারণ কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন, বলেন, “একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে আমরা দিশেহারা। পুলিশ শুধু গুলি করেই থামেনি, মেহেদীর মৃতদেহেও লাথি মেরেছে। ওর মাথার মগজ পেছন দিক দিয়ে বের হয়ে গিয়েছিল।”

মেহেদীর মা শিল্পি বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “সেদিন দুপুরে খেতে আসার কথা বলে বের হয়েছিল মেহেদী। কিন্তু ফিরেছে লাশ হয়ে। কী দোষ ছিল তার? আমি এর বিচার চাই।”

শহীদ মেহেদী ছিলেন পরিবারের একমাত্র ছেলে। বড় হয়েছেন নানির বাড়িতে। স্থানীয় স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে ভর্তি হন গজারিয়া প্রাইভেট ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে। পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেও সংসার চালাতে জীবনসংগ্রামে ছিলেন।

রেনেসাঁ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন, “শহীদ মেহেদী, আবু সাঈদ, মুগ্ধসহ হাজারো ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশে নতুন জাগরণ তৈরি হয়েছে। মেহেদীর মৃত্যু বৃথা যাবে না।”

তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে যারা হত্যা-গুমের সঙ্গে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। এটাই শহীদদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা।”

মেহেদীর পরিবার জানায়, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে তারা ৫ লাখ টাকা ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা সহায়তা পেয়েছেন।

মেহেদীর ঘরে এখনো টেবিলের ওপর বইগুলো গুছিয়ে রাখা। সে বইয়ের দিকে তাকিয়ে মা প্রতিদিন চোখের পানি ফেলেন।

শহীদ মেহেদীর বাবা-মা ও পরিবারের একটাই দাবি—রাষ্ট্র যেন এই ত্যাগ ভুলে না যায়, এবং শহীদ মেহেদীর মতো যাঁরা জীবন দিয়েছেন, তাঁদের দেওয়া হয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও মর্যাদা।

আসিফ

×