ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২০ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২

জন্মদিনের কেক খেয়ে ৩০ শিশু অসুস্থ, দোকানির জরিমানা

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট 

প্রকাশিত: ২০:৪৫, ১৯ জুলাই ২০২৫

জন্মদিনের কেক খেয়ে ৩০ শিশু অসুস্থ, দোকানির জরিমানা

ছবি: জনকণ্ঠ

বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলো লবণাক্ততা প্রবেশ, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবে দীর্ঘদিন ধরে নিরাপদ পানির সংকটে ভুগছে।

এই সংকট মোকাবিলায় উদ্ভাবনী ও কমিউনিটি-ভিত্তিক সমাধানগুলো চিহ্নিত ও উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে ব্র্যাক, আন্তর্জাতিক পানি ও স্যানিটেশন কেন্দ্র (আইআরসি)-এর অংশীদারিত্বে এবং নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের (ইকেএন) আর্থিক সহায়তায় আয়োজন করা হয় ‘ব্র্যাক-আইআরসি ওয়াটার হ্যাকাথন’।

শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে অনুষ্ঠিত চূড়ান্ত পর্বে দুটি উদ্যোগকে প্রথম ও দ্বিতীয় পুরস্কারের জন্য বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এ আয়োজনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের আগ্রহী তরুণ প্রকৌশলী, ডিজাইনার, সামাজিক উদ্যোক্তা ও প্রযুক্তিবিদরা অংশ নেন।

“প্রজেক্ট জলবন্ধু—অ্যা স্মার্ট, কমিউনিটি-ড্রিভেন ওয়াটার গ্রিড; পাওয়ারড বাই প্যাডেলস, পয়েন্টস অ্যান্ড পার্টিসিপেশন” শীর্ষক প্রকল্পের জন্য প্রথম পুরস্কার লাভ করেন শ্যাম শঙ্করন। বাস্তবভিত্তিক এই প্রকল্পটি সাশ্রয়ী এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে বিচারকদের কাছে প্রশংসিত হয়। “অ্যাটমসফেরিক ময়েশ্চার ফর কোস্টাল কমিউনিটি” শীর্ষক প্রকল্পের জন্য দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে এএমসিসি (AMCC)। ব্যতিক্রমধর্মী এই প্রকল্পটি স্বাতন্ত্র্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি এবং বাস্তবায়নের উপযোগিতার কারণে বিশেষভাবে বিচারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এই দলের সদস্যরা হলেন মিফতাহুল জান্নাত লাবিবা, মো: জাহিদুল আলম এবং ড. পার্থ দাস।

হ্যাকাথনের আয়োজকরা জানান, বিজয়ী ধারণাগুলো উপকূলীয় অঞ্চলের কয়েকটি নির্বাচিত এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, যাতে এসব প্রকল্পের কারিগরি সম্ভাব্যতা, স্থানীয় বাস্তবতায় খাপ খাওয়ানো এবং বড় পরিসরে বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা যাচাই করা যায়। হ্যাকাথনের জন্য ২৫০টিরও বেশি প্রকল্প প্রস্তাব জমা পড়ে, যা জলবায়ু সহনশীল সমাধান নিয়ে তরুণদের আগ্রহ ও উদ্যমের প্রতিফলন। মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চূড়ান্ত পর্বের জন্য ১১টি দল ও ব্যক্তিকে বাছাই করে বিচারক প্যানেলের সামনে তাদের ধারণা উপস্থাপনের সুযোগ দেওয়া হয়।

বিচারক প্যানেলে ছিলেন বাংলাদেশের নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার (ইন্টিগ্রেটেড ওয়াটার রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট) ড. শিবলী সাদিক, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ডিপিএইচই) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এ.এইচ.এম খালেকুর রহমান, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস)-এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. সুফিয়া খানম, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. তানভীর আহমেদ, আইআরসি নেদারল্যান্ডস-এর ওয়াটার রিসোর্সেস অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ স্পেশালিস্ট আরিয়েন নাফস এবং ব্র্যাকের ওয়াশ কর্মসূচির হেড অব ইমপ্লিমেন্টেশন মো. জিল্লুর রহমান ও হেড অব ব্র্যান্ড অ্যান্ড প্রোগ্রাম কমিউনিকেশন সারা আফরিন।

ড. তানভীর আহমেদ বলেন, “এই হ্যাকাথন তরুণ প্রজন্মের নিজস্ব ভাবনাগুলোকে অনুধাবন করার একটি শক্তিশালী মাধ্যম। তাদের এই অকৃত্রিম ভাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে অপার সম্ভাবনা।”

এ.এইচ.এম খালেকুর রহমান বলেন, “উপস্থাপিত ধারণাগুলো শুধুমাত্র প্রযুক্তিনির্ভরই ছিল না; এখানে সামাজিক সমাধানকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা একটি সত্যিকারের সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।”

মাঠপর্যায়ের উদ্ভাবনগুলো কীভাবে উপকূলীয় লবণাক্ততাপ্রবণ অঞ্চলের পানি ও জীবিকাভিত্তিক সংকট মোকাবিলায় সহায়ক হতে পারে সেই বিষয়টি তুলে ধরেছে এই ওয়াটার হ্যাকাথন। এ ধরনের উদ্যোগ জলবায়ু সহনশীল পানি ব্যবস্থাপনায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আয়োজকরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

শহীদ

×