
ঢাকার কেরানীগঞ্জের সরকারি ইস্পাহানি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র শহীদ রিয়াজ হোসেনের আজ প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। গত বছরের জুলাই মাসে স্বৈরাচারী সরকারের গুলিতে তিনি শহীদ হন।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার তারানগর ইউনিয়নের ছোট ভাওয়াল গ্রামের বাসিন্দা আসাব উদ্দিনের তিন ছেলের মধ্যে রিয়াজ ছিলেন সবচেয়ে ছোট। তিনি সরকারি ইস্পাহানি ডিগ্রি কলেজের বাণিজ্য বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
কলেজের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মতো রিয়াজও কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯ জুলাই বিকেলে মোহাম্মদপুর এলাকায় আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। প্রথমে আটি বাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে নেওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।
কিন্তু রিয়াজের মৃত্যুর পর তার স্বজনরা নানা হাসপাতালে খোঁজ করেও সন্ধান পাননি। শেষ পর্যন্ত ২০ জুলাই দুপুরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে তার মরদেহ শনাক্ত করা হয়।
আজ সকালে শহীদ রিয়াজের বাসায় গিয়ে তার মা শেফালী বেগম বলেন, “আমার ছেলে দেশের জন্য শহীদ হয়েছে। আজ তার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। আমার ছেলের স্বপ্ন ছিল সেনাবাহিনীর অফিসার হওয়া। আমি জানি, সন্তান হারানোর বেদনা কতটা কষ্টের। আমার কোনো দাবি নেই, শুধু চাই, দেশের মানুষ আমার ছেলেকে যেন ভুলে না যায়, সবাই তার জন্য দোয়া করুন—আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতবাসী হিসেবে কবুল করেন।”
রিয়াজের বাবা আসাব উদ্দিন বলেন, “আমরা কোনো রাজনৈতিক দল করি না। আমার ছেলেও কোনো রাজনীতি করত না। অথচ তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই।”
এলাকাবাসীর ভাষ্য অনুযায়ী, রিয়াজ ছিলেন অত্যন্ত ভদ্র ও মেধাবী। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে মেধাবী ছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি স্টেডফাস্ট কুরিয়ার সার্ভিসে কাজ করতেন এবং নিজের পড়ালেখার খরচসহ সংসারে সাহায্য করতেন।
তার সহপাঠীরা বলেন, “আজ এক বছর হলো আমাদের বন্ধু শহীদ রিয়াজ আমাদের মাঝে নেই। আমরা তার হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।”
নুসরাত