ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

আলোকিত মা রশিদা বেগমের জীবনে যত সংগ্রাম 

মো. আতিকুল ইসলাম, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া 

প্রকাশিত: ০৭:৪৭, ২১ মে ২০২৫

আলোকিত মা রশিদা বেগমের জীবনে যত সংগ্রাম 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের বাসিন্দা রশিদা বেগম (৪৫)। অভাব অনটনের সংসারে সবকিছুরই কমতি ঠিক তখনই অন্তরজুড়ে নাড়া দেয় সন্তানের আকাঙ্ক্ষা। তবে স্বামীর শারীরিক সমস্যার কারণে মা হওয়ার স্বপ্ন অপূর্ণ থেকে যায় তার জীবনে। 

স্বামী-স্ত্রীর মানসিক শান্তি ও সংসারের পূর্ণতা ফেরাতে নিকটাত্মীয়ের থেকে একটি পুত্র সন্তান দত্তক নেন রশিদা বেগম। তবে সুখের এই সংসারে শান্তি টিকে থাকেননি বেশিদিন। দত্তক নেয়া একমাত্র সন্তান ও রশিদা বেগমকে রেখে চিরবিদায় নেন তার স্বামী। 

ঠিক তখন থেকেই শুরু হয় রশিদা বেগমের জীবনযুদ্ধ। নিজেকে সামলে নিয়ে অন্যের বাড়িতে কাজ করে যখন ছেলেকে মানুষের মতো মানুষ করে তোলার তীব্র আকাঙ্ক্ষা তার চোখে-মুখে ঠিক তখনই তিনি নিশ্চিত হতে পারেন একমাত্র ছেলেটি শারীরিক প্রতিবন্ধী। 

জীবনযুদ্ধে বার বার হোঁচট থেকেও থেমে থাকেননি এই মা রশিদা বেগম। পাড়াপ্রতিবেশী অনেকে এই ছেলেকে এতিমখানায় দিয়ে আসার পরামর্শ দিলেও নিজেই অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করে ভরণপোষণ জোগাচ্ছে পরিবারের। 

স্বামী হারানোর প্রায় ১০ বছর পরেও একই রকম চলছে গৃহকর্মী রশিদা বেগমের জীবন। অন্যের বাড়িতে কাজ করে চলছে তার সংসার, করছেন ছেলের দেখাশোনা, পাশাপাশি প্রতি মাসেই গুনতে হচ্ছে বাসাভাড়া। অভাবের সংসারে ছেলেকে ঘিরে সব ধরনের স্বপ্ন পূরণ করতে না পারলেও কমতি রাখছেন না তার দেখাশোনার।  

অথচ সরকারিভাবে জীবনযুদ্ধের এতদিনেও কোনো ধরনের সহযোগিতা জুটেনি তার ভাগ্যে। মাস প্রতি ১৫০০ টাকা দরে ভাড়া বাড়িতে থাকলেও তার ভাগ্যে জুটেনি বিগত সরকারের আমলে আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘর।

×