ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২

সিলেটে ছড়িয়ে পড়েছে স্ক্যাবিস: আতঙ্কিত মানুষ 

আশরাফ আহমেদ, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, সিলেট

প্রকাশিত: ০৮:০৭, ১৬ জুন ২০২৫

সিলেটে ছড়িয়ে পড়েছে স্ক্যাবিস: আতঙ্কিত মানুষ 

ছবি: সংগৃহীত

গেল কিছুদিন ধরে চলা তীব্র গরমে সিলেটে ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়েছে ছোঁয়াচে জাতীয় স্ক্যাবিস বা খোসপাঁচড়া রোগ। সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগই স্ক্যাবিস বা খোসপাঁচড়া রোগে আক্রান্ত। বিশেষভাবে শিশুদের মধ্যে এই রোগের প্রবণতা খুব বেশি দেখা দিয়েছে। এর ফলে জনমনে এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। 

স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত দুই-তিন মাস ধরেই স্ক্যাবিস ছড়িয়েছে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায়। বর্তমানে এর প্রকোপ আরও বাড়ায় উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। ডাবল ডোজ ওষুধ সেবনের পরও সুফল পাচ্ছেন না রোগীরা। 

চিকিৎসকরা বলছেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, গরম-আর্দ্র পরিবেশ এবং পরিচ্ছন্নতার অভাব এই রোগ ছড়ানোর পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ। বাসার একজনের স্ক্যাবিস হলে কাপড়সহ সবকিছু গরম পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নেওয়া ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

সিলেট নগরী ও জেলার বিভিন্ন উপজেলার বেশ কয়েকটি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত দুই-তিন মাস ধরেই স্ক্যাবিস আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। সময় যতো গড়াচ্ছে এই রোগে আক্রান্তের হার আরও বাড়ছে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবনের পরও তা নিয়ন্ত্রণে আসছে না। অনেকে ডাবল ডোজ ওষুধ সেবনের পরও সুফল পাচ্ছেন না। বাসা-বাড়িতে একজন স্ক্যাবিসে আক্রান্ত হলে ওই পরিবারের সকল সদস্য ক্রমান্বয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন। 

সিলেট মহানগরীর  শামীমাবাদ এলাকার বাসিন্দা জাহিদুল হক বলেন, প্রথমে পরিবারের এক শিশু স্ক্যাবিসে আক্রান্ত হন। এরপরে একে একে পরিবারের সবাই এই রোগে আক্রান্ত। দফায় দফায় চিকিৎসা নিয়েও কোনো সুফল হচ্ছে না।এতে তিনি বেশ আতঙ্কিত। 

নগরীর টিলাগড় এলাকার বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, পারিবারের সবাই এই রোগে আক্রান্ত। লোশন ও ওষুধ সেবনের কোনো কাজে আসছে না।

সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মিজানুর রহমান বলেন, স্ক্যাবিস রোগটি নতুন নয়। এটি অনেক পুরাতন এবং এটি নিরাময়যোগ্য। সঠিক চিকিৎসা না নিলে এটি ইনফেকশন হয়ে যায় তখন শারীরিক সমস্যা হতে পারে। 

বিষয়টি নিয়ে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে অনেকেই স্ক্যাবিসে আক্রান্ত। সাধারণত গরম বেশি হলে এই ছোঁয়াছে রোগটি বেড়ে যায়। 

তিনি আরও বলেন, স্ক্যাবিস রোগটি সারা বছরই থাকে, এটি মূলত ব্যাক্তির হাইজিনের উপর নির্ভর করে। এজন্য নিজেদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিকল্প নেই। স্ক্যাবিস পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য। তবে সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এটি বড় আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে জানান এই চিকিৎসক।

আবির

×