
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নিশীতা আক্তার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) রাজধানীর বাড্ডার ছাপড়া মসজিদের পাশের একটি ভাড়া বাসায় সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে ফরাজি হাসপাতালে এবং সেখান থেকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাতে লেখা ছিল, “বাবা আমাকে মাফ করো। আমার কাছে একজন কিছু টাকা পায়—তাকে টাকা দিয়ে দিও।”
নিশীতা ডিআইইউ’র ইংরেজি বিভাগের ডে শিফটের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলায়।
নিশীতার চাচাতো ভাই অন্তর জানান, “শুক্রবার সকালে নিশীতা তার ছোট ভাইকে মাথাব্যথার ওষুধ আনতে স্থানীয় একটি ফার্মেসিতে পাঠান। কিছুক্ষণ পর তার ছোট ভাই বাসায় ফিরে দরজা বন্ধ অবস্থায় দেখতে পায়। বহুবার ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে সে। এসময় সে দেখতে পায় নিশীতা ঘরের সিলিং ফ্যানে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলছেন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফরাজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”
নিহত শিক্ষার্থীর সহপাঠী ফারজানা আক্তার বলেন, “নিশীতার অকাল মৃত্যুতে আমরা সবাই গভীরভাবে শোকাহত। দুপুরে অন্তরের মেসেজে আমরা খবরটি পাই। প্রথমে কেউ বিশ্বাসই করতে পারছিল না। পরে তার নাম্বারে কল করলে ছোট ভাই জানায়, মাথাব্যথার ওষুধ আনতে পাঠানোর পর ফিরে এসে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পায় নিশীতাকে। কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়া হলেও ততক্ষণে দেরি হয়ে যায়।”
তিনি আরও বলেন, “পুলিশ সুইসাইড নোট পেয়েছে, যেখানে পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়ে ছয় হাজার টাকা পাওনার কথা লিখে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে সম্পর্কজনিত হতাশা থেকেই এমন সিদ্ধান্ত। সদা হাস্যোজ্জ্বল নিশীতা হঠাৎ চাকরিতে যোগ দিয়ে ক্লাসে কম আসছিল তবে পরীক্ষায় অংশ নিত। তার এমন মৃত্যুতে আমরা সবাই মর্মাহত।”
বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য জাহিদুল ইসলাম বলেন, “এই ঘটনার বিষয়ে আমি পূর্বে অবগত ছিলাম না। মাত্রই বিষয়টি জানতে পেরেছি এবং খোঁজ-খবর নিচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক রয়েছেন। তবে শিক্ষার্থীদের উচিত তাদের সমস্যাগুলো শিক্ষক কিংবা সংশ্লিষ্ট কাউন্সেলরের সঙ্গে শেয়ার করা। তাহলেই আমরা প্রয়োজনীয় কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা নিতে পারি। শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আমরা আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছি যাতে তারা বাস্তব উপকার পেতে পারে।”
এ বিষয়ে ভাটারা থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা রাকিব বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকে একটি ইউডি (অপমৃত্যু) মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরবর্তীতে নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
ছামিয়া