
ছবি: জনকণ্ঠ
"ছোট থাইকাতো কেদো (পানি যুক্ত কাঁদা মাটি) মধ্যে হাটতেছি, এহন বয়স শেষ, বাছমুই আর কয়দিন মরার আগে এই রাস্তাটা পাঁকা হইলে পাঁকা রাস্তায় হাইটা শান্তি পাইলামনি।" বয়সে ভারে লাঠির উপর ভর করে কাঁদাযুক্ত রাস্তায় হেঁটে বাজার থেকে বাড়ি ফেরার সময় অনেকটা চাঁপা গলায় এমনি ভাবে তার কষ্টের কথা জানালেন আদাচাকি গ্রামের শত বছর বয়সি বৃদ্ধ মোঃ আরফান আলী।
তিনি আরও জানান, "আমরা যহন ছোট, তহন থাইকা এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এতো পুরাতন রাস্তা হলেও এ রাস্তাটি এখনো পাঁকা করা হয়নাই। এখন বৃষ্টির দিন, তাই রাস্তায় হাঁটু পরিমাণ কাঁদা হয়ে গেছে। পায়ে হেটেও চলা যায় না।"
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের আদাচাকি পশ্চিমপাড়া, পূর্বপাড়া, শশারবল, গ্রাম নিখাই, মহিষাকান্দি, গবিন্দপুর, রামপুরসহ কয়েকটি গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা এটি। পোগলদিঘা ইউনিয়নের ঘোড়ার মোড় হতে আব্দুল হাই ডিলারের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা কাঁচা হওয়ায় হালকা বৃষ্টিতেই হাঁটু সমান কাঁদায় পরিণত হয়। বছরে অধিকাংশ সময় রাস্তাটি কাঁদাযুক্ত থাকে। যার ফলে বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
আলেয়া বেগম (৬০) জানান, "আমার সন্তানেরাসহ এই সকল এলাকার প্রায় শতাধিক মানুষ সিএনজি, অটো রিকশা ও ভ্যানগাড়ি চালায়। রাস্তার এ অবস্থার জন্য বাড়িতে ঐ সকল যানবাহন আনা যায় না। তাই সকল যানবাহন ঘোড়ার মোড়ে রেখে সেখানেই রাত জেগে পাহারা দিতে হয়। গরিব মানুষ, যদি চোরে নিয়ে যায়, কী করে সংসার চালামু।"
স্থানীয় আনোয়ার হোসেন জানান, "এর আগে আমরা গ্রামের লোকজন নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে কিছু মাটি কেটেছিলাম। এখন আর রাস্তা দিয়ে যাওয়া যায় না। তাই আমাদের এলাকার সকলের দাবি, সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা আগামী বর্ষার আগেই যাতে এ রাস্তাটি পাঁকা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।"
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ জাহিদুল ইসলাম জানান, "সেটা মূলত আমাদের রাস্তা না, পিআইও-এর রাস্তা, সেটা আগে জানতে হবে। আর যেহেতু কাঁচা রাস্তা, সেটা অবশ্যই পিআইও-এর হবে।"
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) শওকত জামিল এর মোবাইল ফোনে কল করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
মুমু ২