ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২০ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২

যশোরের ভবদাহ অঞ্চলে পানিবন্দি শত শত পরিবার

মতিন গাজী, কন্টিবিউটিং রিপোর্টার, যশোর

প্রকাশিত: ২১:০৯, ১৯ জুলাই ২০২৫

যশোরের ভবদাহ অঞ্চলে পানিবন্দি শত শত পরিবার

এক সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে যশোরের অভয়নগরে ভবদহ অঞ্চলে আবারও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার। ভেসে গেছে মৎস্যঘের, তলিয়েছে সবজি ও ধানক্ষেত। নেট-পাটা-কারেন্ট জাল ও কচুরিপানায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পানিপ্রবাহ। ফলে দুর্বল হয়ে পড়ছে পানি নিষ্কাশনব্যবস্থা।
অভয়নগর উপজেলা কৃষি ও মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, টানা বৃষ্টিতে ভবদহ অঞ্চলের ১২৯ হেক্টর আবাদি জমি জলাবদ্ধ হয়েছে। তলিয়ে গেছে ২৫ হেক্টর আউশ ও ৪৫ হেক্টর আমন ধান, ৫৮ হেক্টর সবজি ও ১ হেক্টর জমির মরিচ। এ ছাড়া উপজেলার পায়রা, চলিশিয়া, শ্রীধরপুর, সিদ্ধিপাশা ও প্রেমবাগ ইউনিয়নে ২৮৪টি মাছের ঘের (২২৫ হেক্টর) ভেসে গেছে। তবে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে দুই দপ্তরপ্রধান কিছুই জানাতে পারেননি।
রবিবার (১৯ জুলাই) সরেজমিনে দেখা গেছে, অভয়নগরে ভবদহের ২১ ভেন্ট স্লুইসগেটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রায় ৮টি পানির পাম্প পানি নিষ্কাশনের কাজ করছে। তবে শ্রীহরি ও টেকা নদী, আমডাঙ্গাসহ ছোট-বড় সব সরকারি খালে অবৈধভাবে নেট-পাটা-কারেন্ট জাল বসিয়ে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। যে কারণে পানি নিষ্কাশনব্যবস্থা কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে।
উপজেলার পায়রা, চলিশিয়া, সুন্দলী ও প্রেমমবাগ ইউনিয়নসহ নওয়াপাড়া পৌরসভার ৫ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ২০ গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার। তবে এসব নদী ও খালে প্রচুর পরিমানে কচুরিপানা আটকে থাকতে দেখা যায়। অনেক মৎস্যঘের মালিক তার ভেসে যাওয়া মাছ আটকাতে ঘেরপাড়ে বালুর বস্তা ফেলে বাঁধ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এ সময় উপজেলার সরখোলা গ্রামে পানিবন্দি বিউটি বেগম বলেন, এভাবে বৃষ্টি হলে ঘরের ভেতরে পানি ঢুকতে বেশি সময় লাগবে না। বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দি হয়েও এখনো কোনো সরকারি সহযোগিতা মেলেনি।
উপজেলার সুন্দলী গ্রামের নবিতা রানী বিশ্বাস বলেন, আমাদের এই ভবদহের জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধন হবে কি? সরকার আসে, সরকার যায় অথচ ভবদহের জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান হয় না। কোটা গ্রামের মৎস্যঘের মালিক কামরুজ্জামান তরফদার বলেন, ৩০০ বিঘা জমির দুইটি মৎস্যঘের ভেসে গেছে। অর্ধকোটি টাকার মাছ ছাড়া হয়েছিল। এলাকায় অসংখ্য মৎস্যঘের ভেসে যেতে শুরু করেছে।
এ ব্যাপারে জানতে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পার্থ প্রতিম শীলের সাথে কথা বল্লে তিনি  বলেন, নতুন যোগদান করেছি। ভবদহের জলাবদ্ধ এলাকায় পানিবন্দি পরিবারের মাঝে ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। অবৈধ নেট-পাটা-কারেন্ট জাল ও কচুরিপানা অপসারণে উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। যারা নদী, খাল ও বিলে অবৈধভাবে নেট-পাটা ও জাল বসিয়ে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। খাল সংস্কারে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে।

Jahan

×