
কটিয়াদীতে এক সড়কের বেহাল দশা, চরম ভোগান্তিতে লক্ষাধিক মানুষ
কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলার পাশাপাশি বৃহৎ দুটি ইউনিয়ন জালালপুর এবং লোহাজুরী। এই জালালপুর ইউনিয়ন অতিক্রম করেই যেতে হয় লোহাজুরী ইউনিয়নে। এই দুটি ইউনিয়ন মিলে মোট গ্রামের সংখ্যা প্রায় ৩৫ টি এবং সর্বশেষ ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী দুটি ইউনিয়নের মোট জনসংখ্যা প্রায় ৫৬,২৭৯জন। দুটি ইউনিয়নের সরকারি- বেসরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ৬৫ টি এবং হাট বাজারের সংখ্যা হচ্ছে ছোট বড় মিলিয়ে ৭/৮ টি। ৩৫ টি গ্রামের লোকজনের চলাচলের একটিমাত্র প্রধান সড়ক। এই সড়ক দিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয় গুরুত্বপূর্ণ এই দুই ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষের। এই সড়ক দিয়েই চলাচল করতে হয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী এবং হাটবাজারের লোকজনের যাতায়াত। এই সড়ক দিয়েই প্রতিদিন চলাচল করে শত শত ছোট বড় যানবাহন।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায় কটিয়াদী থানার সামনে থেকে লোহাজুরী ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত প্রতি ৫০/১০০ গজ দূর অন্তর খানাখন্দে বেহাল দশা সড়কটির। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ রফিক মোরের মাথা থেকেই শুরু হয়েছে সড়কটির এই খানাখন্দের শুরু। বিশেষ করে বর্ষা শুরুর সাথে সাথে রাস্তার চিত্র পুরোপুরি পাল্টে যায়। বৃষ্টির পানিতে পুরো বর্ষায় এই সড়কটির প্রধান প্রধান অংশই পানিতে নিমজ্জিত থাকে। দূর থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই সামনে কোনো রাস্তা আছে কিনা! তাই প্রতিনিয়ত এসব স্থানে যাত্রী সহ যানবাহন দূর্ঘটনার স্বীকার হতে হয়। এই সড়ক দিয় কোনো ইমার্জেন্সি রোগীকে এ্যম্বুলেন্সে করে নেওয়াটাও খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে।
এছাড়াও মুমূর্ষ রোগী অথবা প্রসূতি সম্ভাবনা মায়েদের ক্ষেত্রে এ সড়কে যাতায়াত করাটা অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এই সড়কের দু’পার্শ্বে প্রায় লক্ষাধিক পরিবারের বসবাস রয়েছে। কিন্তু বিগত সরকারের লাগামহীন লুটপাট ও দুর্নীতির কারণে এখানে উন্নয়নের কোন ছোঁয়া পড়েনি। তাই বর্ষা মৌসুমে বসবাসরত লক্ষাধিক পরিবারকে পোহাতে হয় সিমাহীন দুর্ভোগ।
দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির সংস্কার না করায় লক্ষাধিক পরিবারের চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। অতিদ্রুত এই ইটের সলিং বা পিচ দিয়ে তৈরি করা অস্থায়ী সড়ক নির্মাণ না করে জনগণের দাবি রাস্তাটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা অনুযায়ী পাকাকরণ বা ঢালাই করার মাধ্যমে সড়কটি যেন তৈরি করা হয়।
স্থানীয় জনগণ মতপ্রকাশ করে বলেন ৮/১০ পর পর নিম্নমানের ঠিকাদার দ্বারা নিম্নমানের ইট,সুরকি, পাথর,পীচ ব্যবহার করে যতটুকু ঘনত্ব নিয়ে সড়কটি নির্মাণ করা উচিত তা নাকরে নামেমাত্র নিম্নমানের জিনিস ব্যবহার করে রাস্তা তৈরি করে। পরবর্তীতে ২/৩ মাস অতিক্রম করতে না করতেই রাস্তার দু'পাশে ভেঙে যায় এবং উপরের আবরণ উঠে যায়। এতে সরকারও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এবং জনগণের ভোগান্তি বেড়ে যাচ্ছে।
২০২৫ সালর নতুন বাজেট অনুযায়ী এসব সড়ক নতুন করে মেরামতের জন্য এলজিইডি থেকে অর্থ পাশ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে রাস্তার মাপজোক ও সীমানা নির্ধারণের কাজ চলছে তাই এই দুই ইউনিয়নের ভুক্তভোগী জনগণ কটিয়াদী উপজেলা নিবার্হী অফিসার ও এলজিইডির প্রকৌশলীর দৃঢ় হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এবারেও যেন পূর্বের মত নিম্নমানের সড়ক নির্মাণ করা না হয়।
তাসমিম